কলকাতার ফুটবলের এক প্রধান যখন শীর্ষস্থান ধরে রাখার লক্ষ্য নিয়ে এ বারের ইন্ডিয়ান সুপার লিগ শুরু করবে, তখন অন্য আর এক প্রধানের সামনে নিজেদের আরও উন্নত করে তোলার চ্যালেঞ্জ। আর যাই হোক না কেন, ১০৪ বছর বয়সী দেশের অন্যতম সেরা ফুটবলখেলিয়ে ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এফসি-র জায়গা দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগে প্রতি বছর একেবারে নীচের দিকে থাকবে, তা কেনই বা মেনে নেবেন তাদের সমর্থকেরা?

সেই কারণেই, এ বার মরশুম শুরুর অনেক আগে থেকেই নতুন উদ্যমে মাঠে নেমে পড়ে লাল-হলুদ শিবির। প্রথমে একজন ভাল কোচ বাছাই, তার পরে একটা ভাল দল বাছা এবং সেই দলটাকে তৈরি করার জন্য ভাল প্রাক-মরশুম প্রস্তুতির ব্যবস্থা করা, এ সবই করেছে ইস্টবেঙ্গল কর্তৃপক্ষ। চেষ্টায় কোনও ত্রুটি নেই তাদের। যার ফল তারা মরশুমের শুরুতেই পেয়েছে ডুরান্ড কাপের আসরে।

ছন্দে ফেরার শুরু

গত তিন মরশুম ধরে টানা একতরফা ব্যর্থতার জ্বালায় ডার্বি থেকে মুখ ফেরাতে শুরু করেছিলেন লাল-হলুদ জনতা। গত ১২ অগাস্ট উপশম হয় ৫৫ মাস ধরে সহ্য করা যন্ত্রণার। অসাধারণ এক গোল করে দলকে বহু আকাঙ্খিত জয় এনে দেন ইস্টবেঙ্গলের নতুন ‘হিরো’, সুদূর তামিলনাড়ু থেকে আসা লাল-হলুদ বাহিনীর নয়নের মণি নন্দকুমার শেখর। গত জুনে যাঁকে তিন বছরের চুক্তি করে নিয়ে আসে কলকাতার ক্লাব।

সেই ডার্বির আগে ধারে ও ভারে এবং সাম্প্রতিক সাফল্যের বিচারে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টকে অনেকটাই এগিয়ে রেখেছিলেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু প্রাক্তন আইএসএল চ্যাম্পিয়ন কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতের ইস্টবেঙ্গল সে দিন দেখিয়ে দেয়, বড় বড় নাম দলে থাকলেই সাফল্য আসে না। ফুটবলে পারফরম্যান্সই শেষ কথা বলে। সে দিনের পারফরম্যান্সেই চিরপ্রতিদ্বন্দীদের ছাপিয়ে গিয়ে মরশুমের প্রথম ডার্বি জিতে নেয় লাল-হলুদ বাহিনী।

শুধু এই জয় নয়, টানা চার ম্যাচে অপরাজিত থেকে ডুরান্ডের ফাইনালে ওঠে তারা। ফাইনালে ফের চিরপ্রতিদ্বন্দী মোহনবাগান এসজি-রই মুখোমুখি হয়। এ বারও সারা ম্যাচে দুই দলই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে। ৬১ মিনিটের মাথায় মোহনবাগানের উইঙ্গার অনিরুদ্ধ থাপা দ্বিতীয় হলুদ তথা লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে চলে যান। তবু লড়াই ছাড়েনি সবুজ-মেরুন বাহিনী। ৭১ মিনিটে একক দক্ষতায় দুর্দান্ত এক গোল করে দলকে এগিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ান ফরোয়ার্ড দিমিত্রিয়স পেট্রাটস। এই গোলেই শেষ পর্যন্ত ফাইনাল জিতে নেয় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। জিততে না পারলেও সারা মরশুমে যে দুই প্রধান সমানে সমানে টক্কর দেবে, এই ম্যাচে তার ইঙ্গিত প্রথম টুর্নামেন্টেই দিয়ে রেখেছে ইস্টবেঙ্গল। 

