সেমিফাইনালের প্রথম লেগে  যে মোটেই ভাল খেলেনি তাঁর দল, তা স্বীকার করেই নিলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হেড কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। মঙ্গলবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে চলতি আইএসএলের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে লিগশিল্ডজয়ী মোহনবাগানকে ২-১-এ হারায় ওডিশা এফসি। তিন মিনিটের মাথায় গোল করে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও এ দিন জয়ের হাসি মুখে নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি সবুজ-মেরুন বাহিনী

ফাইনালে যাওয়ার রাস্তা অবশ্য পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়নি তাদের। দ্বিতীয় লেগে যদি দু’গোলের ব্যবধানে জিততে পারে তারা, তা হলে ফাইনালে উঠতে পারে লিগশিল্ডজয়ীরা। এক গোলের ব্যবধানে জিতলে টাইব্রেকারে খেলার নিষ্পত্তি হবে। তবে ম্যাচ ড্র হলে বা ওডিশা ফের জিতলে তারাই ফাইনালে উঠবে। তাই মোহনবাগানকে এই ম্যাচে জিততেই হবে। এ দিন ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে এসে হাবাস প্রতিশ্রুতি দেন, সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মোহনবাগানকে অন্য রূপে দেখা যাবে।    

ম্যাচের পর এ দিন সাংবাদিকদের হাবাস বলেন, “আমরা ভাল খেলিনি। অনেক ভুল করেছে দলের ছেলেরা। এত ভুল করলে দল হিসেবে ভাল খেলা কঠিন হয়ে পড়ে। লিগশিল্ড জয়ের পর সম্ভবত আমাদের একটু গা ছাড়া ভাব এসে গিয়েছিল আজ। এটা স্বাভাবিক। সেমিফাইনালে জিততে গেল একশো শতাংশ দিতেই হবে। তবে আমার মনে হয় কলকাতায় এই ফল বদলানোর ক্ষমতা আমাদের আছে”। 

মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে লিগের শেষ ম্যাচে যে রকম অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছিল সবুজ-মেরুন বাহিনী, এ দিন তার ধারেকাছেও ছিল তাদের পারফরম্যান্স। দলের নির্ভরযোগ্য সদস্যরাও এ দিন ছন্দে ছিলেন না। সে কথা স্বীকার করে হাবাস বলেন, “দলের কোনও ফুটবলারই সে সাদিকু বলুন, কাউকো বলুন আমাদের কোনও খেলোয়াড়ই আজ তাদের সেরাটা দিতে পারেনি। যার জেরে এই ফল হয়েছে। পরের ম্যাচে সম্পুর্ণ অন্য মোহনবাগানকে দেখা যাবে। এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আমি”। 

ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়, মোহনবাগানের প্রাক্তন তারকা রয় কৃষ্ণা কার্যত একাই এ দিন লন্ডভন্ড করে দেন প্রতিপক্ষের রক্ষণ। তাঁর সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সবুজ-মেরুন কোচ। শুধু বলেন, “রয় এখন আর মোহনবাগানের খেলোয়াড় নয়, ও এখন ওডিশার খেলোয়াড়। তাই ওর  সম্পর্কে আমার কিছু বলার নেই। ও আজ ভাল খেলেছে, এটুকুই বলব শুধু”। 

এ দিন দ্বিতীয়ার্ধে দ্বিতীয় হলুদ তথা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় আলবানিয়ার ফরোয়ার্ড আরমান্দো সাদিকুকে। এই প্রসঙ্গ উঠলে কোচ বলেন, “আমাদের দলের অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের কঠিন সময়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখতে হবে। কারণ, দলের জুনিয়ররা ওদের থেকেই শেখে। তবে খেলায় যদি বারবার বিরক্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলে মেজাজ ধরে রাখাটাও কঠিন হয়। তবে আমাদের এখন পরের ম্যাচে ফোকাস করতে হবে এবং ম্যাচটা জিততেই হবে”। 

রক্ষণের ব্যর্থতার কথাও স্বীকার করে নিয়েছেন হাবাস। বলেন, “আজ আমাদের রক্ষণে অনেক ভুল হয়েছে। সঙ্ঘবদ্ধতা ছিল না। একেক জনের মধ্যে অতিরিক্ত দূরত্ব ছিল। দ্বিতীয় গোলটার ক্ষেত্রে যে ভুলের মাশুল দিতে হয়েছে। ওই সময়ে হেক্টরের একজন সেন্ট্রাল মিডফিল্ডারের সাহায্যের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু ওর ২৫ মিটারের মধ্যে কোনও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার ছিল না। থাকলে হয়তো গোলটা হত না”। 

ম্যাচের আগের দিন বলেছিলেন, সাহাল আব্দুল সামাদ সুস্থ আছেন, মঙ্গলবার খেলতে পারেন। তবে এ দিন হাবাস বলেন, “ও সুস্থ আছে ঠিকই, কিন্তু ও ম্যাচ খেলার মতো অবস্থায় পুরোপুরি নেই। আমরা ফাইনালে উঠলে হয়তো ও ২৫-৩০ মিনিট খেলতে পারবে। তার আগে ওকে মাঠে নামালে ঝুঁকি নেওয়া হয়ে যাবে”।