ভুবনেশ্বরে ভারতীয় ফুটবল দলের চলতি প্রস্তুতি শিবিরের সুযোগ-সুবিধা দেখে রীতিমতো মুগ্ধ অভিজ্ঞ গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধু। এই প্রথম ভারতীয় দল ভুবনেশ্বরে প্রস্তুতি শিবির করছে, যেখানে দেশের ৪১ জন প্রতিভাবান ফুটবলারকে ডেকে নিয়মিত অনুশীলন ও শারীরিক কন্ডিশনিং করাচ্ছেন ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ।

প্রস্তুতির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটে গুরপ্রীত বলেন, “ওডিশায় আমরা যা সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি, তা অসাধারণ। এখানে যা রয়েছে, তার পরে খেলোয়াড়দের আর কিছু চাওয়ার থাকতে পারে না। ট্রেনিং ফেসিলিটি, ড্রেসিং রুম, রিকভারি, জিম, ফিটনেসের সরঞ্জাম, সব দিক থেকেই যথেষ্ট উন্নত ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। আমাদের প্রস্তুতি শিবির বেশ ভাল হচ্ছে। আমাদের একাধিক পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে এখানে। আমরা প্রত্যেকেই প্রতিদিন অনুশীলনে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকি। আমরা সৌভাগ্যবান যে, ওডিশা সরকারের সমর্থন পাচ্ছি আমরা”।

ভুবনেশ্বরেই আগামী ৯ জুন থেকে হিরো ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ হবে, যেখানে আয়োজক ভারত ছাড়াও খেলবে মঙ্গোলিয়া (ফিফা ক্রমতালিকায় ১৮৩), ভানুয়াতু (১৬৪) ও লেবাননের (৯৯) বিরুদ্ধে। এই টুর্নামেন্টের পরেই বেঙ্গালুরুতে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ভারত গ্রুপ পর্বে খেলবে কুয়েত  (১৪৩), নেপাল (১৭৪), পাকিস্তানের (১৯৫) বিরুদ্ধে। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের নক আউট পর্বেও লেবাননের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে গুরপ্রীতদের।

আগামী বছর ১২ জানুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি কাতারে অনুষ্ঠিত হবে এএফসি এশিয়ান কাপ। এশিয়ার সবচেয়ে বড় আন্তর্দেশীয় এই প্রতিযোগিতার মূলপর্বে ভারত এই প্রথম পরপর দু’বার অংশ নিতে চলেছে। সাফল্য পেতে গেলে তাদের গ্রুপ পর্বে ভাল পারফরম্যান্স দেখাতে হবে। ফিফা ক্রমতালিকায় বর্তমানে ভারত যেখানে রয়েছে ১০১ নম্বরে, সেখানে তাদের গ্রুপে থাকা সিরিয়া ৯০, উজবেকিস্তান ৭৪ ও অস্ট্রেলিয়া রয়েছে ২৯ নম্বরে। ভারতীয় দল এখন এশিয়ান কাপের কথা মাথায় রেখেই প্রস্তুতি সারছে এবং সেই টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির জন্যই সারা বছর ধরে একাধিক টুর্নামেন্ট খেলবে।

ভারতের জার্সি গায়ে টানা টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পেয়ে খুশি গুরপ্রীত। দেশের হয়ে ৫৭টি ম্যাচ খেলা গোলকিপার মনে করেন, এর ফলে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে বোঝাপড়া আরও ভাল হবে। তিনি বলেন, “টানা ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদেরই সুবিধা হবে। আগামী কয়েক মাসে আমরা (ভারতীয় দল) পরপর ম্যাচ খেলব, যা বোধহয় আগে কখনও হয়নি। ব্যক্তিগত ভাবে আমি এই নিয়ে যথেষ্ট খুশি। এই ধরনের টুর্নামেন্টগুলো সবসময়ই বড় চ্যালেঞ্জ। এর ফলে আমাদের দক্ষতার ধার বাড়বে এবং ভাল দলগুলোর বিরুদ্ধে আমরা ভাল খেলতে পারব। এমনকী, হয়তো তাদের হারাতেও পারি”।

এশিয়ান কাপের মতো টুর্নামেন্টে ভাল ফল করতে গেলে এই ধরনের প্রস্তুতিই প্রয়োজন বলে মনে করেন ভারতীয় গোলকিপার। তিনি বলেন, “এশিয়ান কাপ আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগে আমাদের যত ম্যাচ খেলার সুযোগ আসবে, তত ম্যাচ খেলতে হবে। তা হলে দলের খেলোয়াড়রা বারবার একত্র হতে পারবে। একে অপরের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারবে। আমরা দল হিসেবে নিজেদের আরও উন্নত করে তুলতে পারব”।

ভারতীয় দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে যথেষ্ট ভাল সম্পর্ক রয়েছে বলে জানান গুরপ্রীত। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “দলের ছেলেদের মধ্যে সম্পর্ক খুবই ভাল। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা রয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা একে অপরের দাদা-ভাইয়ের  মতো। আমরা জানি যে যখন সুযোগ পাবে, তখনই সে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারবে। দেশের হয়ে খেলা বিরাট সন্মানের। তাই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে আমাদের পিছপা হলে চলবে না। যখনই প্রয়োজন পড়ে, তখনই আমরা একে অপরকে সাহায্য করি। দলের মধ্যে এই স্পিরিট না থাকলে চলবে না। শুধু মাঠে থাকা নয়, আমরা প্রত্যেকেই দলের জয় দেখতে চাই”।