কঠিন চ্যালেঞ্জ

কিন্তু আইএসএলে তো শুধু মোহনবাগানের সঙ্গে টক্কর দিলে চলবে না, বাকি ১১টি দলও রয়েছে, যাদের কেউ তাদের সমান শক্তিশালী বা তাদের চেয়েও ভাল অবস্থায় রয়েছে। দেশের এক নম্বর লিগে সফল হয়ে এএফসি-র মঞ্চে জায়গা করে নিতে হলে চাই ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলে যাওয়ার ক্ষমতা। গত কয়েক মরশুমে যা ছিল না ইস্টবেঙ্গলের। এ বার শুরুটা ভাল হয়েছে, ধারাবাহিকতা ছিল। একটা ম্যাচে হারার ফলে সেই ছন্দ হয়তো নষ্ট হবে না। কিন্তু সেই ছন্দ ধরে রাখতে হলে আরও উন্নতি করতে হবে লাল-হলুদ বাহিনীকে।

তাই কোচ কুয়াদ্রাত লিগ শুরুর আগেই বলে দিয়েছেন, “পাঁচ-ছ’সপ্তাহ আমরা ভাল ভাবে অনুশীলন করতে পেরেছি। এখনও অনেক কাজ বাকি। আমাদের মানসিকতা বদলাতে হবে। যত সময় এগোবে, নিজেদের উন্নত করে তোলা দরকার, যাতে আরও আরও ভাল ফল করতে পারি। আমরা একটা নতুন প্রক্রিয়ায় কাজ করা শুরু করেছি। সবে ছ’টা অফিশিয়াল ম্যাচ খেলেছি। এখনও ২৫টা ম্যাচ খেলতে হবে এবং বিভিন্ন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে। এই লিগে সব দলই যথেষ্ট ভাল এবং প্রত্যেক দলে ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। অনেক কোচ আছেন, যাঁরা দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছেন। তাই এই লিগ জমজমাটই হবে। আমাদের কাজ মোটেই সোজা হবে না”। 

দলবদলে ভোলবদল

গত আইএসএলে ন’নম্বরে থেকে লিগ শেষ করার পর দলের এক ঝাঁক ফুটবলারকে ছেড়ে দেয় লাল-হলুদ বাহিনী। ভারতীয় ফুটবলার জেরি লালরিনজুয়ালা, সেম্বয় হাওকিপ, সুমিত পাসি, শুভম সেন, নবীন কুমার, অমরজিৎ সিং কিয়াম ও হীমাংশু জাঙরা এবং বিদেশী ফুটবলার অ্যালেক্স লিমা, চ্যারিস কিরিয়াকু, জেক জার্ভিস ও জর্ডন ও’ডোহার্টিকে বিদায় দেয় তারা।

এই মরশুমের জন্য তাই ঢেলে দল সাজানো হয়েছে। গত জুনে সিনিয়র ডিফেন্ডার হরমনজ্যোৎ সিং খাবরা, মান্দার রাও দেশাই ও রাইট ব্যাক এডুইন ভন্সপলকে নেয় তারা।  তার দু’দিন আগে স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড হাভিয়ে সিভেরিও ও সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার সল ক্রেসপোকে সই করায় কলকাতার ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। এ ছাড়া হায়দরাবাদ এফসি থেকে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার বোরহা হেরেরা গঞ্জালেসকেও নিয়ে আসা হয়। যোগ দেন আর এক স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হোসে পার্দো। এ ছাড়া গত মরশুমের দলে থাকা বিদেশি স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভা আছেন এ বারেও।  

অস্ট্রেলিয়া থেকে উড়িয়ে আনা হয়েছিল অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার জর্ডন এলসিকে। কিন্তু ডুরান্ড কাপের ফাইনালে হাঁটুর চোট পেয়ে ছিটকে যান কয়েক মাসের জন্য। ফাইনালে ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণ আগলানোর দায়িত্বে ছিলেন জর্ডন। কিন্তু ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় হাঁটুতে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাঁকে। পরে ক্লাবের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়, বেশ কয়েকমাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। তবে এই সময়ে ক্লাব তাঁকে সবরকম ভাবে সাহায্য করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাঁর বিকল্প খোঁজার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়ে দেন কোচ।

