দলের ফুটবলারদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইয়ে গর্বিত লাল-হলুদ কোচ কুয়াদ্রাত
‘ওরা পাগলের মতো লড়াই করেছে। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় গোলটা করে দিতে পারলে ওরা সমস্যায় পড়ে যেত। আমরা একাধিক ভাল সুযোগ তৈরি করেছি’।

আইএসএলের ফিরতি ডার্বিতে হারলেও বিরতির পরে দলের ফুটবলারদের ঘুরে দাঁড়ানোর পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। তাঁর ধারণা, তিন গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় যে রকম লড়াই করেছেন তাঁর দলের ছেলেরা, তা প্রশংসার যোগ্য।
রবিবার রাতে ম্যাচের পর সাংবাদিকদের লাল-হলুদ কোচ বলেন, “দ্বিতীয়ার্ধে আমার দলের ছেলেরা যেভাবে ম্যাচে ফিরে আসে, সে জন্য আমি গর্বিত। ওরা দেখিয়ে দিল যে, ওদের কাছে আরও বড় লক্ষ্য আসলে কী। ওরা পাগলের মতো লড়াই করেছে। আমার মনে হয়, দ্বিতীয় গোলটা করে দিতে পারলে ওরা সমস্যায় পড়ে যেত। আমরা একাধিক ভাল সুযোগ তৈরি করেছি। ক্লেটনের হেড এবং বিষ্ণুকে ফাউলের জন্য যে পেনাল্টিটা পাওয়া উচিত ছিল। দ্বিতীয় গোলটা হলে অনেক কিছুই বদলে যেত। যে কোনও রকম ফল হত”।
রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রথমার্ধের তিন গোলেই বাজিমাত করে ফেলে গতবারের কাপ চ্যাম্পিয়নরা। ফলে দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল শোধ করলেও শেষ পর্যন্ত গোলসংখ্যা আর বাড়াতে পারেনি তারা। ২৭ মিনিটে জেসন কামিংস, ৩৬ মিনিটে লিস্টন কোলাসো ও প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে পেনাল্টি থেকে দিমিত্রিয়স পেট্রাটসের দেওয়া গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর ৫৩ মিনিটে এক গোল শোধ করেন সল ক্রেসপো। বাকি দুটি গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও শেষ পর্যন্ত প্রতিপক্ষের রক্ষণের তৎপরতায় ও নিজেদের ভুলে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে তা আর হয়ে ওঠেনি।
দ্বিতীয়ার্ধে যে পরিস্থিতির মধ্যে মাঠে নামে, তা বেশ কঠিন ছিল বলে মনে করেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “আমরা বিরতির পর যখন মাঠে নামি, তখন আমাদের পরিস্থিতি খুবই প্রতিকুল ছিল। একেই পেনাল্টি মিস হয়েছে, তার ওপর নুঙ্গার চোট। আমরা তখন দুই তরুণ খেলোয়াড় বিষ্ণু ও সায়নকে আনতে চাইছিলাম। আসলে ওরা যাতে বুঝতে পারে, তেমন একটা কৌশলে আমরা ম্যাচের বাকি অংশটা খেলতে চেয়েছিলাম। এমনিতেই আজ আমরা অন্য সিস্টেমে খেলেছি। কিন্তু প্রথমার্ধের বাড়তি সময়ে নন্দকুমার এমন একটা ছোট ভুল করে ফেলল যে তৃতীয় গোলটাও খেতে হল”।
এ দিন প্রথমার্ধের ১২ মিনিটের মাথায় বক্সের মধ্যে ক্লেটন সিলভাকে বাধা দেন মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কয়েথ, যার ফলে তাঁকে হলুদ কার্ড দেখতে হয় এবং ইস্টবেঙ্গলকে স্পট কিকের নির্দেশ দেন রেফারি। কিন্তু দুরন্ত ক্ষিপ্রতায় বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে ক্লেটনের স্পট কিক রুখে দেন বিশাল। আইএসএল কেরিয়ারে ক্লেটনের মোট দশটি পেনাল্টির মধ্যে এটি তাঁর দ্বিতীয় পেনাল্টি মিস। এর আগে গত বছর নভেম্বরে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে পেনাল্টির সুযোগ হাতছাড়া করেন তিনি।
এই পেনাল্টি মিস করা নিয়ে কোচ বলেন, “ক্লেটন তো আর এই প্রথম পেনাল্টি মিস করল, তা নয়। এর আগেও ওর ভুল হয়েছে। আজ আর একবার সেই আফসোসের মুহূর্ত এল। তবে ক্লেটনের কাজ, ব্যক্তিত্ব ও চরিত্র আমাকে খুশি করেছে। তাই এই (পেনাল্টি মিস্) নিয়ে আমার কোনও সমস্যা নেই। ফুটবলে এমন হয়েই থাকে। কিন্তু এর ফলে মানসিকতায় যে প্রভাব পড়ে, আমি সেটা নিয়েই ভাবছি। ক্লেটন না হয়ে যদি অন্য কেউ মিস করত!”
এই ম্যাচ হারার ফলে ইস্টবেঙ্গলের প্লে অফের রাস্তা খুবই কঠিন হয়ে গেল। খাতায় কলমে তাদের প্লে অফে ওঠার সম্ভাবনা থাকলেও সেই পথ একেবারেই সোজা নয়। সেখানে বাকি সব ম্যাচে জিতলেই শুধু হবে না, অন্যান্য দলগুলির ম্যাচেও একাধিক অঘটন ঘটা প্রয়োজন। অর্থাৎ তাদের প্লে-অফ ভাগ্য এখন আর তাদের হাতে নেই।