ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) যখন ২০১৪-য় শুরু হয়, তখন তা শুধু এক নতুন লিগের সূচনা ছিল না, বরং ভারতীয় ফুটবলের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয় এই আধুনিক ফুটবল লিগের মাধ্যমে। এ দেশের তরুণ ফুটবলাররা জাতীয় ফুটবলের এমন এক মঞ্চে উঠে আসার সুযোগ পান, যে মঞ্চ তাদের সামনে আগে আর কখনও তৈরি করে দেওয়া হয়নি।

তবে ভারতের ক্লাব ফুটবলের পরিবর্তনের মূল চালিকা শক্তি হয়ে ওঠেন বিদেশি ফুটবলাররা, যে প্রবণতা আইএসএল শুরুর হওয়ার আগেও দেখা গিয়েছে এ দেশে। এ দেশের ফুটবলে বিদেশিদের আনাগোনা বহু দশক আগে থেকে। মজিদ বিসকার থেকে গ্রেগ স্টুয়ার্ট পর্যন্ত কত যে বিদেশি ফুটবলার কলকাতায় খেলে গিয়েছেন এবং এ দেশের ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করেছেন, তার কোনও ঠিক নেই। গত আইএসএল মরশুমে সংখ্যাটা ছিল ৮৪। সব মিলিয়ে গত এগারো মরশুমে ৫৮২ জন বিদেশি ফুটবলার খেলেছেন।

অভিজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ভারতের ক্লাব ফুটবলে এনেছেন গতি, শৃঙ্খলা, শিল্প ও লড়াইয়ের মানসিকতা। তবে প্রত্যেক বিদেশি খেলোয়াড়ই যে মনে ছাপ ফেলে গিয়েছেন, তা নয়। কয়েকজন এমন খেলোয়াড় ছিলেন, যাঁদের প্রভাব এতটাই গভীর যে, তাঁরা ক্লাবের পরিচয়ও বহন করেন।

কোন আইএসএল মরশুমে কতজন বিদেশি খেলেছেন, দেখা যাক। (২০১৪)- ৯৭, (২০১৫)- ৯২, (২০১৬)- ৮৭, (২০১৭-১৮)- ৯৩, (২০১৮-১৯)- ৮০, (২০১৯-২০)- ৭৭, (২০২০-২১)- ৭৮, (২০২১-২২)- ৭৩, (২০২২-২৩)- ৭৪, (২০২৩-২৫)- ৮৫, (২০২৪-২৫)- ৮৪।

এমন এক সেরা একাদশ যদি তৈরি করা যায়, যেখানে প্রতি পজিশনে সেই সব বিদেশি ফুটবলারদের বেছে নেওয়া যায়, যাঁরা দীর্ঘদিন আইএসএলে খেলেছেন এবং স্থায়ী প্রভাব ফেলেছেন, এর চেয়ে ভাল আর কী হতে পারে? তাঁরা কেবল এই লিগে অংশগ্রহণ করেননি, তাঁরা লিগের সংজ্ঞাও বদলে দিয়েছেন।

এই তালিকায় প্রতিটি নাম নিজেদের জায়গা অর্জন করেছেন শুধু ট্রফি জেতার জন্য বা রেকর্ডের জন্য নয়, মানদণ্ড স্থাপন করার জন্যও। এই ফুটবলাররা দেখিয়েছেন যে, একজন বিদেশি খেলোয়াড়ের কাছ থেকে ভারতীয় ফুটবল কী আশা করতে পারে এবং কী পাওয়া উচিত। কেউ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, কেউ পরিসংখ্যানে গভীর প্রভাব ফেলেছেন— কিন্তু প্রত্যেকেই তাঁদের উপস্থিতিকে অর্থবহ করে তুলেছেন।

কারা সেই আইএসএল ইতিহাসের সেরা বিদেশি একাদশে থাকবেন, দেখে নেওয়া যাক।

গোলকিপার: এডেল বেতে

এডেল বেতে শুধু একজন দক্ষ গোলরক্ষকই ছিলেন না, ট্রফি জয়ে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ছিলেন একজন নির্ভরযোগ্য গোলকিপার। তিনি দুটি ভিন্ন ক্লাবের হয়ে আইএসএল কাপ জিতেছেন— প্রথমে এটিকে (২০১৪), পরে চেন্নাইন এফসি (২০১৫)। ব্যক্তিগতভাবে ২০১৫-য় জিতেছেন গোল্ডেন গ্লাভ।

