জুনে থাইল্যান্ডে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে হংকং রওনা হবে ভারতীয় দল
এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে হংকং-এর বিরুদ্ধে ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে থাইল্যান্ডে এই ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে ভারত। এই সফরের প্রস্তুতি শিবির হবে কলকাতায়।

আগামী জুনে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচের আগে প্রস্তুতি হিসেবে থাইল্যান্ড সফরে যাবে ভারতীয় ফুটবল দল। তারা সেখানে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পর বাছাই পর্বের ম্যাচ খেলতে হংকং রওনা হবে।
বুধবার সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৪ জুন থাইল্যান্ডের পাথুম থানির থাম্মাসাট স্টেডিয়ামে থাইল্যান্ডের জাতীয় দলের বিরুদ্ধে এই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ভারত। ১০ জুন এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ভারতের মুখোমুখি হবে হংকং। সেই ম্যাচের প্রস্তুতি হিসেবে থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই ফ্রেন্ডলি ম্যাচের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফিফা ক্রমতালিকায় ভারতের স্থান যেখানে ১২৭-এ, সেখানে থাইল্যান্ড রয়েছে ৯৯-এ। অর্থাৎ, ভারতকে এই ম্যাচে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হবে।
এই দুই ম্যাচের জন্য ভারতীয় দলের প্রস্তুতি শিবির শুরু হবে ১৮ মে থেকে এবং এই শিবির শেষ করে ভারতীয় দল থাইল্যান্ডে রওনা হবে ২৯ মে। ৪ জুনের ম্যাচের পরই হংকংয়ে চলে যাবে তারা, যাতে সেখানকার আবহাওয়া ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।
গত মাসের শেষ দিকে এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের তৃতীয় ও চূড়ান্ত রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে দুই প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ম্যাচ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়। ১৯৯৯-এর পর, অর্থাৎ ১৬ বছর পর গোলশূন্য ড্র করে তারা। বাছাই পর্বের গ্রুপ ‘সি’-তে থাকা অপর দুই দল হংকং ও সিঙ্গাপুর-ও সে দিন গোলশূন্য ড্র করেছিল। ফলে গ্রুপের প্রতিটি দলই এখন একই জায়গায় রয়েছে। ভারতের স্বস্তির কারণ বলতে শুধুমাত্র এটুকুই।
তবে সে দিনের ম্যাচে ভারতের পারফরম্যান্স দেখে মোটেই স্বস্তি পাননি দলের প্রধান কোচ মানোলো মার্কেজ। হতাশ এবং ক্ষুব্ধ কোচ সাফ জানিয়ে দেন, “দলের এই পারফরম্যান্সে আমি শুধু হতাশ নই, ক্ষুব্ধও। এত খারাপ পারফরম্যান্স দেখে আমি অবাকও হয়েছি।” শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে সেই ম্যাচে মাত্র দু’টি শট গোলে রাখতে পেরেছিল ভারত। গোল করার জন্য অবসর ভেঙে ফিরে আসা সুনীল ছেত্রী ম্যাচের শেষ দিকে যে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন, তা কোচকে হতাশ করে তোলার পক্ষে ছিল যথেষ্ট। ভারত প্রথমার্ধে সে ভাবে আধিপত্য বিস্তার করতে পারেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে ভারত আক্রমণের তীব্রতা বাড়ালেও সঠিক ফিনিশিংয়ের অভাব প্রবল ভাবে প্রকট হয়ে ওঠে। এই অর্ধে একটিও শট গোলে গোলে রাখতে পারেননি সুনীল, লিস্টনরা। ভারতের মাঝমাঠ ও আক্রমণ বিভাগের মধ্যে যেমন বোঝাপড়ার অভাব দেখা যায়, তেমনই অভিজ্ঞ ডিফেন্স লাইন-আপের মধ্যেও তেমন বোঝাপড়া ছিল না।
মে মাসের প্রস্তুতি শিবিরে এই সমস্ত দুর্বলতা কাটিয়ে উঠে জুনে মাঠে নামতে হবে ভারতকে, তাও নিজেদের মাঠে নয়, প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে। থাইল্যান্ডের বিরুদ্ধে এর আগে ২৬ বার খেলেছে ভারত। তার মধ্যে সাতবার জিতেছে তারা এবং ১২বার জিতেছে থাইল্যান্ড। ২০১৯-এ শেষ ফুটবল মাঠে দু’বার মুখোমুখি হয় দুই দেশ। দু’বারই জেতে ভারত।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচের সপ্তাহ খানেক আগে শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে প্রস্তুতি ম্যাচে মলদ্বীপকে ৩-০-য় হারিয়ে ১৬ মাসের জয়ের খরা কাটায় ভারত। মার্কেজ ভারতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম জয়ের মুখ দেখল তাঁর বাহিনী। আন্তর্জাতিক অবসর ভেঙে ফিরে আসা সুনীল ছেত্রী একটি গোল করে স্মরণীয় করে রাখেন ভারতীয় দলে তাঁর প্রত্যাবর্তনকে। কিন্তু তার এক সপ্তাহের মধ্যেই এই অধঃপতন কোচকে অবাক ও হতাশ করে তোলে।
আগামী শনিবার চলতি কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালের পর ক্লাব মরশুম শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে জুনের দুই ম্যাচের প্রস্তুতি সময় নিয়ে সারতে পারবেন মানোলো মার্কেজ ও তাঁর দলের ফুটবলাররা। ফলে এই দুই ম্যাচে আগের চেয়ে ভাল ফল আশা করা যেতে পারে। কয়েকদিন পরেই সম্ভাব্য দলের সদস্যদের নাম জানিয়ে দেবেন ভারতীয় দলের কোচ।