মাঝে আর মাত্র দু’দিন। তার পরেই শনিবার ভারতীয় ফুটবলের সেই মহাদ্বৈরথ দেখতে পাবেন ফুটবলপ্রেমীরা। এটিকে মোহনবাগান বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল। ডার্বির শতবর্ষে কেমন হবে তাদের লড়াই, সে তো সময় জানে। কিন্তু ইতিমধ্যেই তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে ফুটবল মহলে।

কারা এগিয়ে, কারা পিছিয়ে। কার প্রস্তুতি কেমন। কে কোথায় দাঁড়িয়ে— এইসব প্রশ্নে এখন সরগরম বঙ্গের অলিগলি। রক মাতাচ্ছেন দুই দলের সমর্থকেরা। আড্ডাগুলো দু’ভাগে ভাগ হতে শুরু করে দিয়েছে ইতিমধ্যেই। যেগুলো এখনও ভাগ হয়নি, সেগুলোতে রোজ উঠছে ঝড়। সোশ্যাল মিডিয়া তো সবসময়ই সরগরম। শনিবার রাতে কাদের মুখের হাসি বেঁচে থাকবে, তা এখনই আন্দাজ করা কঠিন। তবু বিতর্ক থামা নেই।  

স্বাভাবিক ভাবেই হিরো আইএসএলে কলকাতা ডার্বিই জনপ্রিয়তার শীর্ষে। গত বছরেই দেশের এক নম্বর ফুটবল লিগে প্রথমবার মুখোমুখি হয় সবুজ-মেরুন ও লাল-হলুদ বাহিনী। রেকর্ডসংখ্যক দর্শক সেই ম্যাচ দেখেন টিভি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে। এ বারের ডার্বির আবহ যখন তৈরি হয়েই গিয়েছে, তখন ফিরে দেখা যাক গত মরশুমের ডার্বির দিনগুলো। আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।

দ্বিতীয় ডার্বি, এটিকে মোহনবাগান বনাম এসসি ইস্টবেঙ্গল

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়াম, ফতোরদা

নভেম্বরে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে হারানোর পরে এটিকে মোহনবাগান দ্বিতীয় ডার্বির আগে যে ১৫টি ম্যাচ খেলে, তার মধ্যে ন’টিতেই জেতে। ফিরতি লিগে যখন তারা চিরপ্রতিদ্বন্দীদের মুখোমুখি হয়, তখন লিগ টেবলের এক নম্বরে সবুজ-মেরুন শিবির। আগের চার ম্যাচে দশ গোল করে তারা। অন্য দিকে, প্রথম ও দ্বিতীয় ডার্বির মধ্যে ১৬টি ম্যাচ খেলে এসসি ইস্টবেঙ্গল। তার মধ্যে পাঁচটিতে ছিল হার। একটা সময়ে তারা টানা সাতটি ম্যাচে অপরাজিত ছিল। দ্বিতীয় ডার্বির আগের দুই ম্যাচেই জামশেদপুর এফসি-কে হারায় ও হায়দরাবাদ এফসি-র সঙ্গে ড্র করে রবি ফাউলারের দল। তাই ফিরতি ডার্বি নিয়ে আশায় ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকেরা।

