বাঙালি মানেই ফুটবল আর ফুটবল মানেই বাঙালি। ভারতের স্বাধীনতার পরে বাঙালি ফুটবলারদের ছাড়া কোনও বড় ফুটবলের আসর এ দেশে এ পর্যন্ত বসেছে বলে তো মনে হয় না। ভবিষ্যতেও হবে বলে মনে হয় না। একটা সময় ছিল ভারতের জাতীয় দলের কোচ ও বেশির ভাগ ফুটবলারই ছিলেন বাঙালি। এখনও ভারতীয় ফুটবল দলে একাধিক বাংলার প্রতিনিধি রয়েছেন। তাই বাঙালিদের বাদ দিয়ে এ দেশের ফুটবলের কথা ভাবাই যায় না।

হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগও কোনও ভাবেই এর ব্যতিক্রম নয়। একেবারে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত হিরো আইএসএলের সঙ্গে বাংলার ফুটবলাররা জড়িয়ে রয়েছেন। রহিম নবি থেকে মেহতাব হোসেন, প্রীতম কোটাল, নারায়ণ দাস, মহম্মদ রফিক, কিংশুক দেবনাথ, সুব্রত পাল, অর্ণব মণ্ডল, দেবজিৎ মজুমদার, প্রণয় হালদার, অরিন্দম ভট্টাচার্য, শুভাশিস রায়চৌধুরি, অভিজিৎ সরকার, প্রবীর দাস, রহিম আলি থেকে হাল আমলের ফারদিন আলি মোল্লা— তালিকাটা পুরো তৈরি করতে বসলে তা বিশাল হয়ে যাবে।

বাংলার দুই ক্লাবে তো বঙ্গতনয়রা খেলেনই। বাংলার বাইরের ক্লাবগুলিতেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন বহু নামী, অনামী বঙ্গ-ফুটবলার। তাই দুই প্রধানের পাশাপাশি বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের নজর থাকে সেই সব বঙ্গ-তারকাদের ওপরেও যারা চুটিয়ে পারফর্ম করেন ও সারা দেশে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেন।

এ বারেও কলকাতার দুই প্রধান ছাড়াও এ রকম অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা ভিনরাজ্যের ক্লাবের হয়ে খেলবেন ও আশা করা যায়, বাংলার মান বাড়াবেন। এ রকমই কয়েকজনকে নিয়ে এই বিশেষ প্রতিবেদন, যাঁদের নাম এক লহমায় মনের পর্দায় ভেসে ওঠে বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের এবং যাঁদের ভাল পারফরম্যান্স দেখতেও চান তাঁরা।  

প্রবীর দাস (রাইট ব্যাক, উইঙ্গার, বেঙ্গালুরু এফসি)

Image Courtesy: Bengaluru FC

প্রায় পাঁচ বছর কলকাতার বিভিন্ন ক্লাবে খেলার পরে এ বারই কলকাতার বাইরে পাড়ি দিয়েছেন ২৮ বছর বয়সি এই ডিফেন্ডার ও উইঙ্গার। ২০১৬ থেকে তিনি কলকাতায় ছিলেন। সে বছর মোহনবাগানের হয়ে হিরো আই লিগে খেলেন প্রবীর এবং সেই বছরই জুলাইয়ে এটিকে এফসি-তে যোগ দেন লোনে। বছর শেষে মোহনবাগানে ফিরে যান। ২০১৭-র হিরো আইএসএলের আগে তিনি সই করেন এটিকে-তে। মাঝে গোটা একটা মরশুম পায়ের চোট সারানোর জন্য মাঠের বাইরেই বসে থাকতে হয় তাঁকে। ২০১৯-২০ মরশুমে চোট সারিয়ে ফিরে অসাধারণ খেলেন এটিকে-র হয়ে। সে বার এটিকে-র চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় তাঁর অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরের মরশুমে এটিকে ও মোহনবাগান জুটি বেঁধে নতুন ক্লাব তৈরি হওয়ায় সেই ক্লাবে যোগ দেন প্রবীর। কিন্তু এ বছর নিজের শহর ছেড়ে তিনি গেলেন বেঙ্গালুরু এফসি-তে।

