গত মরশুমে বেঙ্গালুরুর কাছে হারের পর ফিরতি লিগে তার বদলা নিয়ে নিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এফসি। এ বার সুনীল ছেত্রীদের বিরুদ্ধে সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চান ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। শনিবার শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে চলতি আইএসএলের প্রথম ম্যাচে নামছে তারা। আইএসএলে কখনও যা করতে পারেনি তারা, সেই প্রথম ম্যাচে জয় দিয়েই শুরু করতে চান লাল-হলুদ কোচ। কিন্তু প্রতিপক্ষকেও যথেষ্ট সমীহ করছেন। গতবার তারা লিগ তালিকার দশ নম্বরে শেষ করেছিল বলে কোনও ভাবেই খাটো করে দেখতে চান না নিজের প্রাক্তন ক্লাবকে।

প্রতিপক্ষকে নিয়ে কুয়াদ্রাত সাংবাদিকদের বলেন, “ওদের দলে দুর্দান্ত খেলোয়াড় রয়েছে এবং ওরা ট্রান্সফার উইন্ডোতে ভাল দল গড়েছে। আমার মনে হয় শক্তিশালী দল ওরা। আমরা ভালভাবে লিগটা শুরু করতে চাই এবং তিনটি পয়েন্ট পাওয়াই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয”।

তাঁর দল যে সঠিক দিশার দিকেই এগোচ্ছে , তা জানিয়ে শৌভিক চক্রবর্তীদের কোচ বলেন, “আমরা ভবিষ্যতের জন্য একটি দল তৈরি করছি। আমি খুব আশাবাদী। ২-৩ বছরের চুক্তিতে খেলোয়াড়রা রয়েছে আমাদের দলে। এটাই আমাদের চ্যালেঞ্জ, দলের মধ্যে স্থিতিশীলতা আনা। আমরা সঠিক পথেই এগোচ্ছি। আমরা কোনও বার প্লে-অফে পৌঁছতে পারিনি ঠিকই, তবে এ বার আমাদের দলে যে খেলোয়াড়রা আছে, তারা আমাদের এই লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে পারে”।

ডুরান্ড কাপে শিলং লাজং এফসি-র কাছে হেরে ছিটকে যেতে হয় তাদের। সেই হারের প্রভাব লিগ অভিযানের শুরুতে পড়বে না বলেই মনে করেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “দলে এ বার অনেক নতুন ফুটবলার এসেছে। ওদের মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগছে। ডুরান্ডে শিলংয়ের বিরুদ্ধে ছ’জন নতুন ফুটবলার খেলেছিল। ওই টুর্নামেন্টে জিততে পারিনি ঠিকই। তবে ধীরে ধীরে সকলে মানিয়ে নিয়েছে। আশা করি, আইএসএলে সেই সমস্যা হবে না। দল একজোট হয়েই খেলবে।”

লিগ শুরুর আগেই সম্প্রতি শাস্তির আওতায় পড়েছেন তাঁর দলের নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার আনোয়ার আলি। তাই আপাতত তাঁকে ছাড়াই খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে। এই প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাত বলেন, "আমার সঙ্গে ওর কথা হয়েছে। আনোয়ার আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। খুব ভাল অনুশীলন করছে। তবে ও প্রথম ম্যাচে খেলবে না। তাই বাকি খেলোয়াড়দের নিয়েই আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে"।

আসলে অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে অনুশীলন ও খেলায় বেশি মন দিতে চান লাল-হলুদের স্প্যানিশ কোচ। বলেন, "এগুলো আমাদের হাতে নেই। আমাদের হাতে যা আছে, তা হল শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করা। আমরা কোনও অজুহাত দিতে চাই না। আমরা শক্তিশালী হয়ে ওঠার চেষ্টা করছি"।

ইস্টবেঙ্গল আগের চেয়ে অনেক উন্নতি করেছে বলে মনে করেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “ট্রেভর মর্গ্যানের পর এবারই প্রথম একই কোচ রয়েছে দলে। সেই সময় ইস্টবেঙ্গল অনেকগুলো ট্রফি পেয়েছে। কিন্তু আমাদের জয়ের শতাংশ বেশি। গতবছর ৩৭ ম্যাচের মধ্যে আমরা ৪৫ শতাংশ ম্যাচ জিতেছি। এবার আরও ভাল খেলার চেষ্টা করব”।

ইস্টবেঙ্গলের বিদেশী ডিফেন্ডার হিজাজি মাহেরও তৈরি মাঠে নামতে। সুনীল ছেত্রী বা পেরেইরা দিয়াজের মতো বড় নাম প্রতিপক্ষে থাকলেও চিন্তা নেই তাঁর। বলেন, “বেঙ্গালুরু বড় দল। কিন্তু প্রতিপক্ষের কথা বেশি না ভেবে নিজেদের নিয়েই বেশি ভাবছি। আাদের দলও এ বার ভাল। এই ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট ছাড়া কিছুই ভাবছি না আমরা। সুনীল, দিয়াজদের আটকাতে আমরা তৈরি”।