এসসি ইস্টবেঙ্গলে থেকে গেলেন ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড়। আসন্ন মরশুমেও তিনি লাল-হলুদ জার্সি গায়েই মাঠে নামবেন। বাংলার সাইড ব্যাক হীরা মন্ডল ও গোয়ার ডিফেন্ডার জয়নার লরেন্সোকেও এই মরশুমে পেতে চলেছে কলকাতার ক্লাবটি। শুক্রবার ক্লাবের পক্ষ থেকে এই তিন খেলোয়াড়ের সইয়ের খবর ঘোষণা করা হল।

রাজু গায়কোয়াড় গত বছর জানুয়ারির দলবদলে এসসি ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন। মুম্বইয়ের এই সেন্টার ব্যাক গত মরশুমে ছিলেন কেরালা ব্লাস্টার্সে। এ ছাড়াও কলকাতার দুই প্রধান মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের হয়ে হিরো আই লিগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। ২০১১ থেকে ২০১৫-র মধ্যে তিনি লাল-হলুদ ব্রিগেডে ছিলেন। হিরো আইএসএলে তিনি খেলেছেন এফসি গোয়া, জামশেদপুর এফসি ও মুম্বই সিটি এফসি-র জার্সি গায়ে।

তিনি ও অঙ্কিত মুখার্জি একসঙ্গে যোগ দেওয়ার পরে দলের ডিফেন্স কিছুটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে। গত মরশুমে সাতটি ম্যাচে ২৯টি ক্লিয়ারেন্স ছিল তাঁর। ৬টি ব্লক, ১৬টি ইন্টারসেপশন ও ১২টি ট্যাকল করেন। একটি ম্যাচে লাল কার্ডও দেখতে হয় রাজুকে। টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে উঠে আসা এই ডিফেন্ডার আগেও লাল-হলুদ জার্সিতে খেলেছেন। ভারতীয় জার্সি গায়ে ৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন রাজু। দীর্ঘ থ্রোয়ের জন্য সুনাম রয়েছে তাঁর।

লাল-হলুদ শিবিরে আরও এক বছর থাকার সুযোগ পেয়ে রাজু বলেন, “কত বছর ইস্টবেঙ্গলে কাটিয়েছি, সেটা বড় কথা নয়। লাল-হলুদ জার্সি গায়ে চাপালেই দারুন অনুভূতি হয়। এই ক্লাবের সঙ্গে আরও একটা মরশুম কাটানোর অপেক্ষায় রয়েছি। কোচ রবি ফাউলারের সঙ্গে আরও এক বছর কাজ করতে পারব জেনে ভাল লাগছে”।

২৫ বছর বয়সি হীরা মন্ডল গত হিরো আই লিগে মহমেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে ১৪টি ম্যাচ খেলেন। ডিফেন্ডার হলেও দু’টি গোল করেন ও একটি গোলে সাহায্যও করেন। তার আগের মরশুমেও তিনি কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের হয়ে দ্বিতীয় ডিভিশন আই লিগে নেমে আটটি ম্যাচ খেলেন। তাদের হয়ে ডুরান্ড কাপ ও আইএফএ শিল্ডেও খেলেছেন।

২০১৮-১৯ মরশুমে তিনি লাল-হলুদ ব্রিগেডে যোগ দিয়েছিলেন। সে বার রিজার্ভ দলের সঙ্গে সিকিম গভর্নর্স গোল্ড কাপে খেলতে যান। তার আগে তিন বছর পোর্ট ট্রাস্ট, রেনবো, টালিগঞ্জ অগ্রগামী ও পিয়ারলেসের হয়ে স্থানীয় লিগেও খেলেন হীরা। বাংলার হয়ে সন্তোষ ট্রফিও খেলেছেন।

এসসি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে এ বার দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগ হিরো আইএসএলে খেলার সুযোগ পাওয়ায় রোমাঞ্চিত হীরা বলেছেন, লাল-হলুদ জার্সি পরে মাঠে নামা যে কোনও ফুটবলারের স্বপ্ন। আর কলকাতার ছেলেদের কাছে এটা তো আরও বড় ব্যাপার। যখন প্রস্তাবটা পেলাম, তখন মনে হচ্ছিল যেন স্বপ্ন দেখছি

২৯ বছর বয়সি লরেন্সো হিরো আই লিগে খেলা শুরু করেন ২০১১-য় স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ার হয়ে। ২০১৪-য় এশিয়ান গেমসের জন্য অনূর্ধ্ব ২৩ ভারতীয় দলে ডাক পান তিনি। ২০১৭-১৮-য় বেঙ্গালুরু এফসি-র হয়ে হিরো আইএসএলে আত্মপ্রকাশ তাঁর। পরের মরশুমে তিনি যোগ দেন মুম্বই সিটি এফসি-তে।

সে বছর মুম্বইয়ের দলের সেমিফাইনালে ওঠার পথে দশটি ম্যাচ খেলেন তিনি। ২০১৯-২০ মরশুমে লরেন্সো যোগ দেন জামশেদপুর এফসি-তে এবং সে বারেও দশটি ম্যাচ খেলেন। একটি গোলে অ্যাসিস্টও করেন। গত বার জামশেদপুরের হয়ে পাঁচটি ম্যাচে নেমেছিলেন এই দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগে মোট ২৫টি ম্যাচ খেলা এই ডিফেন্ডার। তাঁর পাসিং অ্যাকিউরেসি ৭৭.১৯ শতাংশ।

এসসি ইস্টবেঙ্গলে সই করে অন্যদের মতো তিনিও খুশি। বলেন, এসসি ইস্টবেঙ্গলের মতো বড় ক্লাবের হয়ে খেলা সব সময়ই বড় ব্যাপার। এখানে সমর্থকেরা খুবই আবেগপ্রবণ এবং এই ব্যাপারটাই খেলাটার আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দেয়। আমার কাছে এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ আর এ রকমই চাইছিলাম আমি