বিশেষজ্ঞদের ভবিষ্যদ্বাণী

কলকাতার দুই প্রধানেই বহু বছর ধরে খেলা প্রাক্তন তারকা শ্যাম থাপা সেই ম্যাচ নিয়ে নিয়ে মন্তব্য করেন, “বাঙালির এই ঐতিহ্যের মহারণে কোনও ফেভারিট হয় না। মাথায় রাখবেন পিছিয়ে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল কিন্তু গুলি খাওয়া বাঘের মতোই ভয়ঙ্কর। এটিকে মোহনবাগান যেখানে এক নম্বরে, এসসি ইস্টবেঙ্গল সেখানে নয়ে। ওদের হারানোর কিছু নেই। তাই খোলা মনে ঝাঁপাতে পারবে। আমার মতে, হাবাসের দল চাপে থাকবে। কারণ, ওদের লক্ষ্য লিগ শীর্যে থেকে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা। এ রকম অবস্থায় বড় ম্যাচে ওদের রক্ষণে তিরি ও শুভাশিস বসু হলুদ কার্ড দেখলে পরের ম্যাচে খেলতে পারবে না। ফলে অতিরিক্ত সতর্কতায় তিরিদের ভুলভ্রান্তি বাড়তে পারে। বড় ম্যাচে মাঝমাঠের দখল যার, ম্যাচ তার। ব্রাইট-পিলকিংটন জুটিকে নিষ্প্রভ করতে কার্ল ম্যাকহিউরা ডাবল কভারিং রাখবে। তেমনই ব্রাইটদের বলের জোগানদার স্টেনম্যানকেও নিষ্ক্রিয় করতে হবে”।

মোহনবাগানে খেলা তারকা ফুটবলার প্রসূন ব্যানার্জি সেই ম্যাচের আগে বলেছিলেন, নির্দ্বিধায় বলতে পারি আজ এটিকে মোহনবাগান অনেক এগিয়ে। সাম্প্রতিককালে ওদের এত ভাল খেলতে আর কখনও দেখিনি। প্রকৃতপক্ষে টিমগেম খেলছে সবুজ-মেরুন শিবির। ১৯৭৭ সালে ত্রিমুকুট পেয়েছিলাম। সে বার একে অপরকে চোখ বন্ধ করে বুঝে যেতাম। এ বার তারই প্রতিফলন দেখছি। প্রত্যেকটা পজিশনে দুরন্ত সব ফুটবলার রয়েছে ওদের। এটিকে মোহনবাগান সবদিক দিয়ে এগিয়ে ঠিকই, তবে বিপক্ষ দলটার নাম এসসি ইস্টবেঙ্গল। ওদের ডিফেন্স বেশ ভাল। গোলে সুব্রত পাল এসে যাওয়ায় অনেকটা নিশ্চিন্ত হওয়ার জায়গায় এসেছে। ফলে সহজে গোল খাচ্ছে না ওরা। তাই শেষ বাঁশি না বাজা পর্যন্ত নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে না

ইস্টবেঙ্গলের ঘরের ছেলে বলে পরিচিত মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য-র ভবিষ্যদ্বানী ছিল, “আশা করছি, এসসি ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলাররা দারুন একটা পারফরম্যান্স উপহার দেবে সমর্থকদের। ডার্বির ভবিষ্যদ্বাণী করা সব সময় খুব কঠিন। তাতেও এই হেভিওয়েট দ্বৈরথের আগে একটা কথা বলতে চাই— এসসি ইস্টবেঙ্গল কিন্তু এই মুহূর্তে যে কোনও দলকে হারানোর ক্ষমতা রাখে। প্রথম ডার্বির সময় ওরা একেবারেই প্রস্তুত ছিল না। ফুটবলারদের মধ্যে তখন তেমন বোঝাপড়াও ছিল না। কিন্তু এ বার ডার্বির আগে ছবিটা একদমই আলাদা। ইস্টবেঙ্গলে অনেক নতুন ফুটবলার এসেছে আর দলের প্রতিটা নতুন মুখই কিন্তু দারুন পারফর্ম করছে। দলটাকে অনেক বেশি ব্যালান্সড মনে হচ্ছে। সংক্ষেপে বললে টুর্নামেন্টের শেষ ল্যাপে এসেই সেরা ইস্টবেঙ্গলকে দেখা যাচ্ছে”।           

