২০২৪-২৫ মরশুমের ইন্ডিয়ান সুপার লিগ যেমন ছিল জমজমাট, তেমনই নাটকীয়তা, কর্তৃত্বে ভরা। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের জন্য এ মরশুম আনে দ্বিগুণ আনন্দ। যারা লিগ শিল্ড এবং আইএসএল কাপ উভয়ই জিতেছে।

স্মরণীয় এই মরশুমের পর ভক্তদের একটি বাছাই করা তালিকা থেকে (৪৪ জন উল্লেখযোগ্য খেলোয়াড়) ৪-৩-৩ ফরমেশনে তাদের মরশুমের সেরা দল নির্বাচন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। সঙ্গে সেই স্বপ্নের দলের একজন প্রধান কোচ। ভোটগ্রহণ চলে ৫ মে থেকে ১৬ মে পর্যন্ত, মোট চারটি ধাপে।

ভোটের ফল চূড়ান্ত হওয়ার পর দেখা যায়, আটজন খেলোয়াড়-সহ দলে আধিপত্য বিস্তার করেছেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। সঙ্গে তাদের জোড়া খেতাবজয়ী কোচ হোসে মোলিনা। এফসি গোয়া, জামশেদপুর এফসি এবং নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি থেকেও একজন করে খেলোয়াড় দলে জায়গা করে নিয়েছেন।

ফুটবলপ্রেমীদের বাছাই করা মরশুমের সেরা দলে যাঁরা রয়েছেন, এই প্রতিবেদনে তাঁদের কথা তুলে ধরা হল।

বিশাল কয়েথ (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের জোড়া খেতাব জয়ের মূল স্তম্ভ ছিলেন বিশাল কয়েথ। এক মরশুমে সর্বোচ্চ ১৫টি ক্লিন শিট রেখে গড়েন নতুন নজির এবং জিতে নেন গোল্ডেন গ্লাভস — তিন মরশুমে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। বাছাই তালিকায় গোলকিপারদের মধ্যে ৭০.২৮% ভোট পেয়ে তিনিই এই দলের গোলকিপার।

বরিস সিং (এফসি গোয়া)

রাইট-ব্যাক পজিশনে পাঞ্জাব এফসি-র অভিষেক সিংয়ের সঙ্গে কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন বরিস। কিন্তু ৩৭.৬৬% ভোট পেয়ে এগিয়ে যান, যেখানে অভিষেক পেয়েছেন ৩৫.৯২%। কোচ মানোলো মার্কেজের অধীনে রাইট-ব্যাক হিসেবে খেলে রক্ষণ ও আক্রমণ, দু’দিকেই অবদান রেখেছেন বরিস।

টম অলড্রেড (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

৬৩.৪২% ভোট পেয়ে দলের সেন্টার-ব্যাকের জায়গা নিশ্চিত করেন অলড্রেড। রক্ষণভাগে তাঁর স্থিরতা ও অভিজ্ঞতা ছিল দারুন কার্যকর।

আলবার্তো রড্রিগেজ (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার তাঁর প্রথম আইএসএল মরশুমেই দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দেখান। অলড্রেডের সঙ্গে দলের গড়ে তোলেন একটি অপ্রতিরোধ্য দেওয়াল। তিনি পেয়েছেন ৬৭.৫৪% ভোট।

শুভাশিস বোস (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

মেরিনারদের অধিনায়ক দলের সর্বাধিক ক্লিন শিটের পাশাপাশি ছ’টি গোল করে একজন ডিফেন্ডারের মরশুমের সর্বোচ্চ গোলের নজির গড়েছেন। নেতৃত্ব এবং ধারাবাহিকতা দিয়ে ৬৬.৬১% ভোট অর্জন করেন তিনি।

আপুইয়া (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে পরিচিত হলেও এই মরশুমে আক্রমণাত্মক দক্ষতাও দেখিয়েছেন। সেমিফাইনালে জয়সূচক গোল করে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেন। ৮১.৬৬% ভক্তের ভোট পেয়ে সর্বাধিক ভোটপ্রাপ্ত খেলোয়াড় হন।

হাভিয়ে হার্নান্ডেজ (জামশেদপুর এফসি)

খালিদ জামিলের অধীনে ভিন্ন ধাঁচের ফুটবল খেলে নজর কাড়ে জামশেদপুর। জাভি করেন ৯টি গোল এবং ৩টি অ্যাসিস্ট, পান ৪৬.৭৮% ভোট।

গ্রেগ স্টুয়ার্ট (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

এই মিডফিল্ডার ছিলেন দলের সাফল্যের অন্যতম চালিকা শক্তি। তিনি তিন গোল করেন ও পাঁচটি অ্যাসিস্ট দেন। ৬৬.৬৩% ভোটে দলে জায়গা করে নেন।

আলাদিন আজারেই (নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি)

মরক্কোর এই ফরোয়ার্ড তাঁর প্রথম মরশুমেই ২৩টি গোল-সহ মোট ৩০টি গোল অবদান রাখেন। অর্জন করেন গোল্ডেন বুট ও গোল্ডেন বল এবং ফুটবলপ্রেমীদের ৬৭.১২% ভোট পান।

মনবীর সিং (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

ডান-উইংয়ে পাঁচ গোল ও চারটি অ্যাসিস্ট করে ৫৩.১৯% ভোটে দলে জায়গা নিশ্চিত করেন।

জেমি ম্যাকলারেন (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট)

ধীরগতিতে শুরু করলেও পরে ছন্দে ফেরেন ম্যকালারেন। মরশুমে ১২ গোল ও দু’টি অ্যাসিস্ট করেন। ৪২.৮৬% ভোট পেয়ে কেরালা ব্লাস্টার্সের ইয়েসুস জিমিনিজকে পিছনে ফেলে দেন।

হোসে মোলিনা (মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট) – প্রধান কোচ

অভিষেক মরশুমে আইএসএলের জোড়া খেতাব জয়ে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ইতিহাস গড়েন মোলিনা। দলের দৃঢ়তা, একাগ্রতা ও ধারাবাহিকতা ছিল অনন্য। ৭৬.১৮% ভোট পেয়ে ভক্তদের পছন্দে মরশুমের সেরা কোচ নির্বাচিত হন।