আইএসএলের টিফো-বৃত্তান্ত: সাফল্য, উদ্দীপনা, ফুটবল সংস্কৃতির বার্তাবাহক
টিফোর মাধ্যমে স্মরণ করা হয় এমন এক মুহূর্তকে, যা মেরিনারদের কাছে শুধুমাত্র একটি জয় নয়, জাতীয় গর্ব এবং সংগ্রামের প্রতীকও।

এ যুগে ফুটবল যে এখন মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ, এ কথা বোধহয় ঠিক না। ফুটবল এখন মাঠের সঙ্গে সঙ্গে চলে গ্যালারিতেও। মাঠে ফুটবলাররা যেমন কী করছেন, কেমন খেলছেন, তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই গ্যালারিতে সমর্থকেরা কতটা তৎপর, প্রিয় দলের জন্য কারা কতটা গলা ফাটাচ্ছে, এর ওপরেও নির্ভর করে অনেক কিছু। ইন্ডিয়ান সুপার লিগে খেলা ফুটবলার, কোচেরা বারবার স্বীকার করেছেন, সমর্থকেরাই তাদের দ্বাদশ ব্যক্তি। মাঠে যখন ফুটবলাররা হতোদ্যম হয়ে পড়েন, কোচের কৌশল কাজে লাগে না, তখন সমর্থকেরাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। এ কথা জানিয়েছেন স্বয়ং ফুটবলাররা।
এই লেখাটি ইংরেজিতে পড়তে এখানে -> ক্লিক করুন
কলকাতার তিন দলের খেলা দেখতে প্রতি ম্যাচেই গ্যালারিতে উপস্থিত থাকেন হাজার হাজার সমর্থক। তারাই তাদের প্রিয় দলের ফুটবলারদের উৎসাহিত ও উজ্জীবিত করে নানা ভাবে। কখনও তারা স্লোগান দেয়, কখনও গান করে, কখনও চিৎকার করে ফুটবলারদের পরামর্শও দেয় সমর্থকেরা। তবে সমর্থকদের সঙ্গে ফুটবলারদের যোগাযোগের সবচেয়ে ভাল মাধ্যম হল বিশাল বিশাল টিফো বা ব্যানার, যা আইএসএলের আসরে নিয়মিত দেখা যায়।
মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের একাধিক খেলোয়াড়কেই বলতে শোনা গিয়েছে, কলকাতা ডার্বিতে যখন তারা মাঠে নেমেই যখন গ্যালারির শব্দব্রহ্ম তাদের কানে আসে, তখনই তাদের বুকের ভিতরে যেন আগুন জ্বলে ওঠে। সেই আগুনে ঘৃতাহুতি দেয় এই অসাধারণ সব টিফো, যা খেলার শেষ মিনিট পর্যন্ত দেখা যায় গ্যালারিতে।
ফুটবল বিশ্বে বৃহত্তম!

১৯১১ সালে তাদের প্রিয় ক্লাবের ঐতিহাসিক আইএফএ শিল্ড জয়ে ইস্ট ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টকে হারানোর ঘটনা মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট সমর্থকদের কাছে বরাবরই এক গর্ব। সেই ইতিহাসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে একবার এক বিশাল টিফো যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দেখা গিয়েছিল, যার কথা হয়তো অনেকেরই মনে আছে। ক্লাবের সমর্থকদের অন্যতম প্রধান গোষ্ঠী ‘মেরিনার্স বেস ক্যাম্প’ একটি হাতে আঁকা টিফো প্রকাশ করে, যা ছিল প্রায় ২৫,৫০০ বর্গফুটের। ক্লাবের অফিসিয়াল সোশ্যাল হ্যান্ডলে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এটি সম্ভবত ফুটবল বিশ্বের হাতে আঁকা বৃহত্তম টিফো।
২০২৫-এর ২৭ জানুয়ারি, বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচে ঘরের মাঠে এই টিফো উন্মোচন করা হয়। এই টিফোর মাধ্যমে স্মরণ করা হয় এমন এক মুহূর্তকে, যা মেরিনারদের কাছে শুধুমাত্র একটি জয় নয়, জাতীয় গর্ব এবং সংগ্রামের প্রতীকও। টিফোর পাশাপাশি গ্যালারি থেকে একটি বিশাল ব্যানারও উড়িয়ে দেওয়া হয়, যেখানে লেখা ছিল হৃদয় স্পর্ষ করা এক বার্তা: “Our legacy isn't just history, but the heartbeat of a nation of patriots.” (আমাদের ঐতিহ্য কেবল ইতিহাস নয়, এক দেশপ্রেমিক জাতির হৃদস্পন্দন)। সেই দিনটিকে আরও স্মরণীয় করে তোলে লিস্টন কোলাসোর এক দুর্দান্ত গোল, যা বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ১-০ জয় এনে দেয়।
লাল-হলুদ সংগ্রামের প্রতীক