কোচেদের আগাম বার্তা

আন্তোনিও লোপেজ হাবাস: ডার্বি মানে একটা অন্য ধরনের ম্যাচ। এই ধরনের ম্যাচে সর্বোচ্চ স্তরের মানসিকতা প্রয়োজন। আর পাঁচটা ম্যাচের থেকে এটা আলাদা। কারণ, এই ম্যাচে যে কোনও সমস্যার সমাধান অন্য ভাবে করতে হয়। এটা আমাদের পক্ষে খুবই বিপজ্জনক ম্যাচ। তা ছাড়া পরিস্থিতিও আলাদা। আমাদের লক্ষ্য একই থাকবে, তিন পয়েন্ট পাওয়া। কিন্তু এসসি ইস্টবেঙ্গল যথেষ্ট ভাল দল। তাই এই ম্যাচ জেতা মোটেই সোজা হবে না। প্রথম ডার্বির পরে আমরা দুই দলই উন্নতি করেছি। পরিবর্তনও এসেছে অনেক। ওদের অনেক ভাল ভাল ফুটবলার আছে। আগের বারেও অবশ্য ছিল। ব্রাইট (ইনোবাখারে) অবশ্যই ভাল খেলোয়াড়। ও একাধিক ভাল গোল করেছে। ওদের হারাতে গেলে আমাদের সেরা পারফরম্যান্স দিতেই হবে। তবে এই ম্যাচে গোলের জন্য শুধু রয়ের ওপর নির্ভর করলে হবে না। বাকি দশজনকেও সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

সহকারী কোচ অ্যান্থনি গ্রান্ট: আমরা টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছি বলে আমাদের মানসিক শক্তি কমে গিয়েছে, এমন ভাবার কোনও কারণ নেই। আমাদের অনেক খেলোয়াড়ই আগে আইএসএলে খেলেনি। কয়েকজন অনেক উন্নতি করেছে। কয়েকজনের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই নক আউটের দৌড় থেকে ছিটকে গেলেও আমরা কিন্তু দমে যাইনি। ওদের দলে খুব ভাল আক্রমণাত্মক ফুটবলার আছে। আমরা ওদের যথেষ্ট শ্রদ্ধাই করব। এই প্রতিদ্বন্দিতা উপভোগও করছি। গত কয়েক বছর ধরে রয় কৃষ্ণা দারুন খেলছে। তবে অবশেষে এটা তো ফুটবলই। প্রতি দলেই কিছু ভাল খেলোয়াড় থাকে। আমরা তাদের সমীহ করি। কিন্তু কাউকে ভয় পাই না। প্রথম ডার্বিতে আমরা সদ্য এক জায়গায় জড়ো হয়েছিলাম মাত্র। দুই সপ্তাহে, খুব বেশি হলে আটটা ট্রেনিং সেশনের পরে সেই ম্যাচে নামি আমরা। একটাও প্র্যাকটিস ম্যাচ পাইনি। এই অবস্থায় সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দী যারা, তাদের সামনে আমাদের ফেলে দেওয়াটা বোধহয় আমাদের প্রতি সুবিচার হয়নি। সময় যত এগিয়েছে, আমরা ততই উন্নতি করেছি। এখন যেমন দেখতে পাচ্ছেন আমাদের খেলোয়াড়রা মাঠে নেমে ফুটবলকে উপভোগ করছে। দলের স্টাফরাও খেটেছে, খেলোয়াড়দের শারীরিক ও মানসিক ভাবে চাঙ্গা করেছে।

ম্যাচে যা হয়েছিল

ফিরতি লেগের ম্যাচ ৩-১ গোলে জিতে নেয় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। ম্যাচের শুরুতেই রয় কৃষ্ণা এবং দ্বিতীয়ার্ধে ডেভিড উইলিয়ামস ও হাভিয়ে হার্নান্ডেজের গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় তারা। তাঁদের সতীর্থ ডিফেন্ডার তিরির আত্মঘাতী গোল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে সমতা এনে দেওয়া সত্ত্বেও অবশ্য সেই স্কোর ধরে রাখতে পারেনি লাল-হলুদ শিবির।

