কোনও দলকে দু-তিন গোলের লিড নিতে দিলে সেই ম্যাচে কিছু পাওয়া যায় না: কনস্টান্টাইন

বৃহস্পতিবার এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে তাদের মাঠে লড়াইয়ে ফেরার মরিয়া চেষ্টা করলেও সব মিলিয়ে যে মোটেই ভাল খেলতে পারেনি তাঁর দল, তা স্বীকার করে নিলেন ইস্টবেঙ্গল এফসি-র কোচ স্টিফেন কনস্টান্টাইন। তাঁর মতে, দল লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট ছিল না। ফলে এতে কোনও লাভ হয়নি।
এফসি গোয়ার স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ইকের গুয়ারৎজেনা ম্যাচের প্রথম ২৩ মিনিটের মধ্যেই হ্যাটট্রিক করে প্রতিপক্ষের সমস্ত আশা শেষ করে দেন। ভারতীয় দলের সদস্য ব্র্যান্ডন ফার্নান্ডেজ এক বিশ্বমানের ফ্রিকিক থেকে গোল করে দলকে চার গোলে এগিয়ে দেওয়ার পরেও অবশ্য দু’গোল দিয়ে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা করে কলকাতার দল। শেষ দিকে একাধিক সুযোগও পায় তারা। কিন্তু কোনও সুযোগই কাজে লাগাতে পারেননি নাওরেম মহেশ, ক্লেটন সিলভারা।
২-৪ হারের পর দলের পারফরম্যান্স নিয়ে কনস্টান্টাইন বলেন, “প্রথমার্ধে আমরা খুবই খারাপ খেলেছি। বিরতির পরে ওদের একটা ফ্রি কিক দিই, যা কাজে লাগিয়ে ওরা ৪-০ করে। কিন্তু আমরা লড়াইয়ে ফিরতে দুটো গোল করেছি। হয়তো একটা পেনাল্টিও প্রাপ্য ছিল আমাদের। কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। কোনও দলকে দু-তিন গোলের লিড দিয়ে সাহায্য করলে তো আর সেই ম্যাচ থেকে কিছু পাওয়া যায় না। এটা সারা মরশুম ধরেই চলছে আমাদের। ৪৫-৬০ মিনিট আমরা ভাল খেলছি। এ ভাবে তো ম্যাচ জেতা যায় না”।
খেলোয়াড়দের বকেয়া ঠিকমতো না মেটানোয় নতুন খেলোয়াড় নেওয়ার ব্যাপারে ফিফার যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা উঠে গিয়েছে বলে জানালেন কোচ। এই ভাল খবর দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও এক ভাল খবর জানান তিনি। বলেন, “আমাদের যে নিষেধাজ্ঞা ছিল, তা আজ উঠে গিয়েছে। এখন আমরা নতুন খেলোয়াড় নিয়ে খেলাতে পারি। তাই পরের সপ্তাহে হয়তো জ্যাক জার্ভিস খেলতে পারে। ওকে যদি তিন সপ্তাহ আগে পেতাম ভাল হত। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তা হয়নি”।
A spirited second half showing but we fall short at the Fatorda. #JoyEastBengal #HeroISL #আমাগোমশাল #FCGEBFC #EastBengalFC #IndianFootball #LetsFootball pic.twitter.com/VrYSzA5bh6
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) January 26, 2023
এই হারের মাঝখানেও অবশ্য ইতিবাচক দিক দেখছেন কনস্টান্টাইন। বলেন, “এত কম সময়ে তিন গোল খেলে তো আত্মবিশ্বাস তলানিতে এসে ঠেকবেই। আমাদের ছেলেরা যথেষ্ট পরিশ্রমী। তবে মাঝে মাঝে যে মানের ফুটবল প্রয়োজন হয়, তা ওদের কাছ থেকে পাওয়া যায় না। দ্বিতীয়ার্ধে ওরা যখন ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাল, তখন অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। তবে আমার কাছে ইতিবাচক ব্যাপার হল আমাদের রিজার্ভের দুটো ছেলেকে আজ খেলার সুযোগ দিতে পেরেছি, যা আগে করা যায়নি। এটা ক্লাবের উন্নতির পক্ষে ভাল”।
প্রথমার্ধে মোটেই ভাল খেলতে না পারার পরে দ্বিতয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল নড়েচড়ে বসে ও দু’টি গোল করে লড়াই ফেরার মরিয়া চেষ্টা করে। বিরতিতে দলকে কী বলেছিলেন তিনি, জানতে চাইলে কনস্টান্টাইন সেই গোপনীয়তা ভাঙতে চাইলেন না। বলেন, “বিরতিতে কী বলেছিলাম, সেটা আর না বলাই ভাল। কিছু জিনিস অজানা থেকে যাওয়াই ভাল। ছেলেদের কাছ থেকে যে প্রতিক্রিয়া দরকার ছিল, সেটা পেয়েছি। হারের জন্য অবশ্যই হতাশ আমি। হার আমি সহজে মেনে নিতে পারি না। তবে এটাই বাস্তব। আমাদের আরও ভাল খেলতে হবে। আশা করি, আমরা পারব”।
নিষেধাজ্ঞা উঠলেও পরের ম্যাচে দলের ভোল বদলে দেওয়া কোনও মতেই সম্ভব না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন লাল-হলুদ কোচ। তবে পরের মরশুমে এর চেয়ে অনেক ভাল পারফরম্যান্সের নিশ্চয়তা দিচ্ছেন তিনি। বলেন, “নিষেধাজ্ঞা উঠলেও মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে দলের ভোল পাল্টানো কঠিন। গতকাল সন্ধ্যায় নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর নতুন খেলোয়াড়কে আজকের ম্যাচে খেলানো সম্ভব ছিল না। আমরা পরবর্তী মরশুমের জন্য পরিকল্পনা শুরু করে দিয়েছি। সেই নিয়ে বেশি কথা এখন বলতে পারব না। তবে পরের মরশুমে যে আমাদের দলকে অন্য রূপে দেখতে পাবেন, এই নিয়ে আমি নিশ্চিত”।