এই ম্যাচে এক পয়েন্ট আমাদের পক্ষে ভাল হল না, বললেন সবুজ-মেরুন কোচ ফেরান্দো

শনিবার চেন্নাইয়ের ম্যাচটা এটিকে মোহনবাগানের কাছে ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই। কিন্তু চেন্নাইন এফসি-র বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র তাদের কিছুটা হলেও পিছিয়ে দিল। এই ম্যাচে জিততে পারলে লিগ টেবলে নিজেদের এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যেতে পারত তারা। কিন্তু সেটা না হওয়ায় স্বাভাবিক ভাবেই হতাশ এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দো।
ম্যাচের পর সাংবাদিকদের সামনে ফেরান্দোর প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল, “জানতাম ম্যাচটা কঠিন হবে। কারণ, ওরা গত চারটি ম্যাচে পারফরম্যান্সে অনেক উন্নতি করেছে। আমরা ম্যাচটা জেতার অনেক সুযোগ পেয়েছিলাম। দু’পক্ষেরই তিন পয়েন্ট পাওয়া দরকার ছিল। চেষ্টাও করেছি জেতার। এক পয়েন্টটা আমাদের পক্ষে ভাল হল না। আমরা এখন সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারছি না। কিন্তু কিছু করার নেই। এখন পরের ম্যাচে মন দেওয়া ছাড়া কোনও উপায় নেই”।
এ দিন ছ’টি শট গোলে রেখেও একটিও গোল করতে পারেননি এটিকে মোহনবাগান তারকারা। ব্রেন্ডান হ্যামিল সবচেয়ে সহজ দু’টি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন। এ ছাড়া হুগো বুমৌস, দিমিত্রিয় পেট্রাটস, মনবীর সিং-রা একাধিক সুযোগ হাতছাড়া করে দলকে তিন পয়েন্ট এনে দিতে পারেননি। এত গোলের সুযোগ নষ্ট নিয়ে কোচ বলছেন, “আমরা যেমন প্রচুর গোলের সুযোগ পাচ্ছি, তেমনই প্রচুর সুযোগ হাতছাড়াও হচ্ছে। এটা হয়তো আবেগ নিয়ন্ত্রণে না থাকার জন্য হচ্ছে। আমাদের উইঙ্গাররাও খুব একটা সফল নয়। তবে আমি ওদের পাশে আছি। কারণ, ওদের ওপর আমার আস্থা আছে। পরিশ্রম করলে, নিজেদের শোধরানোর চেষ্টা করলে ওরা নিশ্চয়ই সাফল্য পাবে। ওরা সেটা করছেও”।
এটিকে মোহনবাগানের মতো বড় ক্লাব, যাদের লক্ষ্য লক্ষ্য সমর্থক রয়েছেন, সেই ক্লাবের খেলার চাপ যে ঠিকমতো সামলাতে পারছেন না নবাগত, তরুণ খেলোয়াড়রা, তাও কার্যত মেনে নিলেন স্প্যানিশ কোচ। বললেন, “এটিকে মোহনবাগান যে বড় ক্লাব, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এই ক্লাবের সমর্থকেরা জয় ছাড়া কিছুই চান না। তাই ফুটবলারদের চাপ তো থাকবেই। তবে আমি সব সময় ওদের পাশে থাকি। কিয়ান, লিস্টন, মনবীর, ফারদিনদের বয়স কম। ওদের সাহায্য করার চেষ্টা করি। কাজটা কঠিন”।
Spoils shared in Chennai. #ATKMohunBagan #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/6e2jJlz2UL
— ATK Mohun Bagan FC (@atkmohunbaganfc) January 21, 2023
অন্য ক্লাবে কাজ করার চেয়ে কলকাতার ক্লাবে কাজ করা যে অনেক কঠিন, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে ফেরান্দো বলেন, “অন্য ক্লাবে কাজ করলে এতটা চাপ থাকে না। সেখানে আরও বেশি তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে কাজ করা যায়, সময় পাওয়া যায়, একটা ম্যাচ ড্র করলে কিছু খুঁটিনাটি ব্যাপার বদলানো যায়। এখানে সাফল্য আর ভাল পারফরম্যান্স চাইই-চাই। তবে আমি এই চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। তাই এই নিয়ে খুব একটা চাপে নেই। কারণ, আমি জানি দলের ছেলেরা এই চাপটা নিতে প্রস্তুত। এখন এই চাপ নিতে পারলে তিন-চার বছরের মধ্যে ওরা ফুটবলজীবনের সেরা জায়গায় নিয়ে যেতে পারবে নিজেদের এবং ক্লাব ও জাতীয় দলকে সাহায্য করতে পারবে”।
প্লে অফে কোন কোন দলের ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে, এই বিষয়ে তাঁর মত জানতে চাইলে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “হায়দরাবাদ, মুম্বই তো যাবেই। বাকি জায়গাগুলোর জন্য আমাদের লড়াই করতে হবে। ৬-৭টা ম্যাচ এখনও সবার বাকি আছে। ঘরের মাঠে আমাদের পরের দুটো ম্যাচ (ওডিশা ও বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাক কী হয়। পরের ম্যাচগুলো সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এই মরশুমে খুবই কঠিন প্রতিযোগিতা চলছে এবং গতবারের চেয়ে এ বার হোম ম্যাচের গুরুত্ব অনেক বেশি বলেই মনে হচ্ছে”।
দলের দুই নতুন বিদেশি তারকা স্লাভকো দামজানোভিচ ও ফেদরিকো গালেগো এখনও তাঁদের সঙ্গে মাঠে নামার জন্য পুরোপুরি তৈরি নন বলে জানান ফেরান্দো। বলেন, “ওরা দিন দশেক আগেই এসেছে। আমাদের নীতি, পদ্ধতির সঙ্গে ক্রমশ পরিচিত হচ্ছে ওরা। এখনই ওদের পারফরম্যান্স দলকে পুরোপুরি সাহায্য করতে পারবে না। তবে আমি খুশি যে, ওরা দলকে সাহায্য করতে চায়, প্রতিদিন উন্নতিও করছে। পরবর্তী ম্যাচগুলোতে দুজনেই আমাদের পক্ষে খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে চলেছে। আশা করি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই ওরা পুরো তৈরি হয়ে যাবে।