বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে বেরিয়ে এলেন ডিফেন্ডার হীরা মন্ডল
বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে এলেন বাংলার প্রতিভাবান সাইড ব্যাক হীরা মন্ডল। সোমবার সরকারি ভাবে এই খবর ঘোষণা করল বেঙ্গালুরুর ক্লাব। বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁর এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনা চলছিল। কিন্তু এ দিন সুনীল ছেত্রীর ক্লাব তাদের টুইটার হ্যান্ডলে এই খবর দেওয়ার পরেই বোঝা গেল, তা জল্পনা নয়, সত্যিই।
বেঙ্গালুরু এফসি-র সঙ্গে চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে এলেন বাংলার প্রতিভাবান সাইড ব্যাক হীরা মন্ডল। সোমবার সরকারি ভাবে এই খবর ঘোষণা করল বেঙ্গালুরুর ক্লাব। বেশ কয়েকদিন ধরেই তাঁর এই সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়ে জল্পনা চলছিল। কিন্তু এ দিন সুনীল ছেত্রীর ক্লাব তাদের টুইটার হ্যান্ডলে এই খবর দেওয়ার পরেই বোঝা গেল, তা জল্পনা নয়, সত্যিই।
এই বার্তায় লেখা হয়েছে, “হীরা মন্ডলের সঙ্গে বেঙ্গালুরুর এফসি-র চুক্তি বাতিল করা হয়েছে দু’পক্ষের সন্মতিতে। ভবিষ্যতের জন্য হীরাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে ক্লাব”।
UPDATE: Hira Mondal's contract with Bengaluru FC has been terminated by mutual consent. The club wishes Hira the best for his future. #WeAreBFC pic.twitter.com/bde1nyu0sA
— Bengaluru FC (@bengalurufc) November 21, 2022
কিন্তু কেন মরশুমের মাঝখানেই বেঙ্গালুরু ছেড়ে চলে আসছেন প্রতিভাবান এই ডিফেন্ডার? কারণ, প্রথম দলে তাঁর জায়গা হচ্ছে না। গত মরশুমের ইস্টবেঙলের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখালেও এই মরশুমে দলে তাঁর জায়গা না হওয়া বাংলার ফুটবল মহলকেও বেশ অবাক করেছে বলে শোনা গিয়েছে। তাই এই চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন হীরা।
গত মরশুমে তাঁর দল ইস্টবেঙ্গল এসসি একেবারেই ভাল পারফরম্যান্স না দেখাতে পারলেও হীরা কিন্তু প্রায় প্রতি ম্যাচেই যথেষ্ট উজ্জ্বল ছিলেন। তাঁর এই অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য বেঙ্গালুরু এফসি গত বছর জুলাইয়ে তাঁকে ডেকে নেয়।
ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে বেঙ্গালুরুর দলে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি হিরো আইএসএলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটকে এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “এখানকার সুযোগ-সুবিধা ও পরিকাঠামো খুবই উন্নত। সেজন্যই এই ক্লাবকেই বেছে নিলাম। তবে এই ক্লাবে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্তটা মোটেই সোজা ছিল না। গত বছর যাদের হয়ে খেলেছি, তারাও বড় ক্লাব। প্রচুর সমর্থক রয়েছে এই ক্লাবে। বাংলা ছেড়ে বাইরের কোনও ক্লাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে অনেক ভাবতে হয়েছে আমাকে”।
সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে খেলার সুযোগ পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, “যে কোনও ভারতীয় ফুটবলারেরই স্বপ্ন সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে মাঠে নামা। আমারও ছিল। ওঁর সঙ্গে একই ড্রেসিং রুমে থাকতে পারাটা আমার কাছে পরম সৌভাগ্যের। উনি এতদিন ধরে খেলছেন, এত অভিজ্ঞতা ওঁর, এত গোল করেছেন। অনেক কিছু শেখার আছে ছেত্রীভাইয়ের কাছ থেকে”। কয়েক মাস সেই সুযোগ পেলেও শেষ পর্যন্ত আর সুনীলের সংসারে থাকা হল না হীরার।
গত মরশুমে লাল-হলুদ জার্সি গায়ে ১৬টি ম্যাচ খেললেও এ বার চলতি হিরো আইএসএলে তাঁকে একটিও ম্যাচ খেলার সুযোগ দেননি দলের কোচ সাইমন গ্রেসন। ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চে থাকলেও বাকি পাঁচটি ম্যাচে তিনি স্কোয়াডেই ছিলেন না। মরশুমের শুরুতে ডুরান্ড কাপে অবশ্য চারটি ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে দু’বার হলুদ কার্ড দেখে পরের ম্যাচে নির্বাসিত ছিলেন। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে পুরো ৯০ মিনিট এবং মহমেডান স্পোর্টিংয়ের বিরুদ্ধে ৭৮ মিনিট মাঠে ছিলেন তিনি। কিন্তু গ্রুপের শেষ ম্যাচে ও সেমিফাইনালে রিজার্ভ বেঞ্চেই বসে থাকতে হয় তাঁকে। ফাইনালে মাত্র দশ মিনিটের জন্য নামেন তিনি।
দলে তাঁর কার্যকারিতা প্রায় আছে বলে মনে করছেন না গ্রেসন, সেই জন্যই তাঁকে ছেড়ে দিলেন তিনি। সরকারি ভাবে কিছু না জানা গেলেও শোনা যাচ্ছে, জানুয়ারির দলবদলে ইস্টবেঙ্গল এফসি-তেই ফিরে যেতে পারেন হীরা। কারণ, গত মরশুমে এই দলের হয়ে তিনি খুবই ভাল খেলেন। ১৬টি ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতেই প্রথম এগারোয় ছিলেন তিনি।
২০২০-২১-এ হিরো আই লিগে মরশুমের সেরা দলে জায়গা পান হীরা। সে বার মহমেডান স্পোর্টিংয়ের হয়ে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলায় এই সন্মান অর্জন করেন তিনি। তাঁর এই পারফরম্যান্স দেখেই ২০২১-এ এসসি ইস্টবেঙ্গল তাঁকে সই করায়। ২০১৫-য় পোর্ট ট্রাস্টের হয়ে কলকাতা লিগে খেলা শুরু করার পরে রেনবো এফসি, টালিগঞ্জ অগ্রগামী, পিয়ারলেসের হয়েও খেলেন তিনি।