মাইকেল সুসাইরাজের চোট চিন্তায় ফেলে দিল এটিকে মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসকে। শুক্রবার ম্যাচের পরে তিনি ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “সুসাইরাজের গুরুতর চোট লাগা সত্ত্বেও কী ভাবে রেফারি খেলা চালিয়ে গেলেন, তা ভেবে আমি অবাক হয়েছি। ওটা ফাউল ছিল। ওর চোট ঠিক কতটা গুরুতর, এখনও নিশ্চিত নই। জানি না কবে সেরে উঠবে। তবে আশা করি দ্রুত ওকে মাঠে ফেরাতে পারব”।

শুক্রবার বাম্বোলিমের জিএমসি স্টেডিয়ামে হিরো আইএসএলের অভিষেক ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র বিরুদ্ধে ১-০ গোলে জয় পেল এটিকে মোহনাবাগান। প্রথম দিকে দলের খেলা ভাল না লাগলেও সব মিলিয়ে তাঁর দলের ছেলেদের পারফরম্যান্স নিয়ে খুশি হাবাস। বলেন, “শুরুর দিকটা আমরা ভাল খেলতে পারিনি। তবে ম্যাচে ছেলেরা খুবই ভাল খেলেছে। নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। এই পরিবেশে এর চেয়ে ভাল খেলা কঠিন। কেরালার মতো ম্যাচে তিন পাওয়াটা বড় ব্যাপার। তাই আমি খুশি”। 

শুরুটা ভাল হওয়ায় সবুজ-মেরুন শিবিরের আত্মবিশ্বাস যে বেড়ে যাবে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই জয় থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাস নিয়ে এ বার ডার্বির প্রস্তুতি শুরু করতে চান হাবাস। বলেন, “এ বার আমরা ইস্টবেঙ্গল ম্যাচের কথা ভাবব। প্রস্তুতি শুরু হবে রবিবার থেকে। সে দিন থেকে রোজ প্র্যাকটিস। ওই ম্যাচের জন্য নিখুঁত প্রস্তুতি অবশ্যই দরকার”।

এ দিন প্রথম এগারোয় দলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামসকে না দেখতে পেয়ে সমর্থকেরা অনেকেই অবাক হয়েছেন। আক্রমণে রয় কৃষ্ণার সঙ্গে এ দিন এডু গার্সিয়া শুরু করেন। পরে মনবীর সিংকেও নামান হাবাস। কিন্তু উইলিয়ামসকে নামান নির্দিষ্ট সময় শেষ হওয়ার আট মিনিট আগে। কেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা স্ট্রাইকারকে নামালেন না, এই প্রশ্নের উত্তরে হাবাস বলেন, “এত আর্দ্র আবহাওয়ায় একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে টানা ৯০ মিনিট না খেলানোই ভাল। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে সবাইকে খেলাতে হবে। সেই কারণেই আজ উইলিয়ামসকে অনেক পরে নামিয়েছি। রয়কেও পুরো ম্যাচ খেলাইনি। এ ভাবেই দীর্ঘ লিগ খেলতে হবে আমাদের”।  

প্রণয় হালদারকে তুলে নিয়ে কেন মনবীরকে নামালেন, সেই প্রসঙ্গে হাবাসের ব্যাখ্যা, “মাঝমাঠে আমাদের শক্তি কমে গিয়েছিল। তাই আক্রমণে ধার বাড়িয়ে বিপক্ষের ওপর বেশি চাপ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা নিতে হয়। আর সেই জন্যই ছক বদলাতে হয় আমাদের”। কোচের এই সিদ্ধান্ত অবশ্য কাজে লেগে যায়। মনবীর নামার চার মিনিট পরেই তাঁর পাস থেকেই রয় গোল করে ম্যাচটি জেতান।

অন্য দিকে কেরালা ব্লাস্টার্সের কোচ কিবু ভিকুনা প্রথম ম্যাচে হারলেও দলের পারফরম্যান্সে খুশি। বলেন, “দলের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলেছে ছেলেরা। তবে দুর্ভাগ্যবশত, একটা গোল খেয়ে হেরে যাই আমরা। আমরাও একাধিক গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। তবে কাজে লাগাতে পারিনি। এখানেই পিছিয়ে পড়ি আমরা। যা হওয়ার হয়েছে, এখন পরের ম্যাচের দিকে মন দিতে হবে”।

পরে অবশ্য দলের দোষত্রুটিগুলো স্বীকার করে নিয়ে বলেন, “দ্বিতীয়ার্ধে আমরা আক্রমণ বাড়ালেও আমাদের উইঙ্গার, স্ট্রাইকাররা ততটা কার্যকরী হয়ে উঠতে পারেনি। এই ম্যাচের পরে আমাদের কিছু জায়গায় শোধরাতে হবে”।  নিশুকুমারের মতো তারকা ডিফেন্ডারকে এ দিন না খেলানো প্রসঙ্গে ভিকুনা বলেন, “নিশুর প্রিসিজন ট্রেনিংয়ে কিছু সমস্যা হয়েছিল। আর ও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ও যখন একশো শতাংশ তৈরি হয়ে যাবে, তখন ওকে মাঠে নামাব”।