ডুরান্ড কাপ জয় অভ্যাসে পরিণত করতে চায় নর্থইস্ট: জন আব্রাহাম
‘ব্যক্তিগতভাবে এই ক্লাবকে গভীর আবেগ দিয়ে চালাই আমি। একটা সময় পরিস্থিতি কঠিন ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত, আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি যে, আমরা দীর্ঘদিন টিকে থাকার জন্যই এসেছি’।

তাঁর ক্লাব নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি টানা দ্বিতীয়বার ডুরান্ড কাপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় এফসি-র কর্ণধার বলিউড তারকা জন আব্রাহাম খুব খুশি। গত শনিবার কলকাতায় ডুরান্ড কাপ শিরোপা রক্ষা করে কোচ হুয়ান পেদ্রো বোনালির দল ইতিহাস গড়ায় তিনি আরও খুশি।
শনিবার কলকাতার নবাগত দলডায়মন্ড হারবার এফসি-কে আধ ডজন গোল দিয়ে খেতাব জিতে নেয় নর্থইস্ট। একটির বেশি গোল শোধ করতে পারেনি ডায়মন্ড-বাহিনী। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, ইস্টবেঙ্গল এফসির পর তারাই একমাত্র দল, যারা স্বাধীনতার পর টানা দু’বার শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করে।
গত বছর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ডুরান্ড শিরোপা জিতেছিল নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি। কিন্তু এ বার তাদের সাফল্য আসে পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে সম্ভাব্য ফেভারিট হিসেবে দাপট দেখিয়ে প্রত্যাশার যথাযোগ্য মর্যাদা দিয়ে।
নর্থইস্ট ডার্বি দু’বার জেতে তারা—একবার গ্রুপ পর্বে এবং আরেকবার সেমিফাইনালে। সেখান থেকে শুরু করে কিবু ভিকুনার নেতৃত্বাধীন উজ্জীবিত ডায়মন্ড হারবার এফসিকে ফাইনালে হারানো পর্যন্ত, হাইল্যান্ডাররা তাদের অটল মানসিক দৃঢ়তা ও দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছে এবং অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে।
"To win back-to-back Durand Cups is a great honour and achievement!"
— NorthEast United FC (@NEUtdFC) August 24, 2025
The boss expresses his thoughts on our historic triumph...♥️🤍🖤#StrongerAsOne #8States1United #134theditionofindianoildurandcup pic.twitter.com/gyWpdD0sF3
দলের এই স্মরণীয় সাফল্য নিয়ে আনন্দ প্রকাশ করেছেন জন আব্রাহাম ও দলের খেলোয়াড়দের এই ডুরান্ড কাপে আধিপত্য বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “১৯৯১ সালের পর ডুরান্ড কাপ টানা দু’বার জয়ী হওয়া প্রথম দল হওয়া একটি বিশাল সম্মানের, এক বিরাট কৃতিত্ব। বিশ্বাস করতে চাই, আমরা একে অভ্যাসে পরিণত করতে পারব এবং প্রতি বছরই ডুরান্ড কাপ জিতব”।
অভিজ্ঞ স্প্যানিশ প্রধান কোচ বেনালির তত্ত্বাবধানে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি একসময়ের আন্ডারডগ থেকে ধীরে ধীরে কৌশল ও বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে ধারাবাহিক খেতাবের দাবিদারে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাইল্যান্ডারদের বিবর্তন আসলে এক সম্মিলিত চেষ্টা, দৃঢ়তা ও অধ্যবসায়ের কাহিনি এবং প্রতিটি উন্নতির নেপথ্যেই রয়েছেন কোচ বেনালি নিজে। ২০২৩-এ ডুরান্ডের সেমিফাইনালে ওঠা থেকে শুরু করে টানা দু’বছর ডুরান্ড কাপ জয় করে সাফল্যে ও গৌরবের মাধ্যমে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দিয়েছে।
বেনালি ও তার কোচিং স্টাফ, ম্যানেজমেন্ট এবং খেলোয়াড়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জন বলেন, “ডুরান্ড কাপ আমাদের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ এক টুর্নামেন্ট। আমরা ভারতীয়, তাই এটি আমাদের জন্য এবং নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসির মূল চেতনায় ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আমি পুরো টিম ম্যানেজমেন্টকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, কোচকে ধন্যবাদ জানাতে চাই, পুরো কোচিং স্টাফ, ট্রেনিং স্টাফ এবং সর্বোপরি প্রতি খেলোয়াড় ও সেই ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যাঁরা এই দলকে গড়ে তুলতে সাহায্য করেছেন এবং আমাদের শেষ পর্যন্ত ডুরান্ড কাপে টানা দু’বারের চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতে সক্ষম করে তুলেছে”।
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি মনে করি নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি একটি অত্যন্ত দৃঢ়চেতা ক্লাব। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ক্লাবকে গভীর আবেগ দিয়ে চালাই। একটা সময় পরিস্থিতি কঠিন ছিল। কিন্তু আমরা টিকে থাকতে পেরেছি। শেষ পর্যন্ত, আমরা প্রমাণ করেছি যে, আমরা এখানে দীর্ঘদিন টিকে থাকার জন্যই এসেছি”।
নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসির মালিক বিশ্বাস করেন, বেনালির নেতৃত্বে হাইল্যান্ডাররা ভারতীয় ফুটবলে নিজেদের প্রতিপত্তি বিস্তার করার জন্য সঠিক পথে এগোচ্ছে। এই প্রসঙ্গে তাঁর স্বীকারোক্তি, “আমরা প্রমাণ করেছি যে আমরা ভারতীয় ফুটবলের ইকোসিস্টেমে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চাই এবং আমরা চাই, ভারত থেকে একাধিক ফুটবল তারকা উঠে আসুক, যাদের সারা বিশ্ব দেখবে ও চিনবে”।
শেষে জন বলেন, “আমরা চাই ভারতকে গর্বিত করতে, এবং আমরা চাই নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-ই তা করে দেখাক। এই যাত্রা সম্ভব হত না, যদি প্রতিটি সংশ্লিষ্ট মানুষ তাদের অবদান না রাখতেন। তাই ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে ধন্যবাদ”।