ভারতীয় দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে কী বললেন গুরপ্রীত?
‘তখন খুব কঠিন সময় ছিল।এমন অবস্থার সঙ্গে সহজভাবে মানিয়ে নেওয়া যায় না’।

এই লেখাটি ইংরেজি ও মালয়লামেও পড়তে পারেন।
বছরের শুরুতে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর কঠিন সময় কেটেছিল তাঁর। অনেক ধৈর্য ধরেও থাকতে হয়েছে তাঁকে। জানিয়েছেন তারকা গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু।
গত এক দশকে ভারতীয় ফুটবলে আর কোনও গোলরক্ষক তাঁর মত ছাপ ফেলতে পারেননি। গোলের নীচে তাঁর উপস্থিতি তাঁকে বছরের পর বছর ভারতের এক নম্বর গোলকিপার বানিয়েছে। ভারতের ফুটবলের ইতিহাসে অন্য যে কোনও গোলরক্ষকের চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা এবং সবচেয়ে বেশি ক্লিন শিটের নজির তাঁর ঝুলিতেই আছে। ক্লাব হোক বা দেশ, তাঁর দুর্দান্ত পারফরম্যান্স তাঁকে প্রায়ই নায়কে পরিণত করেছে।
তবু ৩৩ বছর বয়সী সান্ধুকে গত মরশুমে কেরিয়ারের অন্যতম কঠিন সময়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ধারাবাহিকতা ও নেতৃত্বের জন্য খ্যাতি অর্জন করা একজন খেলোয়াড়ের ফর্মে পতন তাঁকে দলে সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত করে। মার্চ এবং জুনে ভারতের ম্যাচগুলোতে গুরপ্রীতের অনুপস্থিতি তাঁর আন্তর্জাতিক কেরিয়ার নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়।
𝐓𝐡𝐞 𝐑𝐨𝐚𝐝 𝐭𝐨 𝐑𝐞𝐝𝐞𝐦𝐩𝐭𝐢𝐨𝐧 👊🧤@GurpreetGK speaks on his way of dealing with adversity and returning to the fold for the #BlueTigers! 🔥
— Indian Super League (@IndSuperLeague) September 3, 2025
Watch the full #InTheStands episode ft. #GurpreetSinghSandhu here: https://t.co/R1kcueXI07#IndianFootball #BackTheBlue #ITS pic.twitter.com/QvFKztv7UX
যে কোনও ফুটবলারের কাছে প্রধান একাদশের জায়গা হারানো হতাশাজনক। তবে সান্ধুর মতো একজন সিনিয়র পেশাদারের ক্ষেত্রে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া ছিল বড় আঘাতের মতো। এতে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলতে বাধ্য হন তিনি।
“আমার কি তবে অবসর নিয়ে নেওয়া উচিত? আমার পারফরম্যান্স কি যথেষ্ট নয়? হয়তো আমার মধ্যে সেই জিনিসটা নেই, যা সবাই চায়। সেই কারণেই আমি দলে নেই। সত্যি বলতে তখন খুব কঠিন সময় ছিল।এমন অবস্থার সঙ্গে সহজভাবে মানিয়ে নেওয়া যায় না,” Firstpost কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কথাগুলি বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, “অনেক কিছু বলতে ইচ্ছে করে। কিন্তু পারা যায় না, সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। আমি সেটাই করেছি, আমার সময়ের অপেক্ষায় থেকেছি।”
অপেক্ষাযর অবসান হয় অগাস্টে, যখন খালিদ জামিল ভারতীয় দলের নতুন প্রধান কোচের দায়িত্ব নেন। জামিলের আগমন মানে ছিল নতুন চিন্তাধারা, ভিন্ন কৌশল এবং সান্ধুর জন্য নতুন সুযোগ।
“যখন ডাক আসে, তখন আমি খুব খুশি হইনি, কিন্তু ভেতরে ভেতরে স্বস্তি পেয়েছিলাম,” বলেন সান্ধু।
খুব দ্রুতই তিনি সবাইকে তাঁর মানের কথা স্মরণ করিয়ে দেন। কাফা নেশনস কাপে তাজিকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের জয়ে তিনি একটি পেনাল্টি সেভ করেন এবং ওমানের বিরুদ্ধে টাইব্রেকারে গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে জয় নিশ্চিত করেন, যা ব্লু টাইগার্সকে ব্রোঞ্জ এনে দেয়। কয়েক মাস ধরে অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকা একজন খেলোয়াড়ের কাছে এই মুহূর্তগুলিই ছিল আসল প্রমাণ।
কাফা নেশনস কাপে ভারতের সাফল্য দলকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে এবং জাতীয় কোচ হিসেবে জামিলের সূচনার সময়কে স্মরণীয় করে রেখেছে। তবে সান্ধু মনে করেন, এই সাফল্য যেন বড় লক্ষ্যের গুরুত্ব কমিয়ে না দেয়। অক্টোবরে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে। তার প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই বেঙ্গালুরুতে শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সান্ধু বলেন, “আমি মনে করতে পারছি না, শেষ কবে আমরা জাতীয় দল হিসেবে বিদেশের কোনও টুর্নামেন্ট থেকে পদক এনেছি। তাই এটা নিঃসন্দেহে বড় সাফল্য। তবে অবশ্যই, আমাদের আরও বড় লক্ষ্য আছে—এশিয়ান কাপের মূলপর্বে যোগ্যতা অর্জন করা”।
তিনি আরও বলেন, “ভাল কিছু ঘটেছে বলে আমরা মনোযোগ হারাতে পারি না এবং শুধু ভাল দিনের কথা ভেবে বসে থাকতে পারি না। যখন সত্যিই প্রয়োজন হবে, আশা করি, সবাই প্রস্তুত থাকবে, আমরা ভাল ফল করব এবং সামনে এগিয়ে যাব”।