এসসি ইস্টবেঙ্গল মাঝমাঠে লড়াই করলেও প্রতিপক্ষের ক্রমবর্ধমান চাপের মুখে তাদের রক্ষণ ভেঙে পড়ে ও আক্রমণের ব্যর্থতাই তাদের হার মানতে বাধ্য করে। এটিকে মোহনবাগানের রক্ষণ যেমন বিপক্ষের সামনে দুর্ভেদ্য দেওয়াল হয়ে উঠেছিল, এসসি ইস্টবেঙ্গলের ডিফেন্ডাররা কিন্তু রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামসদের ধরে রাখতে পারেননি।

সারা ম্যাচে যেখানে সবুজ-মেরুন ফরোয়ার্ডরা সাতবার গোলে শট নিয়েছেন, ব্রাইট ইনোবাখারে, অ্যান্থনি পিলকিংটনরা সেখানে সারা ম্যাচে একটির বেশি শট গোলে রাখতে পারেননি। তাদের সেরা স্ট্রাইকার ব্রাইটকে সে দিন কড়া পাহাড়ায় রেখে দিয়েছিলেন প্রীতম, সন্দেশ, তিরিরা। পিলকিংটন, মাঘোমারাও সুবিধা করতে পারেননি।

দুই দলই সে দিন অপরিবর্তিত একাদশ নামায়। ফর্মেশনও প্রায় একই ছিল। এটিকে মোহনবাগান যেখানে ৩-৪-৩-এ দল সাজায়, সেখানে এসসি ইস্টবেঙ্গল প্রথম এগারো সাজায় ৩-৪-১-২-এ। শুরু থেকেই উইং প্লে-র ওপর জোর দিয়ে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা শুরু করে এটিকে মোহনবাগান। বাঁ দিক দিয়ে শুভাশিস ও ডানদিক দিয়ে মনবীরকে উঠতে দেখা যায় বারবার। মাঝখান দিয়ে বারবার বিপক্ষের বক্সে ঢুকে পড়েন রয়। একটু পিছন থেকে খেলেন ডেভিড উইলিয়ামস ও মার্সেলো পেরেইরা।

শুরু থেকেই চাপ বাড়াতে থাকা সবুজ-মেরুন বাহিনী ১৫ মিনিটের মাথায় গোল পেয়ে যায় রয় কৃষ্ণার পা থেকে। নিজেদের এলাকা থেকে দেওয়া তিরির উড়ন্ত ভলি পেয়ে যখন মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে দৌড় শুরু করেন রয়, তখন তাঁর সামনে এসসি ইস্টবেঙ্গলের কোনও ডিফেন্ডার ছিলেন না। রয়কে তাড়া করেও তাঁর নাগাল পাননি ড্যানিয়েল ফক্স, সার্থক গলুইরা। বক্সে ঢুকে গোলকিপার সুব্রত পালকে বোকা বানিয়ে গোলে বল ঠেলে দেন রয়। ২৩ মিনিটের মাথায় মার্সেলিনহোর গোলমুখী শট সুব্রত না বাঁচালে ব্যবধান আরও বাড়ত।

৩১ মিনিটে ড্যানিয়েল ফক্সের একটি শট গোলের অনেক বাইরে দিয়ে চলে যাওয়া ছাড়া আর কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারেনি এসসি ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে তিরির আত্মঘাতী গোলে সমতা এসে যাওয়ায় কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তারা।

৬৬ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া মার্সেলিনহোর জায়গায় নামেন হাভিয়ে হার্নান্ডেজ। তার পরই ব্যবধান বাড়ানোর জন্য ফের চাপ বাড়াতে থাকে সবুজ-মেরুন বাহিনী। এই চাপের মুখে কার্যত ভেঙে পড়ে লাল-হলুদ ডিফেন্স। ৭২ মিনিটে দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায় এটিকে মোহনবাগান। বক্সের সামনে ড্যানিয়েল ফক্সের পা থেকে বল ছিনিয়ে নিয়ে বক্সে ঢুকে ডেভিড উইলিয়ামসকে পাস দেন রয়। বক্সের মাথা থেকে ডেভিডের জোরালো শট সোজা জালে জড়িয়ে যায়।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দুমিনিট আগে ফের গোল করে জয় সুনিশ্চিত করে ফেলেন হাভিয়ে হার্নান্ডেজ। বক্সের ডান দিক থেকে তিনি বল দেন হাভিকে। নিখুঁত ও জোরালো হেডে গোলে বল ঠেলে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

