গত বার হিরো আইএসএলে দু’বারের মুখোমুখিতে দু’বারই চিরপ্রতিদ্বন্দী এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়েছিল এটিকে মোহনবাগান। এ বার কি সেই হারের বদলা নিতে পারবে লাল-হলুদ বাহিনী? তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ২৭ নভেম্বর রাত পর্যন্ত। ওই দিন আসন্ন হিরো আইএসএলের প্রথম ডার্বি, তিলক ময়দানে, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা থেকে।

সোমবার দুপুরে হিরো আইএসএলের যে ক্রীড়াসূচী প্রকাশ করেছে দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগের উদ্যোক্তা ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটিড (এফএসডিএল), তাতে আপাতত এই দিনটাই ধার্য করা হয়েছে বাংলার দুই চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাবের দ্বৈরথের জন্য। আপাতত প্রথম এগারো রাউন্ডের সূচী ঘোষণা করা হয়েছে। তাই প্রথম ডার্বির দিনক্ষণ জানা গিয়েছে। দ্বিতীয় ডার্বি কবে, তা জানা যাবে হয়তো ডিসেম্বরে।

গত বারই প্রথম হিরো আইএসএলে অংশ নেয় এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গল। সবুজ-মেরুন বাহিনী শেষ পর্যন্ত রানার্স হলেও লাল-হলুদ ব্রিগেড লিগ তালিকার ন’নম্বরে থেকে লিগ শেষ করে। গত বার এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রথম ম্যাচই ছিল এটিকে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে। হাই ভোল্টেজ ম্যাচ দিয়ে দেশের এক নম্বর লিগের অভিযান শুরু করাটা অবশ্য স্মরণীয় হয়ে থাকেনি তাদের। চিরপ্রতিদ্বন্দীদের কাছে ০-২ গোলে হারতে হয় তাদের।

তবে এ বার আর শুরুতেই ডার্বি খেলতে হবে না এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। এ বার কলকাতা ডার্বি হতে চলেছে তাদের দ্বিতীয় ম্যাচ। এটিকে মোহনবাগানের কাছেও তাই। যেমন গতবারেও ছিল। দুই দলই ২৭ নভেম্বর ডার্বিতে নামার আগে একটি করে ম্যাচ খেলে নিতে পারবে।

এটিকে মোহনবাগান তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ১৯ নভেম্বর, ফতোরদার জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে, কেরালা ব্লাস্টার্স এফসি-র বিরুদ্ধে। গতবারেও কেরালার দলের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়েই লিগ শুরু করেছিল সবুজ-মেরুন শিবির। যে ম্যাচে তারা ১-০ গোলে জিতেছিল। অন্য দিকে, এসসি ইস্টবেঙ্গল এ বার প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হতে চলেছে প্রতিবেশী রাজ্যের দল জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে। গত বার তাদের বিরুদ্ধে প্রথম ম্যাচে গোলশূন্য ড্র করেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। ফিরতি ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছিল তারা।

ডার্বি খেলার তিন দিন পরেই এটিকে মোহনবাগানকে মুখোমুখি হতে হবে আর এক কঠিন প্রতিদ্বন্দী গতবারের লিগশিল্ড জয়ী ও চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি-র। গত মরশুমে তিনবার মুখোমুখি হয়েছিল এই দুই ক্লাব। একবারও জিততে পারেনি এটিকে মোহনবাগান। মুম্বইয়ের দলের কাছে হেরে যেমন লিগশিল্ড হাতছাড়া হয়েছিল তাদের, তেমনই চ্যাম্পিয়নশিপও হাতছাড়া হয়। তাই এ বার মুম্বইয়ের মুখোমুখি হয়ে হয়তো বদলা নিতে চাইবে এটিকে মোহনবাগান।

আন্তোনিও লোপেজ হাবাস বাহিনীর আর এক বড় গাঁট হিসেবে পরিচিত এফসি গোয়ার সঙ্গে তাদের মুখোমুখি বছরের শেষে, ২৯ ডিসেম্বর ফতোরদাতেই। গতবার অবশ্য এফসি গোয়া একবারও এটিকে মোহনবাগানকে হারাতে পারেনি। প্রথম ম্যাচে ০-১ হেরে যাওয়ার পরে ফিরতি লিগে ১-১ ড্র করে।

লিগের ইতিহাসের আর এক সফল দল সুনীল ছেত্রীর বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে হাবাস-বাহিনী খেলবে ১৬ ডিসেম্বর, বাম্বোলিমে। গতবার সেমিফাইনালে তাদের মুখোমুখি হওয়া নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র মুখোমুখি তারা হবে ২১ ডিসেম্বর ফতোরদায়।

প্রথমার্ধে তাদের অন্যান্য ম্যাচগুলি যথাক্রমে জামশেদপুর এফসি-র বিরুদ্ধে ৬ ডিসেম্বর, বাম্বোলিমে, চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে, ১১ ডিসেম্বর, ফতোরদায়, হায়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে, ৫ জানুয়ারি, ফতোরদায় এবং সেখানেই ৮ জানুয়ারি সবুজ-মেরুন দল খেলবে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে।

অন্য দিকে, প্রথম লেগে এসসি ইস্টবেঙ্গলের সর্বশেষ প্রতিদ্বন্দী গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি। ৭ জানুয়ারি, তিলক ময়দানে। অর্থাৎ দশটি ম্যাচে খেলে নিজেদের অনেকটা গুছিয়ে ও তৈরি করে নিয়ে গতবারের চ্যাম্পিয়নদের মুখোমুখি হতে পারবে মানোলো ডিয়াজের দল। তার তিন দিন আগেই অবশ্য বেঙ্গালুরু এফসি-র মুখোমুখি হবে তারা। গতবার বেঙ্গালুরু এফসি-কে ১-০ হারিয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। তিনটি জয়ের মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। জামশেদপুর ও ওডিশার বিরুদ্ধে অপর দুই জয় পায় তারা। এ বার সেই জামশেদপুরের বিরুদ্ধে শুরুতেই খেলে নেবে, ওডিশার বিরুদ্ধে ম্যাচ ডার্বির দু’দিন পরেই। গতবার লিগের শেষ ম্যাচে ওডিশার কাছে তাদের ৫-৬ হার হয়তো মনে আছে অনেকের।

এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রথম লেগের ম্যাচ ৭ ডিসেম্বর, তিলক ময়দানে। তার চার দিন আগেই তারা মুখোমুখি হবে চেন্নাইন এফসি-র। লাল-হলুদ ব্রিগেডের অন্যান্য ম্যাচগুলি যথাক্রমে ১২ ডিসেম্বর, কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে তিলক ময়দানে। নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ১৭ ডিসেম্বর, ফতোরদায় এবং হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ২৩ ডিসেম্বর, বাম্বোলিমে।

প্রথম লেগে কলকাতার দুই ক্লাবেরই সব ম্যাচ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। দ্বিতীয় লেগের ক্রীড়াসূচী প্রকাশিত হতে পারে ডিসেম্বরে।

ক্রীড়াসূচী বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন এখানে