জীবনের প্রথম ডার্বি খেলতে নেমে হ্যাটট্রিক পাওয়া কিয়ান নাসিরিকে বিদায় জানাল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সঙ্গে বিদায় জানানো হল তরুণ মিডফিল্ডার লালরিনলিয়ানা হ্নামতেকেও। এই দুই তরুণ ফুটবলারকে তারা ছেড়ে দিলেও বাংলার ডিফেন্ডার দীপ্পেন্দু বিশ্বাসকে দলে রেখে দিচ্ছে। এই ঘোষণাগুলি এ দিন ক্লাবের ‘এক্স’ হ্যান্ডলে করা হয় বৃহস্পতিবার।

অতীতের বিখ্যাত ফুটবলার জামশেদ নাসিরির পুত্র কিয়ান নাসিরি ২০২১-২২ মরশুম থেকে মোহনবাগানের জার্সি গায়ে আইএসএলে খেলেছেন। সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে ৪৫টি ম্যাচে মাঠে নামেন ২৩ বছর বয়সী এই তরুণ ফরোয়ার্ড। তবে বেশিরভাগ ম্যাচেই দলের কোচেরা তাঁকে পরিবর্ত হিসেবে নামান। ফলে প্রতি ম্যাচে গড়ে প্রায় ২৫ মিনিটের বেশি মাঠে থাকতে পারেননি তিনি।

২০২২-এর জানুয়ারি মাসে জীবনের প্রথম ডার্বি খেলতে নেমেছিলেন কিয়ান। দীপকটাঙরির জায়গায় পরিবর্ত হিসেবে নেমে ম্যাচের শেষ ৩০ মিনিটে যে তিনটি গোল করেছিলেন কিয়ান, তা তাঁর ফুটবল কেরিয়ারের সেরা ঘটনা। যতদিন ফুটবল পায়ে মাঠে নামবেন, তত দিন তাঁর নামের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর এই কীর্তিকেও মনে রাখবে সবাই।

৬১ মিনিটে মাঠে নেমে ৬৪ মিনিটের মাথায় যে শটে গোল করেন কিয়ান, সেটাই ছিল সেই ম্যাচে তাঁর প্রথম বলে পা ছোঁয়ানো। প্রথম ছোঁয়াতেই বাজিমাত! সেই গোলে দলের হয়ে সমতা আনার পর ম্যাচের একেবারে শেষে চার মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল করে যে কীর্তি স্থাপন করেন, তা এ দেশের ফুটবলপ্রেমীরা মনে রাখবেন বহু দিন। যেমন মনে রেখেছেন বাইচুং ভুটিয়াকে। ১৯৯৭-এর ফেডারেশন কাপ সেমিফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিকের জন্য। ২৫ বছর পরে আর এক ভারতীয় সেই একই কীর্তি স্থাপন করেন সে দিন। তবে সেই কিয়ানকে এ দিন বিদায় জানিয়ে দিল তাঁর প্রথম ক্লাব মোহনবাগান।

একই সঙ্গে লালরিনলিয়ানা হ্নামতেকেও বিদায় জানানো হয়েছে, যিনি সদ্যসমাপ্ত আইএসএল মরশুমে ১৩টি ম্যাচে দেখা গিয়েছে। মূলত মাঝমাঠ সামলানোর দায়িত্বই বরাবর দেওয়া হয়েছে তাঁকে এবং বেশিরভাগ ম্যাচেই রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে নামেন তিনি। এ মরশুমে তাঁর পাসিং অ্যাকিউরেসি ছিল ৮৩%। যা ভারতীয় ফুটবলারদের মান অনুপাতে যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করা হয়। গত মরশুমেও ১৩টি ম্যাচ খেলেন তিনি এবং ৭৭ শতাংশ নিখুঁত পাস করেন তিনি।

এই দুই তরুণ ফুটবলারকে বিদায় জানানোর পাশপাশি মোহনবাগান এ দিন তরুণ ডিফেন্ডার দীপ্পেন্দু বিশ্বাসকে ২০২৭ পর্যন্ত জন্য দলে রেখে দেওয়া হল। ২১ বছর বয়সী দীপ্পেন্দু এ বারই প্রথম আইএসএলে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে আইএসএলের আসরে নামেন। পাঁচটি ম্যাচে ২২৩ মিনিট খেলেন তিনি। এবং ভাল লাগার মতো পারফরম্যান্সই দেখান তিনি। পাঁচটির মধ্যে দুটি ম্যাচে তিনি প্রথম এগারোতেও ছিলেন। তিনটি ম্যাচে নামেন পরিবর্ত হিসেবে। আইএসএল সেমিফাইনালে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে পরিবর্ত হিসেবে নামানো হয় তাঁকে। সেই ম্যাচে দশ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। আগামী মরশুমে হয়তো আরও বেশিক্ষণ খেলতে দেখা যাবে তাঁকে।