তবে শুধু মোহনবাগান সুপার জায়ান্টই নয়, ইস্টবেঙ্গল এফসি-র সমর্থকদেরও এ রকম উৎসাহ রয়েছে যথেষ্ট। আইএসএলে যোগ দেওয়ার পর থেকে লাল-হলুদ বাহিনী তেমন ভাল ফল না করতে পারলেও দলের পাশে তারা সব সময়ই থাকে।
ভারতে আলট্রাস সংস্কৃতির পথপ্রদর্শক হিসেবে ব্যাপক ভাবে স্বীকৃত ‘ইস্টবেঙ্গল আলট্রাস’। শুধু এই সংস্কৃতিকে ভারতীয় ফুটবলে পরিচিত করে তোলার জন্যই নয়, প্রিয় দলের প্রতি তাদের অবিচল সমর্থন, দলের উত্থান-পতনের প্রতি মুহূর্তে গ্যালারিতে সরব এবং উজ্জ্বল থাকার জন্যও সুপরিচিত লাল-হলুদ সমর্থকেরা।
২০২৪–২৫ আইএসএল মরশুম শুরুর আগেই ইস্টবেঙ্গল এফসি কঠিন এক পথ পাড়ি দেয়। ডুরান্ড কাপ এবং এএফসি কাপের প্রাথমিক রাউন্ড থেকে বিদায় দলটির উপর প্রভাব ফেলে। আইএসএল-এর প্রথম দুই ম্যাচে টানা দুই হারে সেই চাপ আরও বেড়ে যায়। কিন্তু মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার বদলে আলট্রাসরা সাহসের সঙ্গে পাশে দাঁড়ায়, ঠিক তখনই, যখন তাদের বেশি প্রয়োজন ছিল।
মরশুমের প্রথম হোম ম্যাচে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ইস্টবেঙ্গল আলট্রাস অসাধারণ এক টিফো উন্মোচন করে, যেখানে সমর্থকদের দলকে সমর্থন জানাতে দেখা যায়। কেউ ঢাক বাজাচ্ছে, কেউ উচ্চস্বরে স্লোগান দিচ্ছে, হার মানছে না। টিফোর পাশাপাশি একটি সাহসী ব্যানারও তুলে ধরা হয়, যা ছিল একসঙ্গে সমর্থনের বার্তা ও চ্যালেঞ্জ— "Ain’t nothing wrong with going down. It’s staying down that’s wrong" (পড়ে যাওয়ায় দোষ নেই, কিন্তু পড়ে থাকাটাই দোষের)।
মহমেডানের উদ্দীপনার প্রতীক

কলকাতার তিন প্রধানের অন্যতম, মহমেডান এসসি পরিচিত তাদের বিশাল এবং নিবেদিত সমর্থকগোষ্ঠীর জন্য। আইএসএলে ক্লাবের অভিষেক মরশুমেও সেই সমর্থকেরা কোনওভাবেই হতাশ করেনি। দলের প্রথম মরশুম ভাল না যাওয়া সত্ত্বেও গ্যালারিতে সমর্থকরা ছিলেন যথেষ্ট উজ্জীবিত। প্রতি হোম ম্যাচে যথেষ্ট সংখ্যায় এসেছিলও তারা।
আইএসএলে তাদের প্রথম কলকাতা ডার্বিতে, মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে মহমেডান সমর্থকেরা একটি আবেগে ভরা টিফো প্রকাশ করে। টিফোতে দেখা যায় এক শিশু তার বাবার কাঁধে চড়ে স্টেডিয়ামের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং বার্তা বহন করে। ফুটবলের প্রতি ভালবাসা ও আনুগত্য কীভাবে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে, তারই প্রতীক এই টিফো।
‘মাঞ্জাপ্পাড়া’-র উন্মাদনার ফসল

