বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জিততে না পেরে যেমন খুশি নন ভারতের ক্রোয়েশিয়ান কোচ ইগর স্টিমাচ, তেমনই সুযোগ পেয়েও ভারতকে হারাতে না পেরে হতাশ বাংলাদেশের কোচ জেমি ডে I মঙ্গলবার কলকাতায় যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ফেভারিট তকমা নিয়ে নামা সত্ত্বেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১-১ ড্র করে ভারত I ম্যাচের শেষ মুহূর্তে ৮৮ মিনিটে এ বছর হায়দরাবাদ এফসি-তে যাওয়া ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার আদিল খান গোল করে দলের হার বাঁচান I

৪২ মিনিটে ফরোয়ার্ড সাদ উদ্দিন অসাধারণ হেডে গোল করে দলকে এগিয়ে দেওয়ার পরে ভারতকে প্রায় সারা ম্যাচে আটকে রেখেছিল বাংলাদেশ I শেষের কয়েক মিনিট সুনীল ছেত্রীদের আটকে রাখতে পারলে তিন পয়েন্ট নিয়েই ঘরে ফিরত তারা I এ ভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ড্র করায় হতাশ ভারতীয় কোচ ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের বলেন, “বাংলাদেশ যথেষ্ট কঠিন প্রতিপক্ষ I ওদের শক্তি অনুযায়ী প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারিনি আমরা I খুব বাজে একটা গোল খেয়েছি I আমরা আধুনিক ও টেকনিকাল ফুটবল খেলার চেষ্টা করছি I এখনও অনেক কিছু ঠিক করতে হবে I”

গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধুর মুহূর্তের ভুলে মঙ্গলবার গোল খায় ভারত I তাঁর ভুলের সুয়োগ কাজে লাগিয়েই গোল করেন সাদ উদ্দিন I এমন গোল খাওয়া মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে ভারতীয় কোচের I “এ রকম গোল খেলে কখনও জেতা যায় না I তবে আমরা ভাল ফুটবল খেলেছি এবং এই ম্যাচে আমাদের জেতা উচিত ছিল”, বলেন তিনি I গোলকিপার গুরপ্রীতেরও দোষ দেখছেন না স্টিমাচ I বলেন, “গোলকিপারের জীবন এমনই I কোনও কোনও দিন দারুণ যায়, আবার কোনও দিন ভুলভ্রান্তি হতেই থাকে I আমার দলের ছেলেদের পাশে দাঁড়ানোই উচিত আমার I”

ভারতকে হারানোর এমন সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া হওয়ায় হতাশ বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ জেমি ডে I তিনি বলেন, “অপ্রত্যাশিত ভাবে ভাল খেলেছি আমরা I ভারতকে হতাশ করে তুলেছিলাম আমরা I যে পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম, সেই পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলেছে আমার ছেলেরা I ম্যাচের একেবারে শেষ দিকে গোল খাওয়ায় খুব হতাশ লাগছে I এখানে এসে প্রায় ৬৫ হাজার সমর্থকের সামনে যে ভারতকে হারানোর মতো জায়গায় যেতে পারব, তা ভাবতেই পারিনি I এখান থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফেরাটাই তাই আমাদের কাছে আনন্দের I” প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে প্রথম দুই ম্যাচে হারার পরে এই প্রথম পয়েন্ট পেল বাংলাদেশ I  

হারলেও অবশ্য কলকাতার ফুটবলপ্রেমী দর্শকদের কখনও ভুবলবেন না বলে জানিয়ে দিলেন ইগর স্টিমাচ I ১৯৯৮-এর বিশ্বকাপে ব্রোঞ্জজয়ী ক্রোয়েশিয়া দলের সদস্য বলেন, “জীবনে অনেক বড় বড় ম্যাচ খেলেছি I তবে এই ম্যাচটা সারা জীবন মনে থাকবে I” তিন ম্যাচে দুই পয়েন্ট ভারতের I এশীয় পর্বের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠতে গেলে আর পয়েন্ট হারানো চলবে না ভারতের I এই নিয়ে কোচ বলছেন, “আজ দু’পয়েন্ট হারালাম I এখনও অনেক পয়েন্ট পাওয়া বাকি I সামনে কে, তা না ভেবে এ বার সব ম্যাচ জেতার জন্য নামতে হবে I এই গ্রুপেও আরও একাধিক অপ্রত্যাশিত ফল হবে I দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কী হয় I”