টানা তিন ম্যাচে হারের পরেও ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত তাঁর দলের পাশেই রয়েছেন। তাঁর মতে, তাঁর দল খারাপ খেলছে না। কিছু ছোটখাটো ভুলের জন্যই এ ভাবে বারবার হারতে হচ্ছে তাদের। তবে দলের রক্ষণের সমালোচনা করেন তিনি।

এ দিন ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে ১-২-এ হারে ইস্টবেঙ্গল। কেরালার দল ৩২ মিনিটের মাথায় এগিয়ে যায় দাইসুকে সাকাইয়ের সুযোগসন্ধানী গোলে। ৮৮ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়িয়ে নেন দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস। এই গোলের আগেই পেনাল্টি থেকে গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন যিনি, সেই ক্লেটন সিলভাই স্টপেজ টাইমের একেবারে শেষ দিকে ফের পেনাল্টির সুযোগ কাজে লাগিয়ে একটি গোল শোধ করেন। আক্রমণে এ দিন যতটা দিশাহারা লেগেছে ইস্টবেঙ্গলকে, রক্ষণে তার চেয়েও বেশি দুর্বল মনে হয়েছে তাদের।

কিন্তু তাঁর দল খারাপ খেলেছে, তা মানতে রাজি নন ইস্টবেঙ্গল কোচ। ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আমরা খারাপ খেলছি, এটা ঠিক নয়। আমরা বেঙ্গালুরুতে যেমন ভাল ফুটবল খেলেছি, তেমনই গোয়ার বিরুদ্ধেও অনেকটা সময় ভাল খেলেছি। আজও দ্বিতীয়ার্ধে আমরা ভাল খেলেছি। তবে কেরালা যথেষ্ট ভাল দল। ওরা আমাদের দুর্বলতাগুলোকে কাজে লাগিয়ে নিতে পেরেছে। আমরা অনেকগুলো ভাল সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু সেগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। পেনাল্টিও মিস করেছি। তবে ডিফেন্সে আমরা এখনও আমাদের আরও শক্তিশালী হতে হবে। ও ভাবে দুটো গোল খাওয়া ঠিক হয়নি”।

ম্যাচের ৮৫ মিনিটের মাথায় সমতা আনার যে সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছিলেন ক্লেটন সিলভা, তা মূলত ব্লাস্টার্সের গোলকিপার শচীন সুরেশের জন্যই বানচাল হয়ে যায়। প্রথম সুযোগে পেনাল্টি শট নেওয়ার সময় শচীন লাইন থেকে এগিয়ে এসে সেই শট বাঁচান বলে রেফারি ক্লেটনকে আবার পেনাল্টি মারার সুযোগ দেন। কিন্তু এবারেও ক্লেটনের শট শচীন লাইনে থেকেই দুর্দান্ত ভাবে আটকে দেন। তাঁর হাত থেকে ছিটকে আসা বলেও শট নেন ব্রাজিলীয় তারকা। এ বারও তাঁর শট বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

এ ভাবে পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া হওয়ায় অবশ্য খুশি নন ইস্টবেঙ্গলের কোচ। দ্বিতীয়বারও ক্লেটন পেনাল্টি মারতে যাওয়ায় খুশি তিনি। বলেন, “ও যে অধিনায়ক হিসেবে দলের সঙ্গে রয়েছে, তা প্রমাণ করে দিল ক্লেটন। ভুল আমাদের সবারই হতে পারে, এটা আমাদের মানতে হবে। কিন্তু ওর মানসিকতায় যে কোনও ভুল ছিল না, এটা বলতেই হবে। দ্বিতীয়বার পেনাল্টি নিতে গিয়ে ও দলকে এই বার্তাই দেয় যে, হাল ছাড়া যাবে না”।

তবে তিনি চান এই ব্যর্থতা থেকে তাঁর দলের ছেলেরা শিক্ষা নিক এবং নিজেদের প্রমাণ করতে পরের ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়াক। তিনি বলেন, “এটাই তো নিজেদের প্রমাণ করার সময়। ছেলেদের নিজেদের চারিত্রিক দৃঢ়তার পরিচয় দিতে হবে ও নিজেদের প্রমাণ করতে হবে। ওদের যে এই ক্লাবে খেলার যোগ্যতা আছে, তা প্রমাণ করতে হবে ওদেরই। এই সময়ে আমাদের আরও পয়েন্ট অর্জন করা উচিত ছিল। আমরা এর জন্য অনেক পরিশ্রমও করেছি অনুশীলনে। কিন্তু ফুটবলে এ রকম হয়েই থাকে। এমন নাটক, এমন আবেগময় ঘটনা হয়েই থাকে। পরপর দুটো পেনাল্টি মিস না করলে আমরা ১-১ করে দিতে পারতাম। দলের মধ্যে একটা মানসিক সমস্যা কাজ করছে। তবে ফুটবল এমনই। সব কিছু পিছনে ফেলে, পরের ম্যাচে আমাদের মাঠে ফিরতেই হবে”। সামনে ফের লম্বা ছুটি। এই ছুটিতে যে ফের তাঁরা প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন, তাও জানিয়ে দেন কুয়াদ্রাত।