এই টিফো সংস্কৃতি বাংলার বাইরে আইএসএলে খেলা আরও বিভিন্ন দলের রাজ্যেই রয়েছে। যেমন কেরালা। আবেগ ও উন্মাদনায় কেরালা ব্লাস্টার্স এফসির সমর্থকেরা মাঝে মাঝে বাংলার সমর্থকদেরও ছাপিয়ে যায়। ‘মাঞ্জাপ্পাড়া’ বহুদিন ধরেই পরিচিত তাদের তুমুল গর্জন, জোরালো স্লোগান এবং প্রতিপক্ষ দলের জন্য এক ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য।
𝘼𝙨𝙞𝙖’𝙨 𝙗𝙞𝙜𝙜𝙚𝙨𝙩 🫡💛
— Kerala Blasters FC (@KeralaBlasters) December 12, 2022
A historic moment in Kaloor as @kbfc_manjappada unveiled the Largest Tifo in Asian Football History (11025 sq. ft) 🙌#KBFCBFC #ഒന്നായിപോരാടാം #KBFC #KeralaBlasters pic.twitter.com/tzbCFNMAEU
২০২২-এর ১১ ডিসেম্বর কোচিতে তারা এশিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম টিফো প্রকাশ করে। একটি বিশাল ১১,০২৫ বর্গফুটের সেই টিফো। যা প্রকাশ করা হয় তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে। এই টিফোতে দেখা যায় সেই সময়কার প্রধান কোচ ইভান ভুকোমানোভিচকে, চারপাশে আগ্রাসী সমর্থকদের সঙ্গে, যা দলের সঙ্গে সমর্থকদের ঐক্যের দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে উঠে আসে। স্টেডিয়ামের পরিবেশ ছিল উত্তেজনায় কাঁপার মতো— হলুদ জার্সিতে হাজার হাজার সমর্থক একসঙ্গে লাফিয়ে গর্জন করছিলেন।
সেই রোমাঞ্চকর ম্যাচে ব্লাস্টার্স ৩–২-এ বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে সেই রাত আরও স্মরণীয় করে তোলে। অবশ্য, মাঞ্জাপ্পাড়া বিভিন্ন সময়ে আরও অনেক টিফো প্রকাশ করেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় হৃদয়স্পর্শী শ্রদ্ধার্ঘ্য-সহ এই সুবিশাল টিফো এখনও পর্যন্ত তাদের অন্যতম স্মরণীয় উদ্যোগ।
নীল-বাহিনীর দশকপূর্তির সেরা উপহার

এই ব্যাপারে বেঙ্গালুরু এফসি-র সমর্থকেরাও কম যায় না। বেঙ্গালুরু এফসির আবেগপ্রবণ সমর্থকেরা, বিশেষ করে 'ওয়েস্ট ব্লক ব্লুজ', অনেক দিন ধরেই পরিচিত তাদের মনে রাখার মতো ব্যানার, জোরালো স্লোগান এবং ক্লাব ও দেশের প্রতি অবিচল সমর্থনের জন্য। গ্যালারিতে তাদের উপস্থিতি, উচ্চস্বরে চিৎকার হোক বা সাহসী দৃশ্য-সহ বার্তা, প্রতি ম্যাচের পরিবেশকে তারা সব সময়ই অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে।
২০২৩-এর ৪ অক্টোবর, মরশুমের তৃতীয় ও প্রথম হোম ম্যাচের দিন, ওয়েস্ট ব্লক ব্লুজ একটি মনোমুগ্ধকর হাতে আঁকা টিফো প্রকাশ করে ক্লাবের ১০ বছরের পথচলা উদযাপন করে। টিফোতে লেখা ছিল,
"A Decade of Blue. In this together, always." (নীল-বাহিনীর এক দশক। একসাথে, চিরকাল)।
সেই টিফো ছিল আবেগ, ঐতিহ্য ও পরিচয়ের এক নিখুঁত মিশেল।
TONIGHT WAS LIT! 🔥
— Bengaluru FC (@bengalurufc) October 4, 2023
Here's to 10 years of us and you in Bengaluru blue! 🔵#WeAreBFC #BFCEBFC #Santhoshakke pic.twitter.com/AhHHGxyT6J
সেই টিফোতে ফুটে উঠেছিল ক্লাবের প্রতীকী দুই-মাথাওয়ালা ঈগল, গত দশকে অর্জন করা ট্রফিগুলি এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রীর এক ছায়ামূর্তি। সেই রাতও স্মরণীয় হয়ে ওঠে বেঙ্গালুরু এফসি তাদের মরশুমের প্রথম জয় তুলে নেওয়ায়। পুরনো প্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গল এফসির বিরুদ্ধে দুর্দান্ত এক কামব্যাকও করে তারা, যা সেই মুহূর্তকে আরও বিশেষ করে তোলে।
উত্তর-পূর্বের গর্বের প্রতীক

