এই প্রথম কলকাতা ডার্বিতে মাঠে দল নামাবেন তিনি। আগামী ২৭ নভেম্বর সেই ম্যাচ। যদিও তা হবে কলকাতার বাইরে, গোয়ায়। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের উষ্ণতা অনুভব করবেন ভরপুর। এসসি ইস্টবেঙ্গলের নবনিযুক্ত স্প্যানিশ কোচ হোসে মানুয়েল ‘মানোলো’ ডিয়াজ সেই ম্যাচের মানসিক প্রস্তুতি নিচ্ছেন এখন থেকেই। সোমবার হিরো আইএসএলের প্রথম লেগের সূচী প্রকাশিত হওয়ার পরেই শুরু করে দিলেন ডার্বি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা।

আসন্ন হিরো আইএসএল ৮-এ দ্বিতীয় রাউন্ডেই একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে বাংলার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাব। অর্থাৎ দুই দলের কাছেই এটি হতে চলেছে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ। গতবার এসসি ইস্টবেঙ্গল তাদের হিরো আইএসএল অভিষেকে ডার্বির দুই লেগেই এটিকে মোহনবাগানের কাছে হেরে যায়। প্রথম লেগে তারা হারে ০-২-এ ও দ্বিতীয় লেগে ১-৩-এ। লিভারপুলের প্রাক্তন তারকা ফরোয়ার্ড রবি ফাউলারের তত্ত্বাবধানে ২০টির মধ্যে তিনটি ম্যাচ জিতে লিগ তালিকার ন’নম্বরে থেকে শেষ করে লাল-হলুদ বাহিনী।

স্বাভাবিক ভাবেই এ বার আর সেই একই রকম ফল চান না ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের লক্ষাধিক সমর্থক। হিরো আইএসএলে স্প্যানিশ কোচেদের রমরমা দেখে এ বার একজন স্প্যানিশ কোচকেই নিয়োগ করেছে ক্লাব, যিনি রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বহু বছর ধরে। সেই মানোলো ডিয়াজ এ বারের ডার্বি নিয়ে বলেছেন, “আমি জানি এখন থেকেই ডার্বি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। আমাদের দ্বিতীয় ম্যাচ এটি। আমাদের হাতে যদিও প্রস্তুতির জন্য সময় বেশি নেই, তবে সমর্থকদের আবেগকে শ্রদ্ধা করি। তাদের জন্য বলি, আমরা ডার্বিতে তৈরি হয়েই নামব”।      

নভেম্বর-ডিসেম্বরে ১৫ দিনের মধ্যে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে কলকাতা ডার্বি-সহ পাঁচটি ম্যাচ খেলতে হবে। প্রথম লেগের শেষে বেঙ্গালুরু এফসি ও মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে তাদের পরপর দু’টি ম্যাচ খেলতে হবে চার দিনের মধ্যে। কোভিড পরিস্থিতিতে গত বারের মতো একই শহরে হিরো আইএসএলের সব ম্যাচ হওয়ায় প্রতি দলের ক্ষেত্রেই এ রকম ঠাসা ক্রীড়াসূচী রয়েছে। এটিকে মোহনবাগানকেও ডার্বি ও তার পরের তিনটি ম্যাচ খেলতে হবে ১৪ দিনের মধ্যে।

এই ঠাসা সূচী নিয়ে এসসি ইস্টবেঙ্গলের নতুন কোচের মন্তব্য, “ঠাসা সূচী করা হয়েছে। ঘন ঘন ম্যাচ খেলতে হবে আমাদের। জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে নামার আগেই নিজেদের তৈরি করে নিতে হবে”। গত বার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ভাল ফল করেছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ম্যাচে ড্র করার পরে দ্বিতীয় লেগে জয় পায় তারা।    

২০০২ থেকে ২০০৬ রিয়াল মাদ্রিদের যুব দলের দায়িত্ব সামলানোর পরে ফের ২০০৯ থেকে তাদের দ্বিতীয় রিজার্ভ দলের দায়িত্ব নেন মানোলো। ২০১৩-য় রিয়ালের প্রথম রিজার্ভ দলের দায়িত্ব পান তিনি। এই দলটি স্প্যানিশ প্রিমিয়ার ডিভিশনের গ্রুপ ২-এ খেলে। ২০১৭-য় তিনি রিয়াল মাদ্রিদের ইউথ সিস্টেম কোঅর্ডিনেটরের দায়িত্ব নেন এবং পরের বছর জুনিয়রদের এক নম্বর দলের কোচও হন। এ বছর ফেব্রুয়ারিতেই স্প্যানিশ দ্বিতীয় ডিভিশনের আর এক ক্লাব হারকিউলিসে যোগ দেন ও সাত মাস পরেই ভারতে আসার ডাক পান। মানোলোর সাফল্যের শতকরা হার ৪১.৭৭। তবে ডার্বিতে দলকে কতটা সাফল্য এনে দিতে পারেন সেটাই দেখার।