মায়ানমারকে ১-০-য় হারানোর পরে এ বার ভারত মুখোমুখি কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের। গত বছর এই দলটির বিপক্ষে দুটি ম্যাচে খেলে ভারত। একটি ম্যাচ জেতে ও একটি হারে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইম্ফলের খুমান লম্পক স্টেডিয়ামে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত চলতি হিরো ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টে কিরগিজদের হারাতে পারলে এই টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হবে ভারত। কিন্তু মোটেই সহজ হবে না এই ম্যাচ।

অনিরুদ্ধ থাপার গোলে ভারত মায়ানমারকে হারানোর পরে মায়ানমার ও কিরগিজদের ম্যাচ ১-১-এ অমীমাংসিত থাকে। ম্যাচের একেবারে শেষ মিনিটে গোল করে হার বাঁচান কিরগিজরা। তাই ভারতীয় ফুটবলপ্রেমীদের আশা, ভারত এই ম্যাচে জিতে চ্যাম্পিয়ন হতে পারে।  

তবে ফিফা ক্রমতালিকায় তাদের চেয়ে ১১ ধাপ ওপরে থাকা দলটিকে হারাতে হলে ওদের যে শুধু দক্ষতায় হারালে চলবে না, শারীরিক ফুটবল খেলে পাল্টা আক্রমণও করা দরকার—এমনই একাধিক পথ বাতলাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু ভারতীয় দলের ফুটবলাররা, যাঁরা কঠিন পরীক্ষা দিতে নামবেন মঙ্গলবার, তাঁরা কী বলছেন, জেনে নেওয়া যাক।        

সুনীল ছেত্রী, ভারতীয় অধিনায়ক, ফরোয়ার্ড

কিরগিজ ফুটবলাররা শারীরিক ভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী। মায়ানমারের বিরুদ্ধে ওদের খেলা দেখে বোকা বনে যাবেন না। কারণ, ওরা খুবই ভাল দল। ওদের শেষ দশটা ম্যাচ আমরা দেখেছি। বিশ্বাস করুন, ওরা সত্যিই ভাল দল। ওদের বিরুদ্ধে এর আগে যত ম্যাচ খেলেছি, প্রতিটিই কঠিন ছিল। প্রথম ম্যাচে দর্শকদের কাছ থেকে যা সমর্থন পেয়েছি, তা এক কথায় অসাধারণ। গ্যালারিতে প্রচুর বাচ্চা মেয়ে ও তাদের মায়েদেরও দেখেছি। বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন আমাদের খেলা দেখতে। এগুলো সত্যিই খুব ভাল। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার ইম্ফলে এসেছি আমি। তবে খেলছি প্রথমবার। বুঝতে পারছি, কেন এখানকার লোকেরা ফুটবলের জন্য পাগল। আশা করি, কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমরা অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখাতে পারব এবং একটা ভাল ফল অর্জন করতে পারব।                              

লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে, মিডফিল্ডার

কিরগিজ প্রজাতন্ত্র খুব ভাল দল। অতীতে ওদের বিরুদ্ধে আমরা ভাল খেলেছি। ক্রমতালিকায় ওরা আমাদের (১০৬) চেয়ে ওপরে (৯৪) আছে। তবে আমরা নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য তৈরি। শারীরিক ও মানসিক ভাবে আমরা যথেষ্ট ভাল অবস্থায় রয়েছি। আশা করি, দুর্দান্ত একটা ম্যাচ হবে। প্রথম ম্যাচে গ্যালারিতে একটাও সিট খালি ছিল না। অসাধারণ অভিজ্ঞতা হয়েছে সে দিন। মুখ্যমন্ত্রীও এসেছিলেন খেলা দেখতে। প্রেরণাদায়ক কথাও বলে যান তিনি। মণিপুরকেই সে দিন নিজেদের ঘরবাড়ি বলে মনে হচ্ছিল। আশা করি কিরগিজদের বিরুদ্ধে ম্যাচে এরকমই বা এর চেয়েও বেশি দর্শক খেলা দেখতে আসবেন।

গুরপ্রীত সিং সান্ধু, গোলকিপার

মায়ানমার ও কিরগিজ প্রজাতন্ত্রের মধ্যে ম্যাচে দুই দলের মধ্যে বড়সড় কোনও ফারাক চোখে পড়েনি আমার। ম্যাচের বেশিরভাগ সময়ে দু’পক্ষই প্রায় সমানে সমানে লড়েছে। কিরগিজদের বিরুদ্ধে আমাদের আরও শরীর দিয়ে খেলতে হবে এবং সঙ্ঘবদ্ধ থাকতে হবে। আমাদের সেরা বল-স্কিল দেখাতে হবে। বল পায়ে রাখো আর নিখুঁত পাস দাও। ২০১৯-এর এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ওদের বিরুদ্ধে দু’বার খেলেছি। বেশ হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে দু’বারই। ঘরের মাঠে ওদের বিরুদ্ধে যে ১-০-য় জিতেছিলাম, সেটাই ভারতের হয়ে এখন পর্যন্ত আমার অন্যতম সেরা ম্যাচ। ওদের আগেও ভাল ভাল অ্যাটাকিং প্লেয়ার ছিল, এখনও আছে। বল পায়ে ওরা ভয়ঙ্কর।     

অমরিন্দর সিং, গোলকিপার

যে কোনও ম্যাচে সুযোগ পেলেই নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করি আমি। পরের ম্যাচেও সেই চেষ্টাই থাকবে। কোচ মাঠে ও মাঠের বাইরে আমাকে যথেষ্ট সাহস ও আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছেন। ট্রেনিংয়েও পরিশ্রম করি। বিশ্রাম, ঘুম, খাওয়াদাওয়া যথেষ্ট পরিমানে করি। নিজের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। এটা বজায় রাখতে চাই।