কুয়াদ্রাতের কোচিংয়ে খুবই লাভবান হবে ইস্টবেঙ্গল এফসি, ধারণা ক্লেটন সিলভার
কার্লস কুয়াদ্রাতকে কোচ হিসেবে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া ইস্টবেঙ্গল এফসি-তে। আগামী দুই মরশুমে লাল-হলুদ বাহিনীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন প্রাক্তন হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগজয়ী দলের কোচ কুয়াদ্রাত। ক্লাবের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন লাল-হলুদ শিবিরের ব্রাজিলীয় তারকা ক্লেটন সিলভা। তাঁর মতে, কুয়াদ্রাত আসায় দল খুবই লাভবান হবে।


কার্লস কুয়াদ্রাতকে কোচ হিসেবে নিয়ে আসার সিদ্ধান্তে খুশির হাওয়া ইস্টবেঙ্গল এফসি-তে। আগামী দুই মরশুমে লাল-হলুদ বাহিনীর দায়িত্ব নিতে চলেছেন প্রাক্তন হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগজয়ী দলের কোচ কুয়াদ্রাত। ক্লাবের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন লাল-হলুদ শিবিরের ব্রাজিলীয় তারকা ক্লেটন সিলভা। তাঁর মতে, কুয়াদ্রাত আসায় দল খুবই লাভবান হবে।
কুয়াদ্রাত বেঙ্গালুরু এফসি-র কোচ থাকাকালীনই ক্লেটন ওই ক্লাবে যোগ দেন। বেঙ্গালুরুর হয়ে ১৬টি গোল করেছিলেন তিনি। গত মরশুম শুরুর আগে যোগ দেন ইস্টবেঙ্গল এফসি-তে। ফের ক্লেটন ও কুয়াদ্রাত জুটি বাঁধবেন আগামী মরশুমে।
তাঁর মতে, “কুয়াদ্রাতের যা অভিজ্ঞতা, তাতে ইস্টবেঙ্গল এফসি খুবই লাভবান হবে। ভারতে উনি যথেষ্ট সফল। আর এখানকার ফুটবল সম্পর্কে ওঁর প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে। কোচের এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে”। ‘খেল নাও’ ওয়েবসাইটেএই কথাগুলি বলেন ক্লেটন।
২০১৬ থেকে ২০১৮— ভারতে তাঁর প্রথম পর্বে কুয়াদ্রাত বেঙ্গালুরু এফসি-র সহকারী কোচের পদে ছিলেন ও তাদের ফেডারেশন কাপ, প্রথম হিরো সুপার কাপ জিততে সাহায্য করেন। সেই সময়ে বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে এএফসি কাপের ফাইনালে উঠেছিল।
২০১৮-য় প্রধান কোচ হিসেবে বেঙ্গালুরু এফসি-র দায়িত্ব নেন তিনি। প্রথম মরশুমেই (২০১৮-১৯) দলকে প্রথম হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করেন কুয়াদ্রাত। তাঁরই প্রশিক্ষণে বেঙ্গালুরু একই মরশুমে লিগসেরা ও ট্রফিজয়ী দুইই হয়। অর্থাৎ, তিনি ভারতে কোচিং করতে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাফল্যই পেয়েছেন। ভারতে সাফল্য পাওয়ার পর তিনি সাইপ্রাস ও ডেনমার্কের দুই ক্লাবে সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেন।
গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ১৪ গোল করেন যিনি, সেই ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার ক্লেটন মনে করেন, “এই ভূমিকায় কুয়াদ্রাতের চেয়ে যোগ্য আর কেউ নেই। ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে ওঁর সম্পর্কও খুব ভাল। তরুণ খেলোয়াড়দের কী ভাবে উন্নতি করতে হয়, তা উনি খুব ভাল করে জানেন”।
হিরো আইএসএলে যে বার থেকে খেলা শুরু করেছে ইস্টবেঙ্গল, সেই মরশুম থেকেই তারা ফর্মের অভাবে ভুগছে। অভিষেক মরশুমে তারা ছিল লিগ টেবলের নয় নম্বরে। গত মরশুমে তারা ছিল সর্বশেষ স্থানে, ১১-য় এবং এ বার ফের সেই নয়ে। এখন পর্যন্ত এর ওপরে উঠতে পারেনি তারা।
তাই একটা বড় চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ বার ভারতে আসছেন কুয়াদ্রাত। শতাব্দী প্রাচীন এই ক্লাবের দায়িত্ব পালন নিয়ে তিনি সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যে ক্লাবের এমন দীর্ঘ ইতিহাস, সেই ক্লাবের খেলোয়াড় বাছাই এবং তাদের সম্পর্কে তথ্য জোগাড়ের কাজ অনেক ভাল হওয়া দরকার। সঠিক সময়ে খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা পাকা করা উচিত। নতুন প্রতিভাদের কারা আগে সই করাতে পারছে, এটা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ইউরোপে গত দশ বছর ধরে এটা চলছে। ভারতেও এখন নতুন প্রতিভাদের দলে এনে তাদের তৈরি করে তোলা হচ্ছে”। ‘স্পোর্টস্টার’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথাগুলি বলেন লাল-হলুদের নতুন কোচ।
মনবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোকে কত দ্রুত সই করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান, স্মৃতি রোমন্থন করতে গিয়ে সেই ঘটনার কথা টেনে আনেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “মনবীরকে আমি প্রথম দেখি সন্তোষ ট্রফিতে। গোয়ায় খেলোয়াড় বাছাই করতে গিয়েছিলাম তখন। মনবীরকে আমাদের বেশ পছন্দ ছিল”। কিন্তু কয়েকদিনের মধ্যেই মনবীর ও লিস্টনকে নিয়ে নেয় সবুজ-মেরুন শিবির।
ভারতীয় ফুটবল নিয়ে তাঁর দুর্বলতার কথা প্রকাশ করে কুয়াদ্রাত জানান, “এখানকার ফুটবলের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের অনেককে চিনি আমি। অনেক কোচকেও চিনি। এ দেশের ফুটবলের বিবর্তনের সাক্ষী হতে চাই আমি। ভারতীয় ফুটবলকে ভালবাসি। প্রায়ই ভাবি, নিশ্চয়ই কোনও দিন এ দেশের কোনও প্রতিভাবান ফুটবলারকে ইউরোপের ফুটবলে খেলার যোগ্য করে তুলতে পারব। কোচ হিসেবে তাকে বা তাদের উন্নত করে তোলার চেষ্টা করব”।
ফুটবলজীবনে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৮ ডিফেন্ডার হিসেবে এফসি বার্সেলোনার সবকটি যুব দলের হয়ে খেলেছেন কুয়াদ্রাত। ১৯৮৬ ও ১৯৮৭-তে বার্সেলোনা এফসি-র যে অনূর্ধ্ব ১৯ দল স্প্যাানিশ কাপ জেতে, সেই দলেরও সদস্য ছিলেন তিনি। বার্সেলোনার প্রথম দলের জার্সি গায়ে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে খেলেছেন যেমন, তেমন স্পেনের অনূর্ধ্ব ১৬ দলের হয়ে ১৯৮৫-র উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও দলকে তৃতীয় স্থানে থাকতে সাহায্য করেছিলেন।