আইএসএল ২০২৪-২৫: ফ্যানদের বাছা মরশুমের সেরা দলের মনোনীত কোচেরা এক নজরে
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক ফ্যানদের বাছা মরশুমের সেরা দলের জন্য মনোনীত কোচেদের সম্পর্কে।

প্রধান কোচই যে কোনও ফুটবল দলের মেরুদণ্ড, দলের প্রধান চালক। জয়ী পরিবেশ তৈরি করা, খেলোয়াড়দের উন্নয়ন ঘটানো, কার্যকর কৌশল রচনা করে লক্ষ্য পূরণের দিকে দলকে নিয়ে যাওয়া—এ সব ক্ষেত্রেই প্রধান কোচেদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে সারা বিশ্বের বিভিন্ন কোচেরা নিজেদের প্রমাণ করেছেন এবং তাঁদের নিজেদের দলের সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। হোসে মোলিনার মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের নজির গড়া মরশুম থেকে শুরু করে খালিদ জামিলের অধীনে জামশেদপুর এফসি-র ঘুরে দাঁড়ানো অভিযান— ২০২৪-২৫ মরশুমে কোচেদের শ্রেষ্ঠত্ব এবং অটল প্রতিশ্রুতির প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বহু ম্যাচেই।
‘ফ্যানস’ টিম অফ দ্য সিজন’-এর প্রথম তিন ধাপের ভোটগ্রহণ মঙ্গলবার শেষ হয়েছে। এ বার সময় এসেছে চূড়ান্ত দলে প্রধান কোচ হিসেবে কার নাম থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার। প্রধান কোচেদের জন্য ভোটগ্রহণ চলবে ১৬ মে পর্যন্ত।
তার আগে দেখে নেওয়া যাক আপনাদের বাছা এ মরশুমে সেরা আইএসএল দলের জন্য মনোনীত বিশিষ্ট প্রধান কোচেরা কে কতটা সফল ও দক্ষ।
হোসে মোলিনা (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)
এই মরশুমে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে আইএসএলে তাদের প্রথম জোড়া খেতাব জয়ের পথে নেতৃত্ব দেন মোলিনা। স্কোয়াডে একাধিক বড় নাম থাকা সত্ত্বেও স্প্যানিশ কোচ ড্রেসিংরুম নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট দক্ষতা দেখান এবং দলকে অসংখ্য রেকর্ড ভাঙতে ও গড়তে সাহায্য করেন। ২০২৪-২৫ আইএসএল মরশুমে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ৫৬ পয়েন্ট সংগ্রহ করে, যা এক মরশুমে ৫০ পয়েন্ট অতিক্রমকারী প্রথম দল হিসেবে ইতিহাস গড়ে। ডিফেন্ডাররা ১৪টি গোল করে, যা এক মরশুমে ১০+ গোল করা প্রথম ক্লাব হিসেবে তাদের স্থান করে দেয়। তারা মোট ৫২ গোল করেছে এবং ১৬টি ক্লিন শিট রেখেছে—যা লিগে এক নতুন নজির স্থাপন করেছে।
গেরার্ড জারাগোজা (বেঙ্গালুরু এফসি)
বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে একটি ঘটনাবহুল মরশুম কাটিয়েছেন জারাগোজা, যেখানে দলটি প্লে-অফে পৌঁছয় এবং কাপ ফাইনালেও জায়গা করে নেয়। যদিও এ বার কোনও শিরোপা জিততে পারেনি তারা, তবুও স্প্যানিশ কোচের অধীনে বেঙ্গালুরু ধারাবাহিক উন্নতি দেখিয়েছে এবং মরশুম জুড়ে প্রতিভার প্রমাণ দিয়েছে। জারাগোজার অধীনে বেঙ্গালুরু এফসি মরশুমের প্রথম ৪৯৪ মিনিট পর্যন্ত গোল হজম করেনি। যা ৪০০+ মিনিট ধরে গোল না খাওয়া প্রথম দল হিসেবে তাদের ইতিহাসে জায়গা করে দেয়। দলের সংহতি ও বিদ্যুৎগতির ট্রানজিশন তাদের এই মরশুমের অন্যতম শক্তিশালী দল করে তোলে।
খালিদ জামিল (জামশেদপুর এফসি)
তিনি যে একজন দক্ষ কৌশলবীদ, খালিদ তা বারবার প্রমাণ করেছেন। এই ভারতীয় প্রধান কোচ জামশেদপুর এফসি-কে তিন বছরের মধ্যে এই প্রথমবার সেরা ছয়ে তুলে আনেন এবং তাদের সেমিফাইনাল পর্যন্তও নিয়ে যান, যা এমন একটি দলের পক্ষে বড় সাফল্য, যারা গত বছরগুলোতে লিগ টেবলের নিচের দিকে ছিল। জামিলের অধীনে জামশেদপুর এফসি অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছে, বিশেষ করে ঘরের মাঠে। ইস্পাতবাহিনী তাদের গঠন, শৃঙ্খলা, এবং প্রতিপক্ষকে চাপে ফেরার কাজে যথেষ্ট দৃঢ়তা দেখায় এবং ঐতিহ্যবাহী ফুটবল স্টাইলে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে, যা তাদের লিগে অনন্য করে তোলে এবং ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ভিত তৈরি করে তোলে।
মানোলো মার্কেজ (এফসি গোয়া)
লিগ টেবলে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের পরেই দ্বিতীয় স্থানে শেষ করে মানোলো মার্কেজের দল। তবে সারা মরশুম জুড়ে লিগ শিল্ডের দৌড়ে ছিল এফসি গোয়া। ধারাবাহিক আক্রমণাত্মক পারফরম্যান্সের মাধ্যমে টানা ২৩টি ম্যাচে গোল করে নতুন নজির স্থাপন করে তারা। এফসি গোয়া ছিল এমন একটি দল, যাদের মূল শক্তি ছিল তাদের দলগত পারফরম্যান্স। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের উপর নির্ভর না করে গোটা দলের পারফরম্যান্স দিয়েই বাজিমাত করে মার্কেজের দল। তাঁর অধীনে ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ, আয়ূষ ছেত্রী এবং হৃত্বিক তিওয়ারির মত নতুন মুখেরা নিজেদের প্রমাণ করেন এবং গোয়ার সাফল্যে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন।