গোলশূন্য ড্র দিয়ে এসিএল ২ অভিযান শুরু মোহনবাগান, রাভশানের
প্রথমার্ধে আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি কোনও পক্ষই। দ্বিতীয়ার্ধেও প্রায় একই ছবি দেখা যায়। কোনও দলেরই আক্রমণে আগ্রাসন দেখা যায়নি। কোনও দলই যেন বাড়তি ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না।
এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২ অভিযান গোলশূন্য ড্র দিয়ে শুরু করল কলকাতার মোহনবাগান এসজি ও তাজিকিস্তানের এফসি রাভশান। বুধবার কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দুই দলের লড়াইয়ে তেমন আগ্রাসী আক্রমণ না থাকলেও ম্যাচের শেষ দিকে একাধিক গোলের ইতিবাচক সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া করে মোহনবাগান। একবার প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে দেওয়া সত্ত্বেও দিমিত্রিয়স পেট্রাটস অফসাইড থাকায় তা বাতিল হয়ে যায়। এই ড্রয়ের ফলে এক পয়েন্ট করে ভাগাভাগি করে নিলে দুই দল।
Not the result we wanted but we take home the positives from a tough opening encounter! 💪#MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন #ACLTwo pic.twitter.com/NS6HQGnUGL
— Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) September 18, 2024
এ দিন চার ডিফেন্ডারে দল নামায় মোহনবাগান। টম অ্যালড্রেড, আশিস রাই, শুভাশিস বোস, দীপ্পেন্দু বিশ্বাস। আক্রমণে দিমিত্রিয়স পেট্রাটস, মনবীর সিং ও জেসন কামিংসকে রেখে দল সাজায় তারা। মাঝমাঠে ছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা, দীপক টাঙরি ও সহাল আব্দুল সামাদ। অন্যদিকে কোজো ম্যাটিক, আজিজবেক সুলতানভ ও মুহাম্মদজন রহিমভকে আক্রমণে রেখে খেলা শুরু করে এফসি রাভশান। তারাও চার ডিফেন্ডারে শুরু করে।
শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা শুরু করে মোহনবাগান। তবে প্রতি আক্রমণের চাপও সামলাতে হয় তাদের। একই রকম চাপ সামলাতে হয় রাভশানের ডিফেন্ডারদেরও। ২৬ মিনিটের মাথায় বক্সের সামনে থেকে নেওয়া নাজারভের ফ্রি কিক অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে দলকে বিপন্মুক্ত করার জন্য গোলকিপার বিশাল কয়েথও তৎপর ছিলেন। পরের মিনিটে রহিমভের গোলমুখী শট বিশালের হাতে লেগে গোলের দিকে গড়িয়ে গেলে তিনি তা গোললাইন পেরোতে দেননি।
মোহনবাগানের অ্যটাকাররা বারবার আক্রমণে উঠলেও হয় নিজেরা খেই হারিয়ে ফেলেন, নয় প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডাররা তাদের আটকে দেন। প্রথমার্ধে তেমন কোনও ইতিবাচক গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। ৪৩ মিনিটে পেট্রাটসের ফ্রি কিক থেকে হেড করে বল গোলের দিকে পাঠান শুভাশিস। কিন্তু বলের গতি এতই কম ছিল যে, তার পুনর্দখল নিতে অসুবিধাই হয়নি গ্রিসতেঙ্কোর। সব মিলিয়ে প্রথমার্ধে আকর্ষণীয় ফুটবল খেলতে পারেনি কোনও পক্ষই।
দ্বিতীয়ার্ধেও প্রায় একই ছবি দেখা যায়। কোনও দলেরই আক্রমণে আগ্রাসন দেখা যায়নি। কোনও দলই যেন বাড়তি ঝুঁকি নিতে রাজি ছিল না। দলের আক্রমণে তীব্রতা ও গতি আনতে ৬৩ মিনিটের মাথায় থাপা ও সহালের জায়গায় লিস্টন কোলাসো ও আপুইয়াকে নামায় মোহনবাগান। তার পরেও ছবিটা বিশেষ বদলায়নি। দুই দলের তৎপর রক্ষণ প্রতিপক্ষের আক্রমণ বারবার প্রতিহত করে।
তবে ৭৫ মিনিটে কামিংস ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে যে সুযোগটি পেয়ে যান, সেটিই ম্যাচের অন্যতম সেরা সুযোগ। মাঝমাঠ থেকে বল পেয়ে মাঝ বরাবর দ্রুত দৌড়ে বক্সে ঢুকে কোণাকুনি গোলে শট নিলেও তা এগিয়ে এসে বাঁদিকে ডাইভ দিয়ে ধরে ফেলেন রাভশানের গোলকিপার ইয়েভেন হৃতসেঙ্কো। ৮৫ মিনিটের মাথায় আরও একটি সুযোগ পান কামিংস, যখন বক্স থেকে বেরিয়ে এসে বলে শট নিতে গিয়ে ফসকান রাভশানের গোলকিপার এবং কাছেই ছিলেন তিনি। কামিংসকে বাধা দিয়ে অবস্থা সামাল দেন সিদ্দিক কামাল ইসা।
৭৭ মিনিটে মনবীর ও আহত টাঙরির জায়গায় মাঠে নামেন গ্রেগ স্টুয়ার্ট ও অভিষেক সূর্যবংশী। মাঠে নামার দশ মিনিটের মধ্যে মাঝমাঠ থেকে কোলাসোকে গোলের বল সাজিয়ে দেন স্টুয়ার্ট। বাঁ দিক দিয়ে উঠে বক্সে ঢুকে কোণাকুনি শট নিলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
ম্যাচের শেষ দিকে রাভশান রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আক্রমণে ঝড় তোলে মোহনবাগান। ৮৮ মিনিটের মাথায় ফের স্টুয়ার্টের ফরোয়ার্ড থ্রু থেকে বল পেয়ে তা জালে জড়িয়ে দেন পেট্রাটস। কিন্তু তিনি অফসাইড থাকায় সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। ৯০ মিনিটের মাথায় ফের মাঝমাঠ থেকে স্টুয়ার্টের বাড়ানো বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন সেই পেট্রাটস। কিন্তু এ বার গোলকিপার সামনে এসে ঝাঁপিয়ে পড়ায় ছন্দ হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পেনাল্টির আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পয়েন্ট ভাগাভাগি করেই মাঠ ছাড়ে দুই দল।