ওডিশা এফসি থেকে সফল ভারতীয় উইঙ্গার নন্দকুমার শেখর, কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে ডিফেন্ডার নিশু কুমারকেও সই করায় কলকাতার ক্লাব। কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে তিন বছরের জন্য তারা নিয়ে আসে পাঞ্জাবের গোলকিপার প্রভসুখন গিলকেও। এ ছাড়াও একাধিক জুনিয়র ফুটবলারকে নিয়ে আলা হয়েছে লাল-হলুদ শিবিরে। অনূর্ধ্ব ১৭ ভারতীয় দলের দুই সদস্য ভানলাপেকা গুইতে ও গুনরাজ সিং গ্রেওয়ালকে একাধিক মরশুমের জন্য সই করিয়েছে তারা। যোগ দিয়েছেন প্রভসুখনের ভাই ডিফেন্ডার গুরসিমরাত গিল ও অজয় ছেত্রীও।

দলের নির্ভরযোগ্য উইঙ্গার মহেশ সিংকে এ বারও সিলভার সঙ্গে জুটি বাঁধতে দেখা যাবে কি না, তা তো সময়ই বলবে। এ ছাড়া যে দেশীয় ফুটবলাররা গতবারও ছিলেন, সেই ডিফেন্ডার লালচুঙনুঙ্গা, তুহীন দাস, মহম্মদ রকিপ, মিডফিল্ডার  মোবাশির রহমান, শৌভিক চক্রবর্তী ও ফরোয়ার্ড ভিপি সুহেরকে আসন্ন আইএসএলে দেখা যাবে।

নতুন কোচের জাদুর ছোঁয়া

এ তো গেল ফুটবলারদের কথা। এ বার আসা যাক কোচের কথায়। এ বার দল পরিচালনার জন্য প্রাক্তন আইএসএলজয়ী কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। যাঁর সহকারী প্রাক্তন আইএসএল জয়ী ফুটবলার দিমাস দেলগাদো। ভারতে কোচিং করানোর যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে ৫৪ বছর বয়সী কুয়াদ্রাতের। ২০১৬ থেকে কুয়াদ্রাত বেঙ্গালুরু এফসি-র সহকারী কোচের পদে ছিলেন।

যখন ২০১৮-য় প্রধান কোচ হিসেবে বেঙ্গালুরু এফসি-র দায়িত্ব নেন, তখন প্রথম মরশুমেই (২০১৮-১৯) দলকে প্রথম আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করেন কুয়াদ্রাত। তাঁরই প্রশিক্ষণে বেঙ্গালুরু একই মরশুমে লিগসেরা ও ট্রফিজয়ী দুইই হয়। পরের বছর তাঁর প্রশিক্ষণে থাকা বেঙ্গালুরুর দল ফের প্লে-অফে ওঠে। এ বার তিনি লাল-হলুদ বাহিনীকে দুঃসময় থেকে সুসময়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন। কতটা কী করতে পারবেন কুয়াদ্রাত, তার ইঙ্গিত ডুরান্ড কাপেই দিয়েছেন। আইএসএলে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন দলকে, সেটাই দেখার।

তবে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের আস্বস্ত করেছেন তাঁদের নতুন কোচ। লাল-হলুদ শিবিরে যোগ দেওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, এটাই তাঁর কোচিং জীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ডুরান্ড কাপে প্রথম ধাপ পেরনোর পরে জানিয়েছিলেন, প্রথমবার আইএসএলের নক আউটে জায়গা অর্জন করাটাই তাদের প্রাথমিক লক্ষ্য। তবে সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে যে এখনও অনেক পরিশ্রম করতে হবে তাঁদের, তা জানিয়েই দিয়েছেন স্প্যানিশ কোচ।

ইন্ডিয়ান সুপার লিগে পারফরম্যান্স:

২০২০-২১লিগ তালিকায় ৯ নম্বরে

২০২১-২২লিগ তালিকায় ১১ নম্বরে

২০২২-২৩লিগ তালিকায় ৯ নম্বরে  

দলবদলের পর দল যা দাঁড়াল

গোল: গতবার দলের গোল সামলেছিলেন কমলজিৎ সিং। এ বার কেরালা ব্লাস্টার্স থেকে আসা প্রভসুখন সিং গিলের ওপরই ভরসা রাখছেন কোচ। সঙ্গে আদিত্য পাত্র, জুলফিকার  গাজি ও রনিত সরকারও রয়েছেন।