দ্বিতীয় ডার্বির লাইন-আপ

এটিকে মোহনবাগান দল: অরিন্দম ভট্টাচার্য (গোল), প্রীতম কোটাল, তিরি, সন্দেশ ঝিঙ্গন, শুভাশিস বসু, লেনি রড্রিগেজ, কার্ল ম্যাকহিউ, মনবীর সিং (প্রবীর দাস), মার্সেলো পেরেইরা (হাভিয়ে হার্নান্ডেজ), রয় কৃষ্ণা, ডেভিড উইলিয়ামস (প্রণয় হালদার)।

এসসি ইস্টবেঙ্গল দল: সুব্রত পাল (গোল), সার্থক গলুই, রাজু গায়কোয়াড়, ড্যানিয়েল ফক্স, অঙ্কিত মুখার্জি, নারায়ণ দাস, সৌরভ দাস, জাক মাঘোমা, ম্যাটি স্টাইনমান (অ্যারন হলোওয়ে), অ্যান্থনি পিলকিংটন, ব্রাইট ইনোবাখারে।

ম্যাচের পরে কোচ-বার্তা

হাবাস: এই জয়ের জন্য মেরিনারদের অভিনন্দন জানাই। এই জয় ওদের জন্যই। এই ম্যাচটার একটা আলাদা মোটিভেশন আছে। তবে আমাদের কাছে তিন পয়েন্টটাই সবচেয়ে বড় মোটিভেশন। ছেলেরা যাতে এই ম্যাচে বাড়তি আবেগে ভেসে না গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, সে দিকটাও খেয়াল রাখতে হয়েছিল। রয় আমাদের দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। তবে শুধু ওর ওপরই নির্ভর করি না আমরা। হাভি, উইলিয়ামসরাও আজ প্রমাণ করে দিয়েছে ওরাও গোল করতে জানে। ৩-৪-৩-এ খেলেছি আমরা। চারটে গোল দিয়েছি। কিন্তু তার ফলে আমাদের খেলায় খুব একটা ফারাক হয়েছে বলে মনে হয় না। কারণ, আমাদের খেলার ধরন, নীতি এবং পরিকল্পনা তো একই ছিল। তফাৎটা শুধু বিপক্ষকে বেশি বা মাঝামাঝি চাপে রাখার মধ্যে। ম্যাচ কোন দিকে গড়াচ্ছে, তার ওপর নির্ভর করে আমরা খেলার স্টাইলে কতটা পরিবর্তন করব।

গ্রান্ট: ওদের দ্বিতীয় গোলটাই এই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। যেটা আমরা ওদের কার্যত উপহার দিয়েছি। ভাল ডার্বি ম্যাচ হয়েছে। তবে একটা ডার্বি ম্যাচে প্রতিপক্ষ জেতার জন্য যদি সে রকম কিছুই না করে, তা হলে সেই ম্যাচ জেতা অনেক সোজা হয়ে যায়। ওদের আজ এটাই হয়েছে। আমরা ওদের জিততে সাহায্য করেছি। আমি নিজে ডার্বি খেলেছি। এর গুরুত্ব বুঝি। ছেলেদেরও বুঝিয়েছিলাম। এই ম্যাচে হারের যন্ত্রণাটা আমার ভাল করে জানা আছে। তবে দলের ছেলেরা সেরাটাই দিয়েছে। একটা গোল যদি দিয়ে দিই, তা হলে কিছু করার নেই।