জামশেদপুর এফসি-কে হারানোর পর এ বার সবুজ-মেরুন বাহিনীর লক্ষ্য ডার্বি-জয়। শুক্রবারের ম্যাচের মতো সেই ম্যাচের আগেও নিখুঁত প্রস্তুতি নিতে চান মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার দিমিত্রিয়স পেট্রাটস।

শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে তিন গোলে জেতা ম্যাচের সাত মিনিটের মধ্যেই গোল করে প্রথমে দলকে এগিয়ে দেন পেট্রাটস। এই নিয়ে চলতি লিগে সাত গোল হয়ে গেল তাঁর। এর পরে দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান তাঁর স্বদেশীয় বিশ্বকাপার জেসন কামিংস এবং ম্যাচের শেষ দিকে তৃতীয় গোল করেন আলবানিয়ার ইউরো কাপার আরমান্দো সাদিকু, যিনি তার কিছুক্ষণ আগেই পরিবর্ত বেঞ্চ থেকে মাঠে নেমেছিলেন।

প্রথমার্ধে দুই দল কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করলেও দ্বিতীয়ার্ধে কলকাতার দল দ্বিতীয় গোল করার পরই খেলা থেকে কার্যত হারিয়ে যায় জামশেদপুর এফসি। এই জয়ের ফলে লিগ টেবলের দু’নম্বরে উঠে আসে মোহনবাগান। এ বার তাদের লক্ষ্য পরের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে এক নম্বর জায়গাটা দখল করা।    

এই দাপুটে জয় নিয়ে দলের অন্যতম সেরা তারকা দিমিত্রিয়স পেট্রাটস indiansuperleague.com কে বলেন,  “আমরা ভাল খেলেছি, তাই গোল পেয়েছি। শুরু থেকেই আমরা তৈরি ছিলাম। জামশেদপুরের বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে প্রস্তুতির জন্য কয়েক দিন সময় পেয়েছিলাম। এই ম্যাচে সবাই ভাল পারফরম্যান্স দেখিয়েছে”।

দলের তিন অ্যাটাকারই এক ম্যাচে গোল পাওয়ায় খুশি পেট্রটস। বলেন, “আক্রমণের তিন খেলোয়াড়ই গোল পেয়েছে, এটা দারুন ব্যাপার। কে আগে গোল করেছে বা কে পরে করেছে, সেটা বড় কথা নয়। যে কোনও গোলই মূল্যবান। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল, এই তিনটে গোল আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে”।

জামশেদপুরের মাঠে শুক্রবার সেরা ফর্মে ছিলেন দলের অন্যতম সেরা উইঙ্গার মনবীর সিং। প্রথম দু’টি গোলে তিনি অ্যাসিস্ট করেন। তৃতীয় গোলটিও হয় তাঁর পরোক্ষ মদতে। গত ম্যাচেও দু’টি গোলে অ্যাসিস্ট করেছিলেন তিনি। ফলে চলতি লিগে অ্যাসিস্টের তালিকায় সবার ওপরে চলে গেলেন মনবীর। স্বাভাবিক ভাবেই ম্যাচের সেরার খেতাবও জিতে নেন তিনি।

মনবীর সম্পর্কে বলতে গিয়ে উচ্ছ্বসিত পেট্রাটস মন্তব্য করেন, “মনবীর সত্যিই দারুন খেলেছে। দুটো গোলে অ্যাসিস্ট করেছে ও। কিন্তু ওর দুর্ভাগ্য যে একটাও গোল করতে পারেনি। তবে শুধু মনবীর নয়, সবাই ভাল খেলেছে এই ম্যাচে। তাই সব দিক থেকেই ভাল হয়েছে আমাদের”।

আর এক সতীর্থ সম্পর্কেও যথেষ্ট প্রশংসা শোনা যায় তাঁর গলায়, তিনি জনি কাউকো। ফিনল্যান্ডের এই অভিজ্ঞ মিডফিল্ডারকে নিয়ে পেট্রাটস বলেন, “এর আগেও এই লিগে খেলে গিয়েছে জনি। তাই ও কত ভাল খেলোয়াড়, তা আমরা জানি। ও গ্রেট প্লেয়ার। তাই ওকে দলে পাওয়াটা আমাদের পক্ষে খুবই ভাল খবর”।

সপ্তাহ খানেক পরেই হয়তো কলকাতা ডার্বি। গত মাসে ডার্বিতে ২-২ হওয়ায় হতাশ হয়েছিলেন। এ বার পেট্রাটসরা চান একটা ফয়সালা হোক এই ম্যাচের। গত ডার্বির অন্যতম গোলদাতা বলেন, “ডার্বি সব সময়ই খেলতে ভাল লাগে। প্রচুর সমর্থক স্টেডিয়ামে আসে, আমাদের পক্ষে যা খুবই ভাল। এখন আমাদের ফের নিজেদের তরতাজা করে তুলতে হবে এবং ডার্বির প্রস্তুতিতে মনোনিবেশ করতে হবে। ওই ম্যাচ থেকেও তিন পয়েন্ট পেতে হবে আমাদের”।     

শুক্রবার ম্যাচের পর অবশ্য ডার্বি নিয়ে বিশেষ আগ্রহ দেখাননি দলের কোচ আন্তোনিও হাবাস। তিনি বলেন, “এখন পর্যন্ত পরের ম্যাচ নিয়ে ভাবার সময় পাইনি। ডার্বিতে অন্য ম্যাচ, অন্য প্রতিপক্ষ। আমরা এখন এই ম্যাচের জয় উপভোগ করতে চাই। পরের ম্যাচ নিয়ে পরের সপ্তাহে ভাবা যাবে”। সবুজ-মেরুন শিবিরে ডার্বির আসল প্রস্তুতি শুরু হবে সোমবার থেকে। তবে সবুজ-মেরুন শিবিরে খারাপ খবর, এই ম্যাচে কার্ড সমস্যার জন্য খেলতে পারবেন না মিডফিল্ডার দীপক টাঙরি।