রক্ষণরক্ষণে হরমনজ্যোৎ সিং খাবরা ও মন্দার রাও দেশাইয়ের মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার রয়েছেন। সঙ্গে রয়েছেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হোসে পার্দো লুকাস। অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডার জর্ডন এলসিকে আনা হলেও তিনি ডুরান্ড ফাইনালে গুরুতর হাঁটুতে চোট পেয়ে সম্ভবত কয়েক মাসের ছিটকে গিয়েছেন। তাঁর বিকল্পের খোঁজ চলছে। গতবার দলের রক্ষণ সামলানোর জন্য ছিলেন লালচুঙনুঙ্গা ও তুহীন দাস। তাঁরাও এ বার রয়েছেন দলে। এসেছেন প্রভসুখনের ভাই গুরসিমরাত ও নিশু কুমার। এ ছাড়াও রয়েছেন অতুল উন্নিকৃষ্ণন ও মহম্মদ রকিপ।

মাঝমাঠদলের মাঝমাঠে এ বার একঝাঁক তারকা ও প্রতিভাবান ফুটবলার। বোরহা হেরেরা, সল ক্রেসপোর মতো অভিজ্ঞ বিদেশিরা তো রয়েছেনই। এ ছাড়াও এ বার যোগ দিয়েছেন এডউইন ভন্সপল, অজয় ছেত্রী, ভানলাপেকা গুইতে ও গুনরাজ সিং গ্রেওয়াল। গতবারের দলের মোবাশির রহমান ও শৌভিক চক্রবর্তী রয়ে গিয়েছেন।

আক্রমণগতবারের চেয়ে এ বার লাল-হলুদ বাহিনীর আক্রমণ বিভাগ বেশ শক্তিশালী। গতবার ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার ক্লেটন সিলভাই মূলত আক্রমণের  দায়িত্বে ছিলেন। তাঁকে সঙ্গ দিতেন মহেশ সিং। এ বার এই দু’জনের সঙ্গে যোগ দিচ্ছেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড হাভিয়ে সিভেরিও ও নন্দকুমার শেখর। এ ছাড়া গতবারের দলে থাকা ভিপি সুহেরও রয়েছেন এ বার। দুই জুনিয়র সিকে আমন ও অভিষেক কুনজমকেও প্রয়োজনে মাঠে নামাতে হতে পারে।

নজরে থাকবেন যাঁরা

হাভিয়ে সিভেরিওগত মরশুম পর্যন্ত হায়দরাবাদ এফসি-তে খেলার পর এ বছর ইস্টবেঙ্গল এফসি-র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন এই স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড। মরশুমের শুরুতেই তিনি লাল-হলুদ বাহিনীর আক্রমণ বিভাগকে যথেষ্ট শক্তিশালী করে তুলেছেন। ডুরান্ড কাপে দু’টি গোলও করেছেন ইতিমধ্যেই। গত মরশুমে তিনি হায়দরাবাদের হয়ে ন’টি গোল করেন। ২০২১-এ স্পেনের লা পালমা আতলেটিকো থেকে হায়দরাবাদে যোগ দেন সিভেরিও। স্পেনের রেসিং সানতান্দার ও তাদের বি দল, লা পালমার বি দলের হয়েও খেলেছেন ২৫ বছর বয়সী এই সেন্টার ফরোয়ার্ড। আইএসএলে ৪৫টি ম্যাচে ১২টি গোল রয়েছে তাঁর। গতবার ২০টি ম্যাচ খেলে পাঁচটি গোল করেন দেশের সেরা লিগে। হিরো সুপার কাপে তিনটি ম্যাচ খেলে তিনটি গোল করেন। মরশুমের শেষ টুর্নামেন্টে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে জোড়া গোল করেন তিনি। এ বার সেই ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়েই মাঠে নামছেন।