২০১৯-২০-তে তাঁকে যে ফর্মে দেখা গিয়েছিল, পরের মরশুমে অবশ্য তাঁকে সেই ফর্মে আর পাওয়া যায়নি। সে ভাবে তাঁকে কাজেও লাগাননি দলের কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। কিন্তু এ বার বেঙ্গালুরু এফসি-তে ক্রমশ নিজেকে ফিরে পাচ্ছেন সোদপুরের প্রবীর। মরশুমের প্রথম টুর্নামেন্ট ডুরান্ড কাপে তাঁর দল চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। এই টুর্নামেন্টে ছ’টি ম্যাচে ৫১১ মিনিট মাঠে থেকে তিনি দু’টি গোলে অ্যাসিস্ট করেন। বাংলায় অসংখ্য ভক্ত তাঁর। দু’বছর আগে তিনি হয়ে ওঠেন বাংলার ফুটবলারদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় তারকা। এ বারের হিরো আইএসএলে তাই বাংলার ফুটবলপ্রেমীদের নজর অবশ্যই থাকবে তাঁর ওপর। 

হীরা মন্ডল (লেফট ব্যাক, বেঙ্গালুরু এফসি)

Image Courtesy: Bengaluru FC media

গত মরশুমে এসসি ইস্টবেঙ্গলের দলগত পারফরম্যান্স তেমন ভাল না হলেও দলের কয়েকজন ফুটবলার সমর্থকদের মন জয় করে নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে এক নম্বরেই থাকবেন বৈদ্যবাটির হীরা মন্ডল। গত হিরো আইএসএলে লাল হলুদ শিবির যখন একের পর এক ম্যাচ হারছিল, তখন তিনি একা লড়াই করে যান প্রতিপক্ষের দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড ও উইঙ্গারদের সঙ্গে। তাঁর বাধা পেরিয়ে লাল-হলুদের গোল এরিয়ায় ঢোকা বেশ কঠিন ছিল। লিগের শেষে দিকে হীরাকে উইং ব্যাকের ভূমিকাও পালন করতে দেখা গিয়েছিল কয়েকটি ম্যাচে। তাঁর মধ্যে যে মরিয়া ভাব ও দক্ষতা দেখা যায়, তা দেখেই এ বছর বেঙ্গালুরু তাঁর কাছে প্রস্তাব পাঠায় এবং তাতে রাজি হয়ে যান ২৬ বছর বয়সি হীরা।

২০১৮-য় কলকাতার পিয়ারলেস ক্লাবের হয়ে খেলে সবার নজরে পড়েন হীরা। সে বছর ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন তিনি। ২০১৯-এর জানুয়ারিতে ইস্টবেঙ্গল তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার পরে প্রায় ছ’মাস কোনও ক্লাব ছিল না তাঁর। জুলাইয়ে যোগ দেন মহমেডান স্পোর্টিংয়ে। সাদা-কালো জার্সি গায়ে আই লিগ দ্বিতীয় ডিভিশনে খেলেন হীরা। পরের বছর হিরো আই লিগেও খেলেন তিনি। মহমেডানের হয়ে মোট ২৩টি ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০২১-এর সেপ্টেম্বরে এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে তিনি লাল-হলুদ বাহিনীতে যোগ দেন এবং সেই জার্সি গায়েই নিজের সেরাটা মেলে ধরেন। গত মরশুমে এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ১৬টি ম্যাচ খেলেন তিনি। এই মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসি-র হয়ে ডুরান্ড কাপে চারটি ম্যাচে ২৩৭ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। গতবার যে ভাবে লাল-হলুদ শিবিরের রক্ষণ সামলেছিলেন, এ বারও সে ভাবেই বেঙ্গালুরুর রক্ষণে তিনি দুর্ভেদ্য হয়ে উঠতে পারেন কি না, সেটাই আকর্ষণের বিষয়।

