রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে সেরা দুই বেঙ্গালুরু এফসি, কেরালা ব্লাস্টার্স এ বার নেক্সট জেন কাপের পথে
হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অংশগ্রহনকারী দুই দল বেঙ্গালুরু এফসি এবং কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি এ বছরের শেষে ইংল্যান্ডে নেক্সট জেন কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিল। চলতি রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে সেরা দুই স্থানে থাকায় এই যোগ্যতা অর্জন করল তারা।


হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে অংশগ্রহনকারী দুই দল বেঙ্গালুরু এফসি এবং কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি এ বছরের শেষে ইংল্যান্ডে নেক্সট জেন কাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিল। চলতি রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে সেরা দুই স্থানে থাকায় এই যোগ্যতা অর্জন করল তারা।
এই দুই ক্লাব প্রিমিয়ার লিগে খেলা একাধিক ক্লাবের যুব দলের বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবে এই টুর্নামেন্টে। অর্থাৎ প্রিমিয়ার লিগে যে দলগুলি দাপিয়ে বেড়ায়, তাদের অ্যাকাডেমি দলগুলির বিরুদ্ধে খেলার সুযোগ পাবেন ভারতের উঠতি ফুটবলাররা। দেশে ফিরে ক্লাব ও জাতীয় দলের হয়ে মাঠে এই অমূল্য অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে তাঁদের। এমনকী, প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবগুলি ডিজিটাল মাধ্যমে তাদের বিভিন্ন ওয়ার্কশপ থেকে উঠে আসা গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও সরবরাহ করবে হিরো আইএসএলে অংশগ্রহনকারী ক্লাবগুলিকে।
চলতি রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে ছ’টি ম্যাচ থেকে ১৮ পয়েন্ট সংগ্রহ করে বেঙ্গালুরু এফসি এবং সমসংখ্যক ম্যাচে ১৫ পয়েন্ট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান সুরক্ষিত করে ফেলেছে। ফলে একটি করে ম্যাচ বাকি থাকতেই তাদের ইংল্যান্ডে যাওয়ার রাস্তা তৈরি হয়ে গেল। বেঙ্গালুরুর দল তাদের সব ক’টি ম্যাচেই জেতে এবং কেরালা ব্লাস্টার্স মাত্র একটিতে হারে।
ছ’টি করে ম্যাচ খেলে দশ পয়েন্ট করে পেয়ে তিন ও চার নম্বরে রয়েছে যথাক্রমে হায়দরাবাদ এফসি এবং এফসি গোয়া। রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ইয়ং চ্যাম্পস্ ও জামশেদপুর এফসি সাত পয়েন্ট করে পেয়ে রয়েছে পরের দুই স্থানে। তবে মুম্বই সিটি এফসি ও চেন্নাইন এফসি এ পর্যন্ত কোনও ম্যাচ জিততে না পারায় লিগ টেবলে শেষ দুই স্থানে রয়েছে।
২০০১-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে যাঁদের জন্ম হয়েছে, সেই ফুটবলাররা এই লিগে অংশ নিচ্ছেন। তবে প্রতি দলে পাঁচজন করে এমন ফুটবলারকেও খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাঁদের জন্ম ১৯৯৯-এর ১ জানুয়ারি বা তার পরে। প্রথম এগারোয় এ রকম তিনজন ফুটবলার রাখার নিয়ম রয়েছে। কোনও দলে কোনও বিদেশি ফুটবলার রাখার নিয়ম নেই।
হিরো আইএসএল চলাকালীন প্রতি ক্লাবকে তাদের যুব ফুটবলের উন্নতির জন্য যথেষ্ট সাহায্য করে রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন। এই উদ্যোগ ভারতকে আগামী কয়েক বছরে ফুটবলের অন্যতম সেরা শক্তি হিসেবে গড়ে তোলার পিছনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যা সফল হলে ভারতীয় ফুটবল এমন এক জায়গায় পৌঁছে যেতে পারবে, যেখানে এর আগে কখনও পৌঁছনো যায়নি।
রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ইয়ং চ্যাম্পস্ দলের কোচ ও প্রাক্তন ভারতীয় ফুটবলার আরাতা ইজুমি এই লিগের প্রশংসা করে বলেছেন, “দেশের তরুণ ফুটবলারদের যথাসম্ভব সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার জন্য এই ডেভলপমেন্ট লিগ অসাধারণ উদ্যোগ। এখানে বিভিন্ন ক্লাবের কোচ ও স্কাউটরা রয়েছেন, যারা প্রতিভা খুঁজে পাবেন এখান থেকেই”।
সম্প্রতি আইএসএল ডিজিটালকে দেওয়া এক ভার্চুয়াল সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, “এই লিগ দেশের কিশোর, তরুণদের ফুটবলকে পেশা হিসেবে নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করবে। শুধু খেলোয়াড়রাই নয়, তাদের বাবা-মায়েরাও উৎসাহিত হবেন। কারণ, কিশোর, তরুণদের সামনে একটা লক্ষ্য হিসেবে থাকবে এই লিগ”।
তাঁর মতে, “আমরা এখানে খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত উন্নতির ওপর জোর দিই। সে জন্যই আমরা নির্দিষ্ট নীতি অনুসরণ করে খেলি এখানে। প্রত্যেক ফুটবলারকে ফুটবলটাকে আরও ভাল করে বুঝতে সাহায্য করি”। সেরা দুই দলের নেক্সট জেন কাপে খেলার সুযোগ পাওয়ারও প্রশংসা করেন আরাতা।
রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগ চলাকালীন প্রিমিয়ার লিগ বিশেষজ্ঞদের এক কোচিং ওয়েবিনার নিয়ে তিনি বলেন, “আমরা, ডেভলপমেন্ট লিগের দলের কোচেরা, সম্প্রতি প্রিমিয়ার লিগের একটি ওয়েবিনারে অংশ নিই, যেখানে সব কিছুই খুব গভীরে গিয়ে বিশ্লেযণ করে আমাদের সামনে তুলে ধরা হয়। বক্তারা যথেষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন। যখনই এই ধরনের কোনও সন্মেলনে যাই, তখনই নিজেকে আরও আত্মবিশ্বাসী মনে হয়। আমরা এখানে যা করছি, তা ওদের দেখানো পথ অনুসরণ করেই করছি”।
আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটেয়ে গোয়ার বেনলিমে লিগের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে লিগ তালিকায় থাকা দুই সেরা দল। তাদের এই ম্যাচের পরেই বোঝা যাবে, প্রথম রিলায়্যান্স ফাউন্ডেশন ডেভলপমেন্ট লিগে চ্যাম্পিয়ন হবে কারা। এই দৌড়ে অবশ্য এগিয়ে বেঙ্গালুরুই। পয়েন্ট ও গোলপার্থক্যের দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে তারাই। তবে অঘটন ঘটিয়ে বড় ব্যবধানে বেঙ্গালুরুকে হারাতে পারলে সেরার শিরোপা জিতে নিতে পারে কেরালার দলও।