তাঁর রিফ্লেক্স ছিল তীক্ষ্ণ, পাসিংও ছিল ভাল। কিন্তু তাঁকে আলাদা করে তুলেছিল বড় ম্যাচে তাঁর ঠাণ্ডা মাথায় খেলার ক্ষমতা। তাঁর উপস্থিতি রক্ষণভাগে স্থিরতা এনে দেয় এবং অনেক সময়েই তিনি ছিলেন শান্তির শেষ প্রহরী।

রাইট ব্যাক: ইনিগো কালদেরন

আইএসএলে খুব কম বিদেশি ডিফেন্ডার ফুল-ব্যাক পজিশনে খেলেছেন এবং তাদের মধ্যে কম সংখ্যক খেলোয়াড়ই দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলেছেন। কালদেরন ছিলেন সেই বিরল ব্যক্তি। এই স্প্যানিশ রাইট-ব্যাক চেন্নাইয়িন এফসি-র রক্ষণভাগে এক ভরসার নাম হয়ে ওঠেন। ২০১৭-১৮ মরশুমে আইএসএল কাপ জয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন তিনি। রক্ষণে দৃঢ়তা এবং উইং থেকে আক্রমণে সামর্থ্য ছিল তাঁর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ২০১৮-১৯ মরশুমে তাঁর দল খারাপ করলেও, কালদেরন ড্রেসিংরুমে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং দল ছাড়ার আগে পর্যন্ত ছিলেন এক প্রেরণাদায়ক চরিত্র।

রাইট সেন্টার-ব্যাক: মুর্তাদা ফল

তিনটি আলাদা ক্লাবে (এফসি গোয়া, মুম্বই সিটি এফসি, ওড়িশা এফসি) খেলার মাধ্যমে মুর্তাদা ফল আইএসএল-এর পরিচিত মুখ হয়ে উঠেছেন। ২৫টি গোল করে একজন ডিফেন্ডার হিসেবে তিনি দুর্লভ গোলস্কোরার হয়ে ওঠেন। সোজা ভাষায়, তাঁকে রক্ষণে যেমন ভরসা করা যায়, প্রতিপক্ষের বক্সেও তিনি হয়ে ওঠেন ত্রাস। এফসি গোয়াকে ২০১৯-২০ মরশুমে শিল্ড জয় করাতে সাহায্য করেছেন ফল। মুম্বই সিটির ঐতিহাসিক ডবল জয়ে (২০২০-২১) মুখ্য ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০২৩-২৪-এ ওড়িশা এফসি-র সেরা পয়েন্ট সংগ্রহের মরশুমেও তাঁর অবদান ছিল অপরিসীম।

লেফট্ সেন্টার-ব্যাক: তিরি

আইএসএলে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলা বিদেশি খেলোয়াড় এই স্প্যানিশ। তিরি ছিলেন এক ব্যতিক্রমী, কৌশলে সুশৃঙ্খল ডিফেন্ডার। এটিকে, জামশেদপুর এফসি, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং মুম্বই সিটি এফসি-তে খেলার সময় তাঁর উপস্থিতি দলকে স্থিতিশীলতা এনে দেয়। তাঁর ধারাবাহিকতা, দীর্ঘক্ষণ লড়ার ক্ষমতা, বিভিন্ন কোচের অধীনে মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা এবং মাঠে ঠাণ্ডা মাথায় খেলার গুণ তাঁকে অন্যান্যদের চেয়ে এগিয়ে রেখেছে।

লেফট্-ব্যাক: বার্নার্ড মেন্ডি

চেন্নাইন এফসি-র রক্ষণভাগে লৌহপ্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মেন্ডি। মূলত একজন সেন্টার-ব্যাক হলেও প্রয়োজনে লেফট-ব্যাকেও খেলেছেন এবং নিজের অভিজ্ঞতা, শক্তি ও গোল করার দক্ষতা দিয়ে দলের ২০১৫ মরশুমের কাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ পালন করেছিলেন। তিনি শুধু একজন ফুটবলার ছিলেন না, ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এক পথপ্রদর্শকও ছিলেন।

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার: আহমেদ জাহু

এই মরক্কান মিডফিল্ডার ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণে অদ্বিতীয় ছিলেন। এফসি গোয়া এবং পরে মুম্বই সিটির হয়ে তিনি ছিলেন দলের ছন্দের মূল চাবিকাঠি। তাঁর ট্যাকল, ইন্টারসেপশন এবং দূরদর্শিতা অন্যদের খেলায় জ্বলে উঠতে সাহায্য করেছে। জাহু ছিলেন এমন একজন খেলোয়াড় যিনি মাঝমাঠ শুধু কভার করতেন না, বরং পুরো গেম কন্ট্রোল করতেন।

সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার: আদ্রিয়ান লুনা

কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র ভক্তদের আবেগকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন এই উরুগুয়ান মিডফিল্ডার। ২০২১-এ এই ক্লাবে যোগ দিয়ে তিনবার টানা প্লে-অফে নিয়ে গিয়েছেন দলকে। মাঠে তাঁর লড়াকু মনোভাব এবং নেতৃত্বের গুণে তিনি হয়ে উঠেছেন ক্লাবের হৃদয়। তিনি শুধু পারফরমার নন, নেতা, পথপ্রদর্শক এবং অনুপ্রেরণাও।

অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার: হুগো বুমৌস

এফসি গোয়া, মুম্বাই সিটি এফসি, মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট এবং ওড়িশা এফসি— এই চারটি ক্লাবেরই আক্রমণে হুগো বুমৌস ছিলেন ত্রাস। তিনি ২০১৯-২০ মরশুমে গোল্ডেন বল জেতেন এবং বারবার অ্যাসিস্ট (৩৯) ও গোল (৩৭) করে নিজের মান ধরে রেখেছেন। আইএসএলে "নম্বর ১০" পজিশনের সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছেন বুমৌস।

গ্রেগ স্টুয়ার্ট ও হাভিয়ে হার্নান্দেজ আক্রমণাত্মক মিডফিল্ডার পজিশনের জন্য জোরালো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। স্টুয়ার্ট সম্ভবত লিগের ইতিহাসে কোনও অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের সেরা একক মরশুম কাটিয়েছেন। ২০২১-২২-এ জামশেদপুরের হয়ে তিনি দুর্দান্ত পারফর্ম করেন—১১টি গোল ও ১০টি অ্যাসিস্ট করে দলকে শিল্ড জয়ে সাহায্য করেছিলেন। এরপর ২০২২-২৩ মরশুমে মুম্বই সিটি এফসি-র হয়েও নিজেকে প্রমাণ করেন, যেখানে দল ফের শিল্ড জেতে। অন্যদিকে, হার্নান্দেজ বরাবরই বড় ম্যাচের খেলোয়াড় হিসেবে পরিচিত। তিনি একাধিক ক্লাবে খেলেছেন এবং একবার আইএসএল কাপও জিতেছেন।

তবে বুমৌস একাধিক মরশুম ও ক্লাবে ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করেছেন। প্রতিটি ক্লাবেই তিনি ছিলেন মাঝমাঠে মূল চালিকা শক্তি। ধারালো, ক্ষিপ্র পাসিংয়ের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ ভেঙে দেওয়া এবং গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল করাই ছিল তাঁর বিশেষত্ব।

রাইট ফরোয়ার্ড: ফেরান কোরোমিনাস (কোরো)

আইএসএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল বিদেশি ফরোয়ার্ড তিনি। এফসি গোয়ার হয়ে মাত্র ৫৭ ম্যাচে ৪৮ গোল। দুটি মরশুমে গোল্ডেন বুট জিতেছেন। তাঁর বুদ্ধিমত্তা, মুভমেন্ট এবং ফিনিশিং এক কথায় অবিশ্বাস্য। দিয়েগো মরিসিও, যিনি মাঝে মাঝে ডান দিক থেকেও খেলেছেন, ওড়িশা এফসি-র হয়ে দুর্দান্ত খেলেছিলেন। বিশেষ করে ২০২২-২৩ মরশুমে, যখন তিনি গোল্ডেন বুট জয় করেন। তিনি ছিলেন বিস্ফোরক এবং যেদিন ছন্দে থাকতেন, সেদিন তাঁকে আটকানো প্রায় অসম্ভব ছিল। ব্রাজিলিয়ান খেলোয়াড়টির শৈল্পিকতা ছিল চোখে পড়ার মত। কিন্তু কোরো ছিলেন তুলনাহীন। তাঁর ফুটবল বুদ্ধিমত্তা এবং গোল করার সাফল্যের হার ছিল অভিজাত মানের। প্রতি ম্যাচে গড়ে প্রায় একটি করে গোল করেছেন তিনি, এবং এমন একজন খেলোয়াড় ছিলেন যিনি পুরো আক্রমণভাগকেই কার্যকর করে তুলতেন।