রহিম আলি (সেন্টার ফরোয়ার্ড, চেন্নাইন এফসি)

ভারতীয় ফরোয়ার্ডদের মধ্যে অন্যতম উজ্জ্বল এই ফুটবলার ভারতীয় দলের কোচ ইগর স্টিমাচেরও পছন্দের তালিকায় রয়েছেন। কিন্তু গত বছর হিরো আইেসএলের শেষ দিকে চোট পেয়ে যাওয়ায় ভারতীয় দলের হয়ে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে খেলতে পারেননি তিনি। তবে ক্রমশ চোট সারিয়ে নিজের জায়গায় ফিরে আসছেন। ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে (১১২ মিনিটের মাথায়) একটি গোল করেন তিনি। হিরো আইএসএলে তিনটি মরশুমে ৪০টি ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে ২২ বছরের এই ফরোয়ার্ডের। চারটি গোলও করেছেন। গত মরশুমে বেঙ্গালুরু এফসি ও ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে গোল করেন তিনি। ২০২০-২১ মরশুমে এফসি গোয়া ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে গোল পান রহিম।  

যে পজিশনে বিদেশিদের চাহিদাই বেশি, সেই স্ট্রাইকার হিসেবে একজন ভারতীয়ের উত্থান মানেই দেশের ফুটবলের পক্ষে তা সুখবর। কারণ, ভারতীয় দলে ভাল স্ট্রাইকারের অভাব এখনও রয়েছে। তাই রহিম আলিকে নিয়ে ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের অনেক আশা। সম্প্রতি চোট পেয়ে যাওয়ায় তিনি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে খেলতে না পারলেও আগামী বছর এশিয়ান কাপের মূলপর্বে ভারতীয় দলে থাকবেন কি না, তা নির্ভর করবে আসন্ন হিরো আইএসএলে তাঁর পারফরম্যান্সের ওপর। তাই এ বারের লিগ তাঁর ফুটবল কেরিয়ারের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।  

কিয়ান নাসিরি (স্ট্রাইকার, এটিকে মোহনবাগান)

গত হিরো আইএসএলের কলকাতা ডার্বিতে অভিষেকে হ্যাটট্রিকের পর থেকেই তিনি সারা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের নজরে চলে আসেন। সে দিন ফতোরদার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ঐতিহাসিক কলকাতা ডার্বির অন্তিম লগ্নে যে নবজাত তারকার দ্যূতি ছড়িয়ে পড়ে, তার ঔজ্জ্বল্যে আলোকিত হয়ে উঠেছিল সারা দেশের ফুটবল মহল। ৬১ মিনিটের পর মাঠে নেমে ৬৪ মিনিটের মাথায় যে শটে গোল করেন কলকাতার কিয়ান, সেটাই ছিল সেই ম্যাচে তাঁর প্রথম বলে পা ছোঁয়ানো। প্রথম ছোঁয়াতেই বাজিমাত! সেই গোলে দলের হয়ে সমতা আনার পর ম্যাচের একেবারে শেষে চার মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল করে যে কীর্তি স্থাপন করেন, তা ফুটবলপ্রেমীরা মনে রাখবেন বহু দিন। যেমন মনে রেখেছেন বাইচুং ভুটিয়াকে। ১৯৯৭-এর ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের জন্য। ২৫ বছর পরে আর এক ভারতীয় সেই একই কীর্তি স্থাপন করেন এ বছর জানুয়ারিতে।

