এটিকে-র সঙ্গে তাঁর সম্পর্ককে ‘প্রেমকাহিনী’ আখ্যা দিলেন তাদের কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। হিরো আইএসএলে যে তিন মরশুমে (এ বার নিয়ে) তিনি এটিকে-র কোচ হয়েছেন, তিনবারই দলকে প্লে-অফে তুলতে পারার কৃতিত্ব প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শনিবার রাতে সাংবাদিকদের সামনে এই মন্তব্য করেন স্প্যানিশ কোচ।

তিনি বলেন, “এটিকে-র সঙ্গে আমার  সম্পর্কটা অনেকটা প্রেমকাহিনীর মতো। আমার কোচিংয়ে তিন মরশুমে খেলেছে এটিকে, তিন বারই প্লে অফে পৌঁছেছে তারা। এটা আমার ও ক্লাবের সম্পর্কের পক্ষে খুবই ভাল”। প্রথম আইএসএলে এটিকে-কে চ্যাম্পিয়নের খেতাব এনে দিয়েছিলেন হাবাস। পরের বার, অর্থাৎ ২০১৫-য় তারা প্লে অফে উঠে চেন্নাইনের কাছে মোট ৪-২ গোলের ব্যবধানে হেরে ছিটকে যায়। এ বারও তারা প্লে অফে উঠে পড়ল শনিবার ওডিশা এফসি-কে ৩-১ গোলে হারিয়ে। সেই কারণেই এমন মন্তব্য করেন হাবাস।

হিরো আইএসএল ৬-এর সেমিফাইনালে তাদের জায়গা পাকা হলেও এটিকে এফসি শীর্ষে থেকে লিগ শেষ করে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে কি না, সেটা কিন্তু এখনও নিশ্চিত হয়নি। তা নিশ্চিত করতে গেলে লিগের শেষ দুই ম্যাচেও জিততে হবে এটিকে এফসি-কে। এই পথটা কম কঠিন নয় বলে মনে করেন হাবাস। বলেন, “এখন আমাদের ভুলে যেতে হবে, আমরা বড় ক্লাব। বরং আমাদের এখন বড় ক্লাব হয়ে ওঠার দিকে এগোতে হবে। এখন আমাদের কাছে পরের ম্যাচ জেতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, চেন্নাই খুবই কঠিন প্রতিপক্ষ। এর বেশি আমরা এখন কিছু ভাবতে পারছি না, ভাবতে চাইও না”।

তবে সেমিফাইনালের লড়াই যে বেশ কঠিন হবে, তা এখনই বুঝতে পারছেন হাবাস। বলেন, “সেমিফাইনাল কখনও সহজ হতে পারে না। এফসি গোয়া, বেঙ্গালুরু এফসি, চেন্নাইন এফসি বা মুম্বই এফসি-র মতো দল আমাদের সামনে পড়বে হয়তো। এরা কেউই সহজ প্রতিদ্বন্দী নয়। সামনে অনেক লড়াই অপেক্ষা করে আছে আমাদের জন্য”।

সেমিফাইনালে উঠে গেলেও এক নম্বর জায়গাটা ধরে রাখার জন্য এখন এটিকে এফসি-কে শেষ দুই ম্যাচে জিততেই হবে। কারণ, সমসংখ্যক ম্যাচে সমান পয়েন্ট পেয়ে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে এফসি গোয়া। এটিকে-র শেষ দুই ম্যাচ দুই কঠিন দল চেন্নাইন ও বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে। কিন্তু এফসি গোয়ার একটি ম্যাচ চার নম্বরে থাকা মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে, অন্যটি সাত নম্বরে থাকা জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে। তাই, শেষ দুই ম্যাচের মধ্যে একটি ম্যাচে হার মানেই এক নম্বর জায়গাটা ধরে রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়বে এটিকে-র পক্ষে। তাই এ বার প্রতিটি ম্যাচই এটিকে-র কাছে নক আউট পর্বের ম্যাচের মতো। জয় ছাড়া কোনও লক্ষ্য নেই।

এই অবস্থায় গোলমেশিন রয় কৃষ্ণার গোলের মধ্যে ফিরে আসাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এ দিন মাত্র ১৮ মিনিটের মধ্যে তাঁর করা হ্যাটট্রিকেই জয় পায় এটিকে এফসি। দলের সবচেয়ে সফল স্কোরারকে নিয়ে হাবাস বেশি কিছু বলতে না চাইলেও শেষে বলেন, “রয় কৃষ্ণা দুর্দান্ত। বহু ম্যাচে ও আমাদের জিতিয়েছে। ও আমাদের খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। ওর গোল করার দক্ষতা অনবদ্য। তবে শুধু রয় না, দলের প্রত্যেকটা ছেলে দারুণ খেলছে। প্রত্যেকের প্রশংসা করতে চাই আমি। প্রত্যেকের কমিটমেন্ট অসামান্য”। 

শনিবার দলের পারফরম্যান্স নিয়ে কোচ বলেন, “আমরা আজ ম্যাচের বেশিরভাগটাই নিয়ন্ত্রণ করেছি। কোন সময় কী হবে, সেটাও আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। এ ভাবে জেতাটা তাই অনেক বেশি কৃতিত্বের”। তবে তিন গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থায় এক গোল হজম করাটা তাঁর একেবারেই পছন্দ হয়নি। বলেন, “৩-০ হয়ে যাওয়ার পর হয়তো একটু গা ছাড়া মনোভাব দেখা দিয়েছিল ছেলেদের মধ্যে, যেটা একেবারেই ভাল নয়। সারা ম্যাচে যেমন নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতেই ছিল, তেমনই শেষ মুহূর্ত পর্যন্তও ম্যাচের রাশ নিজেদের হাতেই রাখা উচিত ছিল”।