স্ট্রাইকার: বারথোলোমিউ ওগবেচে

ওগবেচে ছিলেন প্রকৃত অর্থে একজন স্ট্রাইকার। স্বতঃস্ফূর্ত, নির্ভুল এবং যথেষ্ট কার্যকর। তিনি আইএসএল ইতিহাসে বিদেশি খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডের অধিকারী, তবে যে ব্যাপারটা তাঁকে স্পেশাল করে তোলে, তা হল বিভিন্ন ক্লাবে তাঁর ধারাবাহিকতা। নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-তে তিনি একটি অনভিজ্ঞ দলের নেতৃত্ব দিয়ে প্রথমবার প্লে-অফে পৌঁছে দেন। পরে হায়দরাবাদ এফসি-তে ২০২১-২২ মরশুমে আইএসএল কাপ জেতান। প্রতিবারই তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

মিকু এবং ক্লেটন সিলভা এই পজিশনের জন্য তাঁর কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। মিকু বেঙ্গালুরু এফসি-তে সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে এক দুর্ধর্ষ জুটি গড়েছিলেন এবং তিনি এখনও লিগের ইতিহাসে অন্যতম কার্যকর স্ট্রাইকার হিসেবে বিবেচিত। ক্লেটন সিলভা বেঙ্গালুরু এফসি এবং ইস্ট বেঙ্গল এফসি— দুই দলেই কার্যকর গোলদাতা ছিলেন। তবে তাঁর মূল্যায়ন কোনদিনই ঠিকমতো হয়নি। ওগবেচের এগিয়ে থাকার কারণ আইএসএলে আর কোনও বিদেশি খেলোয়াড় এত বেশি গোল করেননি। এবং শুধু একটি ক্লাবের হয়ে নয়, চারটি আলাদা ক্লাবে এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন তিনি। যে কোনও সিস্টেমে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে প্রতি মরশুমে গোল করে যাওয়ার ক্ষমতা তাঁকে এই একাদশে স্বয়ংক্রিয়ভাবে জায়গা করে দিয়েছে।

লেফট্ ফরোয়ার্ড: রয় কৃষ্ণা

আইএসএলে খুব কম বিদেশি ফরোয়ার্ড রয় কৃষ্ণর মতো প্রভাব ফেলেছেন। এই ফিজিয়ান তারকা ২০১৯-২০ মরশুমে এটিকে এফসি-র কাপ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং পরবর্তীতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট-এ যোগ দেন। তিনি একাই আক্রমণের নেতৃত্ব দিন বা দ্বিতীয় স্ট্রাইকারের সঙ্গে জুটি গড়ুন, সবেতেই ছিলেন দুর্দান্ত। ডেভিড উইলিয়ামসের সঙ্গে তাঁর বোঝাপড়া ছিল দুর্দান্ত। এই জুটিকে আইএসএল ইতিহাসের অন্যতম সেরা আক্রমণাত্মক জুটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শুধু পরিসংখ্যান নয়, বিভিন্ন ক্লাবে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে জ্বলে ওঠার ক্ষমতাই কৃষ্ণাকে অনন্য করে তুলেছে।

এই পজিশনের জন্য মার্সেলিনিও এবং স্টিভেন মেন্ডোজাও তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন। মার্সেলিনিও ২০১৬ সালে গোল্ডেন বুট জিতেছিলেন এবং তাঁর ড্রিবল ও মুভমেন্ট দিয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগকে দিশেহারা করে দিতেন। অন্যদিকে, মেন্ডোজা ২০১৫ সালে চেন্নাইয়িন এফসি-র কাপ জয়ে ছিলেন অপ্রতিরোধ্য—বিশেষ করে ফাইনালে তাঁর অতিরিক্ত সময়ের স্মরণীয় জয়সূচক গোল আজও ভক্তদের মনে রয়েছে।

তবে মার্সেলিনিও ও মেন্ডোজা দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত উপহার দিলেও, রয় কৃষ্ণ ছিলেন একটি পূর্ণাঙ্গ আক্রমণাত্মক প্যাকেজ। গোল করেছেন (৫৮), অ্যাসিস্ট করেছেন (২৬) এবং সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। চারটি ভিন্ন দলের প্রতিনিধিত্ব করে তিনি আইএসএল ইতিহাসে বিদেশি গোলদাতাদের তালিকায় শুধু ওগবেচের পরে রয়েছেন।

এই একাদশ শুধু পরিসংখ্যান বা ট্রফির জন্য বেছে নেওয়া হয়নি, বরং এঁরা সবাই আইএসএলের ইতিহাসে ফুটবলপ্রেমীদের মনে ছাপ ফেলেছেন। তাঁরা দেখিয়েছেন, কীভাবে বিদেশি খেলোয়াড়রা ভারতীয় ফুটবলে উচ্চ মান ও সংস্কৃতি গড়ে তুলতে পারেন।