তখন থেকেই কিয়ানের ওপর সমর্থকদের নজর রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তার পর হিরো আইএসএলে আর একটিও গোল পাননি কিয়ান। গত মাসে ডুরান্ড কাপের প্রথম ম্যাচে রাজস্থান ইউানাইটেডের বিরুদ্ধে প্রায় সাত মাস পরে গোল পান তিনি, যদিও দলকে জেতাতে পারেননি। ভারতীয় নৌসেনা দলের বিরুদ্ধেও গোল পান তিনি। তবে এএফসি কাপের ইন্টার জোনাল সেমিফাইনালে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ছ’মিনিট আগে মাঠে নামার সুযোগ হয় ২১ বছর বয়সি ফরোয়ার্ডের। তাতে আর কতটা নিজেকে মেলে ধরতে পারতেন কিয়ান? গোল করতে না পারলেও কিয়ান কিন্তু প্রতিপক্ষের গোল এরিয়ায় রীতিমতো সন্ত্রাস হয়ে ওঠেন প্রায়ই। তাঁর গোলমুখী ক্রসগুলি প্রায়ই নিখুঁত হয়ে ওঠে। বল নিয়ে বিপক্ষের বক্সের ঢোকার সময় তাঁর ক্ষিপ্রতা বিপক্ষের ডিফেন্ডারদের হিমশিম খাইয়ে দেয়। তাই এ বারের আইএসএলেও তাঁকে নিয়ে অনেক আশা সমর্থকদের। 

শৌভিক চক্রবর্তী (রাইট ব্যাক, ইস্টবেঙ্গল এফসি)

গত মরশুমে হায়দরাবাদ এফসি-র হিরো আইএসএল খেতাব জয়ের নেপথ্যে যাঁর গুরুত্বপূর্ণ অবদান ছিল, সেই ডিফেন্ডার ও মিডফিল্ডার শৌভিক চক্রবর্তী এ বার যোগ দিয়েছেন নিজের শহরের ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এফসি-তে। কলকাতার ক্লাবে শেষ খেলেছেন ২০১৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত। তখন মোহনবাগানে ছিলেন তিনি। ২০১৭-র হিরো আইএসএলের আগে যোগ দেন জামশেদপুরে। তারপরে মুম্বই সিটি এফসি, হায়দরাবাদ এফসি হয়ে এ বার ফিরে এলেন কলকাতায়। ডুরান্ড কাপে চারটি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। তবে কোনও ম্যাচেই পুরো ৯০ মিনিট তাঁকে মাঠে রাখেননি কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন। ডার্বিতে তিনি দলের অধিনায়ক থাকা সত্ত্বেও ৬২ মিনিটের বেশি খেলেননি। সম্ভবত সেই ফিটনেসের জায়গায় নেই শৌভিক। তাই কোচের এই সিদ্ধান্ত।

গত মরশুমে ১৬টি ম্যাচ খেলে গোল না পেলেও দু’টি গোলে সাহায্য করেন শৌভিক। হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের আটটি মরশুমে ১০৪টি ম্যাচ খেলা হয়ে গিয়েছে তাঁর। বরাহনগরের এক ডাক্তার পরিবার থেকে যে এমন একজন ফুটবলার উঠে আসতে পারেন, তা কি কেউ কখনও ভাবতে পেরেছে? সেই পরিবারের ছেলে শৌভিক চক্রবর্তী কিশোরবেলা থেকেই ঠিক করে নিয়েছিলেন ফুটবল খেলেই বড় হবেন।

