রয় কৃষ্ণা যোগ দেওয়ার পর থেকেই যে প্রশ্নটা প্রত্যেক এটিকে মোহনবাগান সমর্থকের মনে গেঁথে ছিল, তার উত্তর এত দিনে পাওয়া গেল। আসন্ন হিরো আইএসএল ৭-এ মাঠে রয়ের পাশে ফের দেখা যাবে তাঁর অস্ট্রেলীয় বন্ধু ও সঙ্গী ফরোয়ার্ড ডেভিড উইলিয়ামসকে। মঙ্গলবার ক্লাবের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল এই সুখবর, এক বছরের জন্য এটিকে মোহনবাগানে সই করলেন গত মরশুমে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ফরোয়ার্ড।

“ক্লাবের সঙ্গে আরও এক বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পেরে খুবই ভাল লাগছে”, এটিকে মোহনবাগানের চুক্তিতে সই করার পরে বলেছেন ব্রিসবেনজাত এই দুর্ধর্ষ ফরোয়ার্ড। তাঁর বক্তব্য, “এক ঐতিহাসিক ক্লাবের জার্সি গায়ে মাঠে নামার সুযোগ পেয়ে আমি কৃতজ্ঞ। গত মরশুমে আমরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলাম। আশা করি এ বারেও তার ব্যতিক্রম হবে না। আমাদের অসাধারণ দলের সঙ্গে অনুশীলন ও ম্যাচ খেলতে নামার অপেক্ষায় রয়েছি এখন”।

অস্ট্রেলিয়ায় এ লিগ থেকেই রয় কৃষ্ণা ও ডেভিড উইলিয়ামস জুটি অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠে। গত মরশুমে এই সফল জুটিকেই নিয়ে আসেন এটিকে-র স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস এবং প্রত্যাশিত ভাবেই ফল পান তিনি। রয় ও ডেভিড জুটিই হয়ে ওঠেন হিরো আইএসএল ৬-এর সেরা স্ট্রাইকার জুটি। গত মরশুমে ১৮টি ম্যাচ খেলে ডেভিড সাতটি গোল করেন ও পাঁচটিতে অ্যাসিস্ট করেন। মাঝখানে হ্যামস্ট্রিং সমস্যায় হয়ে যাওয়ায় বেশ কয়েকটি ম্যাচে খেলতে পারেননি তিনি। ম্যাচে ফেরার পরেও ফর্মে ফিরতে সময় লেগে যায় তাঁর। না হলে হয়তো তাঁর পা থেকে আরও গোল পেত এটিকে এফসি।

গত মরশুমে দলের ৩৩টি গোলের মধ্যে রয়-ডেভিড জুটির গোলের সংখ্যাই ছিল ২২।  সেমিফাইনালে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে মোট গোলের হিসেবে ০-২ পিছিয়ে পড়া সত্ত্বেও প্রথমে রয়ের গোল ও পরে ডেভিডের জোড়া গোলে ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠে এটিকে এফসি। তার মধ্যে একটি গোল ছিল বাংলার উইং ব্যাক প্রবীর দাসের অসাধারণ ক্রস থেকে করা। যার পুরো কৃতিত্বই ডেভিড দিয়েছিলেন প্রবীরকে।

অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রোর ক্লাবের হয়ে কেরিয়ার শুরু করার পরে ডেনমার্কের প্রথম ডিভিশন ক্লাব ব্রন্ডবি আইএফ-এ যোগ দেন তিনি। ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিজ্ঞতা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে কুইন্সল্যান্ড ফিউরি ও সিডনি এফসি ক্লাবের হয়ে খেলেন তিনি। পাঁচ বছর মেলবোর্ন সিটি ক্লাবের হয়েও খেলেন। ২০১৩-১৪ মরশুমে তিনি মেলবোর্নের সেরা ফুটবলার নির্বাচিত হন। ২০১৬-য় ফের ইউরোপে চলে যান ডেভিড, হাঙ্গেরির জোম্বাথেলি হালাদাস ক্লাবে।

২০১৯-এ এটিকে এফসি-তে যোগ দেওয়ার আগে তিনি ছিলেন ওয়েলিংটন ফিনিক্স ক্লাবে এবং সেখানেই রয় কৃষ্ণার সঙ্গে জুটি বাঁধেন তিনি। দু’জনে মিলে একই মরশুমে তিরিশটিরও বেশি গোল করার পরে তাঁরা আসেন ভারতের মাঠ কাঁপাতে। আসন্ন মরশুমেও ফের এই জুটি হিরো আইএসএল মাতিয়ে দেন কী না, সেটাই দেখার। তবে এ বার যে দু’জনকেই ঐতিহাসিক সবুজ-মেরুন জার্সি পরে পাশাপাশি গোলের দিকে দৌড়তে দেখা যাবে, এটাই সমর্থকদের কাছে সবচেয়ে বড় খবর। জার্সির রঙ বদলালেও এ বার কলকাতায় এসে রয়ের মতো প্রবীর, প্রীতম কোটাল, জবি জাস্টিন, এডু গার্সিয়া, সুমিত রাঠির মতো চেনা সতীর্থদেরই পাবেন ৩২ বছর বয়সি ডেভিড উইলিয়ামস।