এ বার আসা যাক প্রতিবেশী রাজ্যের দল নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র সমর্থকদের টিফো-সংস্কৃতি প্রসঙ্গে। এক টিফোর মাধ্যমে আসাম এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসির সমর্থক গোষ্ঠী ‘হাইল্যান্ডার ব্রিগেড’। ২০২৩–২৪ আইএসএল মরশুমে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে তাদের প্রথম হোম ম্যাচে একটি বিশাল, হাতে আঁকা টিফো প্রস্তুত করে, যা ছিল প্রায় ১২,০০০ বর্গফুটের।
এই টিফোতে ফুটে উঠেছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য—এই ভূমি, এখানকার মানুষ এবং তাদের বিশুদ্ধ আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা। সেই টিফোর কেন্দ্রে ছিল জ্বলজ্বলে তিনটি শব্দ, যার মানে করলে দাঁড়ায়, ‘রক্ত, ঘাম ও বীরত্ব’, যা এই অঞ্চলের আবেগ ও গর্বকে তুলে ধরে। ভারতীয় ফুটবলে প্রতিভার এক উল্লেখযোগ্য উৎস্য এই উত্তর-পূর্বাঞ্চল। এই টিফো ছিল তারই আর এক স্মরণীয় দৃষ্টান্ত— ফুটবল যে কত গভীরভাবে এই অঞ্চলের পরিচয়ের সঙ্গে জড়িয়ে আছে, তার এক নিঃশব্দ ও দৃঢ় ঘোষণা এটি।
নিজামের শহরে সাফল্যের শ্রদ্ধার্ঘ্য

সব শেষে হায়দরাবাদ এফসি-র সমর্থকদের টিফোর কথা না বললেই নয়। প্রধান কোচ মানোলো মার্কেজের আমলে নিজামের শহরের ফুটবল দল এক স্বপ্নের উত্থান দেখেছিল, যার চূড়ান্ত সাফল্য আসে ২০২১–২২ মরশুমে, তাদের প্রথম আইএসএল কাপ জয়ে। সেই ঐতিহাসিক সাফল্য উদযাপন করতে সমর্থকেরা ২০২২-এর অক্টোবরে এক অনন্য উপায়ে ক্লাবকে শ্রদ্ধা জানায়, তিনটি পৃথক টিফোর মাধ্যমে। ম্যাচটি হায়দরাবাদ ১–০-য় হারায় এফসি গোয়াকে।
প্রথম টিফোটিতে দেখা যায় বালাক্লাভায় (হনুমান টুপি জাতীয়) মুখ ঢাকা এক হায়দরাবাদ এফসি সমর্থক লিখেছেন, “ভারতীয় ফুটবলের আসল জায়ান্ট কারা?” দ্বিতীয় টিফোটি ছিল হায়দরাবাদ শহরকে নিয়ে, যেখানে সেই শহরে ‘চ্যাম্পিয়নদের শহর’ আখ্যা দেওয়া হয়। তৃতীয় টিফোটি ফিরিয়ে আনে সেই উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনালের স্মৃতি, যেখানে কেরালা ব্লাস্টার্স এফসির বিপক্ষে টাইব্রেকারে জয় পেয়েছিল হায়দরাবাদ। সেখানে দেখা যায় সেই মুহূর্তের ছবি ও কোচ মানোলো মার্কেজের ছবি, সঙ্গে লেখা, ‘আমরা একবার পেরেছিলাম, আবার পারব’। এই তিনটি টিফোর সমন্বয় ছিল উৎসবের এবং হায়দরাবাদ এফসি সমর্থকদের গর্ব ও আনন্দের এক প্রাণবন্ত বহিঃপ্রকাশ।