বিশ্বের কুড়ি নম্বর ইরানের কাছে তিন গোলে হার ভারতের
প্রথমার্ধে নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল ছিল নীল বাহিনী। ইরানের আক্রমণ ঠেকাতে পুরো অর্ধ জুড়ে কঠোর অবস্থান বজায় রাখে ভারত।

এই লেখাটি ইংরেজি ও মালয়লামেও পড়তে পারেন।
শুরুটা ভাল করলেও চলতি কাফা (CAFA) নেশনস কাপে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারল না ভারত। সোমবার গ্রুপ পর্বের দ্বিতীয় ম্যাচে তারা ইরানের কাছে তিন গোলে হারে। ফিফা ক্রমতালিকায় ২০ নম্বরে থাকা এবং এশিয়ার দ্বিতীয় সেরা দল ইরানকে প্রথমার্ধে ঠেকিয়ে রাখলেও দ্বিতীয়ার্ধে ভারত তিনটি গোল খায়।
তাজিকিস্তানের হিসোর সেন্ট্রাল স্টেডিয়ামে এ দিন প্রথমার্ধে ভারতীয়রা দারুণ লড়াই করলেও দ্বিতীয়ার্ধে ইরান তিন গোল দিয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে উঠে পড়ে। তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে ২-১-এ জয়ী দলে এ দিন দুটি পরিবর্তন আনেন কোচ খালিদ জামিল। জিকসন সিং ও লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতের বদলে শুরু করেন দানিশ ফারুখ ও নিখিল প্রভু। এর ফলে মাঝমাঠে অতিরিক্ত সহায়তা পেয়ে যান সুরেশ সিং ওয়াঙজাম এবং ভারতের রক্ষণভাগ আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠে। ছাঙতে মাঠে নামেন ৮৩ মিনিটের মাথায় ও জিকসন নামেন ৫৪তম মিনিটে।
প্রথমার্ধে নিজেদের লক্ষ্যে অবিচল ছিল নীল বাহিনী। ইরানের আক্রমণ ঠেকাতে পুরো অর্ধ জুড়ে কঠোর অবস্থান বজায় রাখে ভারত। গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে দু-একবার পরীক্ষা দিতে হলেও বাকি সময়ে ভারতীয় ডিফেন্স স্বচ্ছন্দে চাপ সামলে নেয়। পনেরো মিনিট পেরোনোর কিছু পরেই মোহাম্মদ আমিন হাজবাভি ও ওমিদ নুরআফকানের শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। মাহদি হাসেমনেজাদের বিপজ্জনক কাট-ব্যাকটি ঠেকাতে সক্ষম হন গোলকিপার গুরপ্রীত।
A brave fight from the #BlueTigers in Hisor but we fall short against defending champions IR Iran in our second game of #CAFANationsCup2025.#INDIRN #IndianFootball ⚽️ pic.twitter.com/pVmP2VCBHb
— Indian Football Team (@IndianFootball) September 1, 2025
ভারতের সুযোগ ছিল সীমিত। সুযোগগুলি কাজে লাগাতে পারেনি তারা। ২৪তম মিনিটে ভারতের প্রথম সুযোগ আসে। সুরেশ সিং ওয়াঙজামের ক্রস ইরানের বক্সের মধ্যে পান ইরফান ইয়াডওয়াড, যিনি বল বাড়িয়ে দেন নিখিল প্রভুকে। তবে মিডফিল্ডারের শটটি প্রতিহত হয়। আধঘণ্টা পেরোনোর পর ভারত কিছুটা আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠে এবং ফাইনাল থার্ডে আক্রমণ তৈরি করে। ডান উইং বরাবর বিক্রম প্রতাপ সিং বার দুয়েক আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করলেও দু’বারই বিপদ সামলে নেন ইরানি ডিফেন্ডাররা।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইরান কয়েকটি আক্রমণাত্মক চেষ্টা চালায় এবং ৬০ মিনিটের মাথায় ফরোয়ার্ড আমিরহোসেইন হোসেইনজাদের গোলে লকগেট খুলে ফেলে তারা। হোসেইন কানানি দূরের পোস্টের দিকে একটি ক্রস বাড়ান হোসেইনজাদেহর উদ্দেশ্যে। তাঁর হেডার ডিফেন্ডার রাহুল ভেকে প্রতিহত করেন। তবে বল ফের হোসেইনজাদের পায়ে এসে পড়ে এবং তিনি গোলের সামনে থেকেই বলে জাল জড়িয়ে দেন (১-০)।
সমতা ফেরানোর চেষ্টায় ভারত জিথিন এমএস এবং নাওরেম মহেশ সিংকে নামায়। মহেশ কিছু ভাল সুযোগ তৈরি করলেও এ দিন প্রতিপক্ষের গোলের সামনে ভারতের কার্যকরিতা দেখা যায়নি। ৭২ মিনিটের মাথায় প্রথম পোস্টে রাহুল ভেকের কাছে হেডে গোলের সুযোগ এনে দেয় মনবীরের ক্রস। তবে তাঁর চেষ্টা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
৮৬ মিনিটের মাথায় দ্রুত গতিতে পাল্টা আক্রমণে উঠে একটি ভাল সুযোগ তৈরি করেন জিথিন। তবে মহেশের উদ্দেশ্যে বাড়ানো তাঁর থ্রু-পাসে গতি বেশি থাকায় ইরানের গোলরক্ষক পায়াম নিয়াজমন্দ সহজেই বলটি দখল নিয়ে নেন।
পরিবর্তিত খেলোয়াড় আলি আলিপৌর নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন (২-০)। সংযুক্ত সময়ে ভারতের সেরা সুযোগ আসে আনোয়ার আলি ও জিকসন সিংয়ের কাছে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গল এফসি–র দুই খেলোয়াড়ের প্রচেষ্টা অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এর পরেই সংযুক্ত সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে ইরানের তারকা ফরোয়ার্ড মেহদি তারেমি আরেকটি দুর্দান্ত আক্রমণে গোল করে ৩-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেন।
আগামী বৃহস্পতিবার আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে ভারত। ওই দিনই ইরান আয়োজক তাজিকিস্তানের বিপক্ষে নামবে। গ্রুপের সেরা দল ফাইনালে উঠবে এবং দ্বিতীয় স্থানাধিকারী দল তৃতীয় স্থাননির্ধারক ম্যাচে খেলার ছাড়পত্র অর্জন করবে। শেষ ম্যাচে জিততে পারলে সেই ম্যাচে খেলার সুযোগ থাকবে ভারতের সামনে।