তাই ১৪ বছর বয়স থেকে ফুটবলকেই নিজের পেশা হিসেবে নিয়ে নেন। আশ্চর্যজনক ভাবে পরিবারের সদস্যরা শৌভিককে তাঁর স্বপ্ন পূরণ করতে কখনও বাধা দেননি। মিডফিল্ডার হিসেবেই ফুটবল জীবন শুরু করেছিলেন শৌভিক। কিন্তু হিরো আইএসএলে যোগ দেওয়ার পরে তিনি যে ক্লাবগুলির হয়ে খেলেন, তাদের বেশির ভাগ কোচেরা তাঁকে ডিফেন্ডার হিসেবে খেলান। নিজেকে সেই জায়গায় মানিয়ে নিতে পারলেও পছন্দের জায়গায় খেলতে না পারার আফসোস রয়েই গিয়েছিল। হায়দরাবাদ এফসি-তে যোগ দেওয়ার পরে সেই আফসোস মিটে যায়। মাঠেও তাই অনেক ভাল পারফরম্যান্স দিতে পেরেছেন তিনি।

ভারতীয় ফুটবলের এমন কোনও বড় টুর্নামেন্টের খেতাব নেই, যা অভিজ্ঞ শৌভিকের ট্রফির আলমারিতে শোভা পায় না। হিরো আইএসএল, হিরো আই লিগ থেকে শুরু করে ডুরান্ড কাপ, ফেডারেশন কাপ সবেতেই সাফল্য পেয়েছে তাঁর দল, উঠেছেন বিজয়ীর মঞ্চে।  এ বার লাল-হলুদ জার্সি গায়ে শুধু এগিয়ে যাওয়ার পালা তাঁর।

ঋত্বিক দাস (মিডফিল্ডার, জামশেদপুর এফসি)

তাঁর গোলেই জামশেদপুর এফসি গত মরশুমে লিগসেরার খেতাব জিতেছিল এটিকে মোহনবাগানকে ১-০-য় হারিয়ে। গতমরশুমে লিগের শেষ ম্যাচে ৫৬ মিনিটের মাথায় গ্রেগ স্টুয়ার্টের পাসে বিপক্ষের পেনাল্টি বক্সের সামনে থেকে সোজা গোলে যে শট নিয়েছিলেন ঋত্বিক, তা আটকাতে পারেননি সবুজ-মেরুন বাহিনীর গোলকিপার অমরিন্দর সিং।  সেই গোলেই জামশেদপুর লিগশিল্ড জয় নিশ্চিত করে।

এই মোহনবাগান ক্লাবের ফুটবল স্কুলেই এক সময়ে পেশাদার ফুটবলের তালিম নিয়েছিলেন ঋত্বিক। সেই ক্লাবের বিরুদ্ধেই গোল করে জামশেদপুরকে লিগ শিল্ড এনে দেওয়ার অনুভূতিটা যে খুব স্পেশ্যাল ছিল, তা সে দিন জানিয়েছিলেন বার্নপুরের ঋত্বিক।

কলকাতার ফুটবলে ঋত্বিক অভিযান শুরু করেন কাস্টমসের হয়ে কলকাতা লিগের প্রথম ডিভিশনে খেলে। কালীঘাট এমএস-এর হয়ে তিনি প্রিমিয়ার ডিভিশন গ্রুপ বি’-তে খেলেন। সেখান থেকেই রিয়াল কাশ্মীর তাঁকে ডেকে নেয় হিরো আই লিগে খেলার জন্য। ২০১৮-র ডিসেম্বরে আই লিগে অভিষেক হয় তাঁর। ২০২০-তে তিনি কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দেন, কিন্তু চারটির বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি। তাই গত মরশুমের আগের জামশেদপুরে যোগ দেন ও তাঁকে নিয়মিত খেলার সুযোগ দেন কোচ আওয়েন কোইল। তার ফলও তিনি পান লিগের শেষ পর্যায়ে। লিগের শেষ ছটি ম্যাচে চারটি গোল করেন ঋত্বিক। একটি করানও। তবে প্লে অফে কোনও গোল পাননি।

গতবার যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই এ বার শুরু করবেন ঋত্বিক। তাঁর ভক্তরা এখন সেই দিকেই তাকিয়ে। আওয়েন কোইল তাঁর তুরূপের তাসকে এ বার কী ভাবে ব্যবহার করেন, সেটাই দেখার।