নন্দকুমার শেখরএ বছর জুনে উইঙ্গার নন্দকুমার শেখরকে ওডিশা এফসি থেকে নিজেদের শিবিরে নিয়ে আসে ইস্টবেঙ্গল এফসি। তিন বছরের জন্য তাঁর সঙ্গে চুক্তি করেছে কলকাতার ক্লাব। গত মরশুমে ওডিশা এফসি-র হয়ে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখান তামিলনাড়ু থেকে উঠে আসা এই ফুটবলার। এ মরশুমও শুরুটা দারুণ করেছেন তিনি। ডুরান্ড কাপে ইস্টবেঙ্গলকে সাড়ে চার বছর পর ডার্বি জেতানো গোল করেন তিনি। সেমিফাইনালে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে দু’গোলে পিছিয়ে থাকার পর তাঁর গোলেই সমতা আনে ইস্টবেঙ্গল। গত বছর আইএসএলে ছ’টি গোল করেন ও একটিতে অ্যাসিস্ট করেন নন্দকুমার। সুপার কাপেও পাঁচটি ম্যাচে চারটি গোল করে দলকে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করেন তিনি। একটিতে জোড়া গোল ছিল তাঁর। মূলত লেফট উইং দিয়ে আক্রমণে উঠে প্রতিপক্ষের রক্ষণে ফাটল ধরিয়ে গোল করার ক্ষমতাসম্পন্ন এই ফুটবলারকে এই মরশুমে নিশ্চয়ই নিয়মিত লাল-হলুদ জার্সি গায়ে খেলতে দেখা যাবে।

বোরহা হেরেরাগত মরশুমে হায়দরাবাদ এফসি-র হয়ে খেলার পর এ মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে খেলছেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার বোরহা হেরেরা গঞ্জালেস। গত মরশুমে হায়দরাবাদ এফসি-র টানা দ্বিতীয়বার হিরো আইএসএল সেমিফাইনালে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বোরহার। নিজামের শহরের দলের হয়ে চারটি গোল করেন ও পাঁচটি গোল করান এই স্প্যানিশ তারকা। আইএসএলে সব মিলিয়ে ৩২টি গোলের সুযোগও তৈরি করেন তিনি। আইএসএলে ২২টি ম্যাচের পাশাপাশি ডুরান্ড কাপ ও সুপার কাপেও আরও আটটি ম্যাচ খেলেন তিনি। এই দুই টুর্নামেন্টেও পাঁচ গোল ও ন’টি অ্যাসিস্ট করেন তিনি। যথেষ্ট কার্যকরী মিডফিল্ডার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন বোরহা। শুধু আক্রমণে নয়, প্রয়োজনে তিনি যে রক্ষণাত্মক ভূমিকাতেও সমান তৎপর, তার প্রমাণও দিয়েছেন।

ইস্টবেঙ্গল এফসি-র প্রথম পর্বের সূচী:

২৫ সেপ্টেম্বর- বনাম জামশেদপুর এফসি (কলকাতা, রাত ৮টা)

৩০ সেপ্টেম্বর- বনাম হাদরাবাদ এফসি (কলকাতা, রাত ৮টা)

৪ অক্টোবর- বনাম বেঙ্গালুরু এফসি (বেঙ্গালুরু, রাত ৮টা)

২১ অক্টোবর- বনাম এফসি গোয়া (কলকাতা, বিকেল ৫.৩০)

২৮ অক্টোবর- বনাম মোহনবাগান এসজি (কলকাতা, রাত ৮টা)

৪ নভেম্বর- বনাম কেরালা ব্লাস্টার্স (কলকাতা, রাত ৮টা)

২৫ নভেম্বর- বনাম চেন্নাইন এফসি (চেন্নাই, বিকেল ৫.৩০)

৪ ডিসেম্বর- বনাম নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি (কলকাতা, রাত ৮টা)

৯ ডিসেম্বর- বনাম পাঞ্জাব এফসি (কলকাতা, রাত ৮টা)

১৬ ডিসেম্বর- বলাম মুম্বই সিটি এফসি (মুম্বই, রাত ৮টা)

২২ ডিসেম্বর- বনাম ওডিশা এফসি (কলকাতা, রাত ৮টা)