এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২: শক্তিশালী প্রতিপক্ষদের সামনে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট
এসিএল ২-এর গ্রুপ ‘সি’ মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের কাছে এক কঠিন পরীক্ষার মঞ্চ হতে চলেছে, যেখানে তিন শক্তিশালী প্রতিপক্ষই তাদের পথে কঠিন বাধা হয়ে উঠতে পারে।

২০২৫–২৬ মরশুমে এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২-এর গ্রুপ পর্বে ফিরতে চলেছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (আইএসএল) বর্তমান শিল্ড ও কাপ চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। শুক্রবার মালয়েশিয়ার কুয়ালা লামপুরে এএফসি হাউসে আনুষ্ঠানিক ড্র-য়ে টুর্নামেন্টের গ্রুপ পর্বের সূচি তৈরি হয়।
গ্রুপ ‘সি’-তে ইরানের সেপাহান এসসি, জর্ডনের আল হুসেইন এসসি এবং তুর্কমেনিস্তানের আহল এফসি-র মুখোমুখি হবে দু’বারের আইএসএল শিল্ড ও কাপজয়ী দল। আইএসএল শিল্ড জিতে তারা এই আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং ইতিহাস গড়ে পরপর দুই মরশুমে শিল্ড জয়ী প্রথম দল হয়ে ওঠে। গত আইএসএল মরশুমে তারা ২৪ ম্যাচে অভূতপূর্ব ভাবে ৫৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছিল, যা তাদের আধিপত্যের প্রমাণ দেয়। এ বার, কলকাতার এই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মহাদেশীয় মঞ্চে নিজেদের দক্ষতার ছাপ রাখার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
.@FCGoaOfficial & @mohunbagansg are ready for their #ACLTwo challenge! 🔥#ISL #LetsFootball #FCGoa #MBSG | @TheAFCCL pic.twitter.com/3YHL77JQY9
— Indian Super League (@IndSuperLeague) August 15, 2025
অন্য দিকে, আইএসএলের আরেক প্রতিনিধি এফসি গোয়া রয়েছে গ্রুপ ‘ডি’-তে, যেখানে রয়েছে সৌদি আরবের শক্তিশালী দল আল নাসর, ইরাকের আল জাওরা এসসি এবং তাজিকিস্তানের এফসি ইস্তিকলল।
দেখে নেওয়া যাক মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের গ্রুপ পর্বের প্রতিপক্ষরা কেমন।
সেপাহান এসসি (ইরান) (ম্যাচ ৩০ সেপ্টেম্বর ও ২৩ ডিসেম্বর)
গ্রুপ পর্বে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের প্রথম প্রতিপক্ষ হলো ফুলাদ মোবারাকে সেপাহান স্পোর্ট ক্লাব, যা সাধারণভাবে সেপাহান এসসি নামে পরিচিত। ইরানের এই দলটি পাঁচবার পার্সিয়ান গাল্ফ প্রো লিগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং পাঁচবার রানার্স-আপ হয়েছে। তারা পাঁচবার হাজফি কাপ জিতেছে এবং গত বছর ইরানিয়ান সুপার কাপ জেতে। গত মরশুমে সেপাহান লিগে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করে এবং এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ এলিট-এর প্রাথমিক পর্বে প্রবেশ করে, যেখানে তারা কাতারের আল দুহাইল এসসির কাছে ৩–২-এ হেরে যায়। ফলে তারা দ্বিতীয় স্তর, অর্থাৎ এসিএল ২-এ নেমে আসে, পট ১-এর দল হিসেবে। ২০০৭ সালে তারা এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ এলিটের রানার্স-আপও ছিল। সেপাহানের দলে ইরান জাতীয় দলের একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে। গ্রুপ ‘সি’-তে সবুজ-মেরুন বাহিনীর কাছে তারা অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
আল হুসেইন এসসি (জর্ডন) (ম্যাচ ২১ অক্টোবর ও ৪ নভেম্বর)
আল হুসেইন এসসি এই প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে গত মরশুমের জর্ডানিয়ান প্রো লিগ চ্যাম্পিয়ন হিসেবে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের মতো তারাও পরপর দুই মরশুমে ঘরোয়া লিগ শিরোপা জিতেছে। ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্লাব জর্ডনের ফুটবলে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে এবং নিয়মিত সাফল্যের জন্য লড়াই করে আসছে। লিগ শিরোপা জয়ের সুবাদে তারা সরাসরি এসিএল ২ গ্রুপ পর্বের যোগ্যতা অর্জন করেছে। এতদিনে তারা দু’বার জর্ডানিয়ান প্রো লিগ, তিনবার এফএ শিল্ড এবং তিনবার সুপার কাপ জিতেছে। এই নিয়ে তৃতীয়বার এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২-এ (আগে যা এএফসি কাপ নামে পরিচিত ছিল) অংশ নিতে চলেছে। তাদের সেরা পারফরম্যান্স ছিল গত মরশুমে, যখন তারা শেষ ষোলোয় পৌঁছেছিল। দলে জর্ডনের জাতীয় দলের একাধিক ফুটবলার থাকায় তারা মহাদেশীয় আসরে প্রভাব ফেলবে এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের রক্ষণভাগকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে।
আহল এফসি (তুর্কমেনিস্তান) (ম্যাচ ১৬ সেপ্টেম্বর ও ২৫ নভেম্বর)
গ্রুপ পর্বের মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের তৃতীয় প্রতিপক্ষ হলো আহল এফসি। তুর্কমেনিস্তানের এই দল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইয়োকারি লিগার অন্যতম ধারাবাহিক ক্লাব। যদিও তারা মাত্র একবার লিগ শিরোপা জিতেছে, তবে সাতবার রানার্স-আপও হয়েছে। এছাড়া তারা চারবার তুর্কমেনিস্তান কাপ জিতেছে এবং ২০১৪-য় একবার তুর্কমেনিস্তান সুপার কাপ জিতেছে। এফসি গোয়ার মত, আহল এফসি-ও প্লে-অফের মাধ্যমে এসিএল ২ গ্রুপ পর্বে জায়গা করে নেয়, তাজিকিস্তানের রেগার-তাদাজ তুরসুনজোদাকে ২–১-এ হারিয়ে। এটি হবে তাদের ষষ্ঠ এএফসি কাপ বা এর নতুন রূপ, এএফসি চ্যাম্পিয়নস লিগ ২-য়ে অংশগ্রহণ। আহল এফসির সরাসরি খেলার ধরণ ও দৃঢ়তা দুই লেগ মিলিয়ে বাগান বাহিনীর পক্ষে বিপজ্জনক বাধা হয়ে উঠতে পারে।