রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগই যে ভারতের নবীন ফুটবল প্রজন্মের সবচেয়ে বড় মঞ্চ, তা স্বীকার করে নিয়ে এই নতুন উদ্যোগের ভূয়ষী প্রশংসা করেছেন সুনীল ছেত্রী। এর ফলে যে দেশের ফুটবলের পরবর্তী স্তরে পৌঁছতে সুবিধা হবে, তা নিয়ে কোনও দ্বিধা নেই ভারত অধিনায়কের।

দেশের কিশোর, তরুণ উঠতি ফুটবলারদের জন্য এ বছর থেকে শুরু হওয়া এই লিগ প্রসঙ্গে ছেত্রী কলকাতায় বলেন, “দেশের কিশোর-তরুণ ফুটবলাররা অনেকেই নিজেদের প্রতিভা মেলে ধরার সুযোগ পায় না। তাদের মধ্যে অনেকে একটা সুযোগ পেলেই তাকে ভরপুর কাজে লাগিয়ে প্রতিভার প্রমাণ দেয়। রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগ তাদের জন্য একেবারে আদর্শ জায়গা। অনেকেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দলে থাকলেও সুযোগ পায় না। তাদের জন্যই এটা একেবারে আদর্শ মঞ্চ”।

হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অংশগ্রহনকারী সাতটি ক্লাব অন্য এই প্রতিযোগিতায় একে অপরের মুখোমুখি হয় ১৫ এপ্রিল থেকে। গোয়ায় এই লিগে তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ইয়ং চ্যাম্পস্ বা RFYC-ও। লিগের প্রথম মরশুমে সেরার শিরোপা জিতে নিয়েছে ছেত্রীরই দল বেঙ্গালুরু এফসি। বৃহস্পতিবার বিকেলে লিগের শেষ ম্যাচে রানার্স আপ কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র করে চ্যাম্পিয়নের খেতাব জিতে নেয় তারা।

এই খেতাবের সুবাদে ইংল্যান্ডে প্রিমিয়ার লিগ আয়োজিত নেক্সট জেন কাপে অংশগ্রহণ করবে। তাদের সঙ্গে এই লিগের রানার্স আপ কেরালা ব্লাস্টার্সও ইংল্যান্ডে এই টুর্নামেন্টে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। প্রিমিয়ার লিগে যে দলগুলি দাপিয়ে বেড়ায়, তাদের অ্যাকাডেমি দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবেন ভারতের এই উঠতি ফুটবলাররা। দেশে ফিরে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মাঠে এই অমূল্য অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে তাঁদের।

২০০১-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে যাঁদের জন্ম হয়েছে, সেই ফুটবলাররা এই লিগে অংশ নেন। তবে প্রতি দলে পাঁচজন করে এমন ফুটবলারকেও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাঁদের জন্ম ১৯৯৯-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে। প্রথম এগারোয় এ রকম তিনজন ফুটবলার রাখার নিয়ম ছিল। কোনও দলে কোনও বিদেশি ফুটবলারকে রাখা হয়নি।

হিরো আইএসএল চলাকালীন প্রতি ক্লাবকে তাদের যুব ফুটবলের উন্নতির জন্য যথেষ্ট সাহায্য করে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন। এই উদ্যোগ ভারতকে আগামী কয়েক বছরে ফুটবলের অন্যতম সেরা শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পিছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সফল হলে ভারতীয় ফুটবল এমন এক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবে, যেখানে এর আগে কখনও পৌঁছনো যায়নি।    

এই লিগের উদ্যোগ নেওয়ার জন্য রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন জানিয়ে সুনীল ছেত্রী বলেন, “রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশনকে অভিনন্দন এমন একটা প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়ার জন্য অনেক অভিনন্দন”। হিরো আইএসএলে রানার্স আপ কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র কোচ ইভান ভুকোমানোভিচও এই ডেভলপমেন্ট লিগের প্রশংসা করে বলেন, “যুব ফুটবলের উন্নতি করাই যে সঠিক রাস্তা, তা আমি বরাবরই বলে এসেছি। এর ফলে ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি হবে। বিশ্ব ফুটবলের মানচিত্রে ভারতকে উজ্জ্বল হয়ে উঠতে সাহায্য করবে এই লিগ। আমাদের কেরালা ব্লাস্টার্সের ছেলেদের এই লিগে ভাল খেলতে দেখে আমি গর্বিত। আগামী মরশুমে এদের মধ্যে থেকে কয়েকজনকে বেছে নিয়ে আমার দলে রাখার চেষ্টা করব”।   

বেঙ্গালুরুর স্ট্রাইকার রাহুল রাজু সাত গোল করে গোল্ডেন বুট খেতাব পান। লিগের সেরার ফুটবলারের খেতাব গোল্ডেন বল তুলে দেওয়া হয়েছে মিডফিল্ডার বেকে ওরামকে। ছ’টি ক্লিন শিট রেখে সেরা গোলকিপারের খেতাব গোল্ডেন গ্লাভ পেয়েছেন কেরালার গোলকিপার শচীন সুরেশ।