রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে (আরএফডিএল) চ্যাম্পিয়ন হল বেঙ্গালুরু এফসি। ফাইনালে তারা হারাল দিল্লির সুদেভা এফসি-কে। রবিবার নভি মুম্বইয়ে পোনাল্টি শুট আউটের মাধ্যমে ম্যাচের নিষ্পত্তি হয়। ৪-৩-এ জিতে বেঙ্গালুরু তাদের গতবারের জেতা খেতাব নিজেদের কাছেই রাখল। অন্য দিকে, তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ইয়ং চ্যাম্পসকে ৫-১-এ হারিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করল এটিকে মোহনবাগান।

প্রায় ঘণ্টাখানেক ফল ১-১ থাকার পর এটিকে মোহনবাগান আক্রমণের তীব্রতা বাড়ায় এবং আগ্রাসী ফুটবল খেলে আরও চারটি গোল করে। প্রথমবার দেশের সবচেয়ে বড় যুব ফুটবলের আসরে অংশ নিয়ে সাফল্যের পথে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েও অল্পের জন্য সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যায় যুব সবুজ-মেরুন দল।

বেঙ্গালুরু এফসি-র যুব দলের বিরুদ্ধে একটিমাত্র পেনাল্টি শটে ব্যর্থ হওয়ায় ফাইনালে ওঠা হয়নি তাদের। নির্ধারিত সময়ে ১-১ থাকার পর পেনাল্টি শুট আউটে ৭-৬-এ জিতে আরএফডিএল ২০২৩-এর ফাইনালে ওঠে সুনীল ছেত্রীদের ভাইয়েরা। সেই ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠতে মরিয়া এটিকে মোহনবাগান এ দিন বড় ব্যবধানে জিতে তিন নম্বর জায়গাটা নিশ্চিত করল।

সিনিয়র দলের প্রায় নিয়মিত খেলোয়াড় কিয়ান নাসিরি এ দিন ১৮ মিনিটে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। কিন্তু তারা এই ব্যবধান বেশিক্ষণ বজায় রাখতে পারেনি। ২৬ মিনিটেই গোল শোধ করে দেন রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনের সানন মহম্মদ। এর পরে এটিকে মোহনবাগানের ব্রিজেশ গিরি দলকে এগিয়ে দেন। এই সময় থেকে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিয়ে নেয় কলকাতার দল।

পরিবর্ত খেলোয়াড় উত্তম হাঁসদা দলকে ৩-১-এ এগিয়ে দেন। শেষ কুড়ি মিনিট মূলত প্রতিপক্ষের অঞ্চলেই বিচরণ করে সবুজ-মেরুন বাহিনী। ৮৯ মিনিটে দীপ্পেন্দু বিশ্বাস ও স্টপেজ টাইমে অমনদীপ বিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দলের জয় সুনিশ্চিত করেন।

রিলায়্যান্স কর্পোরেট পার্কে ফাইনালের ১৭ মিনিটে মাথায় সেইলাঙথাঙ লোৎজেম সুদেভাকে এগিয়ে দেন। বিরতির আগে বেঙ্গালুরুর থই সিং পেনাল্টি থেকে গোল শোধ করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই, ৪৮ মিনিটে সুদেভার ড্যানিয়েল গুরুং ফের ব্যবধান তৈরি করে দেন। কিন্তু বেঙ্গালুরু এফসি ছাড়ার পাত্র নয়। পরিবর্ত ফরোয়ার্ড সতেন্দ্র সিং যাদব ফের সমতা এনে দেন দলকে। তবে আর গোল হয়নি নির্ধারিত সময়ে। ফলে ম্যাচ পেনাল্টি শুট আউটে গড়ায়।

বেঙ্গালুরুর গোলকিপার শ্যারন ডানদিকে ঝাঁপিয়ে রমেশ ছেত্রীর নেওয়া সুদেভার শেষ শটটি বাঁচানোর সঙ্গে সঙ্গে উল্লাসে ফেটে পড়ে বেঙ্গালুরু শিবির। এই মরসুমে সিনিয়রদের তিনটি টুর্নামেন্টেই ফাইনালে উঠেছিল বেঙ্গালুরু। তার মধ্যে দুটিতে জেতে তারা। এ বার যুবদের ফাইনালে উঠেও খেতাব জিতে নিলেন সুনীল ছেত্রীদের ভাইয়েরাও।

বেঙ্গালুরু এফসি-র যুব দলের কোচ কাইজাদ অম্বাপারদিওয়ালা বলেন, “আমাদের দলের খেলোয়াড়দের মান সত্যিই খুব ভাল। তাই জানতাম, যাই হোক, ছেলেরা ঘুরে দাঁড়াবেই। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলেছি এবং তারই ফল পেয়েছি”।

তৃতীয় স্থান পাওয়ার পর এটিকে মোহনবাগানের যুব দলের কোচ জোসেপ মারিয়া রোমা গিলবার্ট বলেন, “ছেলেরা ফোকাসড ছিল। আমাদের আক্রমণাত্মক ফুটবলের যে ধারনা, সেটা ওরা খুব ভাল করে বুঝে নিয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে যে দুটি ম্যাচে আমরা ড্র করেছি, তার দিকে তাকালে বুঝবেন, কত সুযোগ আমরা তৈরি করেছি। অন্যান্য ম্যাচেও আমরা কম সুযোগ তৈরি করিনি। আমি খুশি যে, ছেলেরা অবশেষে সুযোগ তৈরি করে তার সদ্ব্যবহারও করতে পারল”।

এ বার তাদের সামনে প্রিমিয়ার লিগ নেক্সট জেন কাপ জয়ের লক্ষ্য। বুধবার থেকে মুম্বইয়ের রিলায়্যান্স কর্পোরেট পার্কে হতে চলেছে এই টুর্নামেন্ট, যাতে অংশ নেবে প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব এভার্টন এফসি, ওয়েস্ট হ্যাম ইউনাইটেড এফসি ও উলভারহ্যাম্পটন ওয়ান্ডারার্স এফসি-র যুব দল। এ ছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিমিয়ার সকার লিগের দল স্টেলেনবশ এফসি-ও এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। আরএফডিএল-এর চার সেমিফাইনালিস্ট তাদের বিরুদ্ধে খেলবে। ম্যাচগুলি হবে মে-র ১৭, ২০ ও ২৩-এ। ফাইনাল হবে ২৬ মে।