সুনীল ছেত্রীকে ছাড়াও খেলা ও গোল করা শিখতে হবে দলের অন্যদের: ইগর স্টিমাচ
এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচ ২-০-য় জিতলেও ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ মনে করেন, অন্তত চার গোলে জেতা উচিত ছিল তাদের। বুধবার রাতে কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি গোলই করলেন ভারতীয় ফুটবলের সেরা তারকা সুনীল ছেত্রী। ভারত অধিনায়ক প্রথমে ১৪ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ও ৬০ মিনিটের মাথায় নিখুঁত হেডে কম্বোডিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন।


এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বের প্রথম ম্যাচ ২-০-য় জিতলেও ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ মনে করেন, অন্তত চার গোলে জেতা উচিত ছিল তাদের। বুধবার রাতে কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে দু’টি গোলই করলেন ভারতীয় ফুটবলের সেরা তারকা সুনীল ছেত্রী। ভারত অধিনায়ক প্রথমে ১৪ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন ও ৬০ মিনিটের মাথায় নিখুঁত হেডে কম্বোডিয়ার জালে বল জড়িয়ে দেন।
যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্রায় ২৬ হাজারেরও বেশি ফুটবলপ্রেমীর সামনে ভারতীয় দলের দাপুটে পারফরম্যান্সই বুঝিয়ে দেয় কেন তাদের ফেভারিট বলা হচ্ছে। কিন্তু কেন সুনীলকেই বারবার গোল করে দলকে জেতাতে হবে, কেন অন্যেরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন না, সে প্রশ্নও তুলেছেন ক্রোয়েশিয়ান কোচ। বুধবারের ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের আর কী কী বললেন স্টিমাচ, তা জেনে নেওয়া যাক।
প্রথম ম্যাচে জয় নিয়ে কী বলবেন?
বেশি কিছু বলার নেই। দলের ছেলেদের অনেক ধন্যবাদ। খুব কঠিন পরিবেশ ছিল আজ। ঠিকমতো নিঃশ্বাসও নেওয়া যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় ঠিকমতো অক্সিজেন পাওয়া যায় না, মস্তিষ্কও ঠিকমতো কাজ করে না। ছেলেরা যথাসাধ্য ভাল খেলে ভাল ফলও অর্জন করেছে। এটা খুবই জরুরি ছিল। ওদের কাছে আমি দুটো জিনিস চেয়েছিলাম, গোল এবং গোল না খাওয়া। দু’গোলে জিতে আমি খুশি। তবে তিন-তার গোলে জিততে পারলে আরও খুশি হতাম। পরবর্তী ম্যাচগুলি নিয়ে আমি আত্মবিশ্বাসী।
স্কোরলাইন কেমন হওয়া উচিত ছিল বলে আপনার মনে হয়?
আমরা ম্যাচটা ৪-০-য় জিততে পারলে সঠিক ফল হত। আরও ৪-৫টা ভাল সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। এর মধ্যে আরও দু’টো গোল হলে ভাল হত। তবে আমাদের ছেলেরা অনেক চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারেনি। আপনারা হয়তো সুনীল ও ব্র্যান্ডনকে তুলে নেওয়া অবাক হয়েছেন। কারণ, ওরা তখন খুবই ভাল খেলছিল। আমাদের আরও দুটো ম্যাচ খেলতে হবে ফলে খেলোয়াড়দের সুরক্ষিত রাখতে হবে। আজকের ম্যাচেও সুনীলই দুর্দান্ত খেলল। বাকিরা অনেক চেষ্টা করেছে। তবে গোল করতে পারেনি। আশা করি, লিস্টন (কোলাসো), উদান্ত (সিং), মনবীর (সিং) ও আশিকও (কুরুনিয়ান) গোল করবে। ওদের গোল করা শুরু করতেই হবে, সুনীলকে ছাড়া খেলার অভ্যাস করতে হবে।
এই ম্যাচে কি দল পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলতে পেরেছ বলে আপনার মনে হয়?
প্রত্যেক ম্যাচ থেকেই কিছু না কিছু পাওয়া যায়। খেলোয়াড়দের কাছ থেকে আমি যা চাইছি, তা তারা দিতে পারছে কি না, সেটাই আসল কথা। কোচ প্রতিপক্ষকে বিশ্লেষণ করে তাদের দুর্বলতাগুলো খুঁজে বার করে। খেলোয়াড়দের পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। এটাই তাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে তাদের সমানে চাপে রাখা কঠিন। কিন্তু অপেক্ষাকৃত দুর্বল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে সেটা করা সম্ভব। আমাদের দলে একাধিক তরুণ ফুটবলার আছে, যারা গত কয়েক বছরে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। এ বার তাদের সেগুলো কাজে লাগিয়ে প্রতিদান দিতে হবে। আজ যেমন সুরেশ (সিং), রোশন (সিং), আকাশদের (মিশ্র) দেখে মনে হল ওরা ১০০টা করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে। এরাই আগামী ১০-১২ বছর ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নামবে। ফলও আসতে থাকবে।
রোশনের চোট কতটা গুরুতর?
পেশীতে টান ধরেছে মাত্র। ও সেরে উঠবে। ও যথেষ্ট ফিট। ও খেলে যেতে পারত। তবে আমরা ঝুঁকি নিইনি। শেষ দিকে আমি ওকে বলি, বেশি না এগিয়ে দু’দিকে পাস দিয়ে যাও। এই ধরনের খেলোয়াড়দের আমি পছন্দ করি। ফুটবল যাদের আবেগ এবং যারা জাতীয় দলের জন্য চোট সহ্য করতেও রাজি। যাদের কোনও কিছুতেই ভয় নেই। ও অন্যদের কাছে দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।
দুই পায়েই খেলতে পারে, দলে এমন ফুলব্যাকদের গুরুত্ব কতটা?
এটা আমাদের গোপন অস্ত্র ছিল, যা এখন সবারই জানা হয়ে গিয়েছে। আমি ওদের কমজোরি পা বেশি ব্যবহার করতে বারণ করেছিলাম। কিন্তু ওরা তা করতে শুরু করে দিয়েছে। ঠিক আছে। ওদের এই গুণ আমার পছন্দ। বাচ্চা ছেলেগুলো যদি কঠিন জায়গায় খেলে শুটিং, ক্রসিং এবং বল নিয়ে আক্রমণে ওঠার সময় দুটো পা-ই কাজে লাগাতে পারে, এর চেয়ে ভাল আর কিছুই হতে পারে না। ওদের নিয়ে আমি গর্বিত।