এআইএফএফ পুরস্কার ২০২৫: বর্ষসেরা শুভাশিস, সেরা গোলকিপার বিশাল, উদীয়মান ব্রাইসন
এ মরশুমে ছ’টি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেন বাংলার এই লেফট ব্যাক। এ ছাড়াও ১৩টি ক্লিন শিট রাখতেও সবুজ-মেরুন বাহিনীকে সাহায্য করেন তিনি।

সারা মরশুমে তাঁর অসাধারণ ও দায়িত্বশীল পারফরম্যান্সের স্বীকৃতি পেলেন মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের অধিনায়ক শুভাশিস বোস। ২০২৪-২৫ মরশুমে তাঁর অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন বা এআইএফএফ-এর বর্ষসেরা ফুটবলারের খেতাব অর্জন করলেন তিনি।
শুধু যে দলকে টানা দ্বিতীয় আইএসএল শিল্ড জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন শুভাশিস, তা-ই নয়—বেঙ্গালুরু এফসিকে হারিয়ে কঠিন ফাইনাল ম্যাচ জিতে আইএসএল কাপ ট্রফিও পুনরুদ্ধার করতে দলকে সাহায্য করেছেন তিনি। এই কৃতিত্ব অর্জনের ফলে মুম্বই সিটি এফসির পর দ্বিতীয় ক্লাব হয়ে উঠেছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট, যারা একই মরশুমে শিল্ড ও কাপ দুটোই জিতেছে। এই দুই জয়ের পেছনে শুভাশিসের আক্রমণ ও রক্ষণে দ্বৈত ভূমিকা যথাযথভাবে স্বীকৃতি পেল।
এ মরশুমে ছ’টি গোল ও একটি অ্যাসিস্ট করেন বাংলার এই লেফট ব্যাক। এ ছাড়াও ১৩টি ক্লিন শিট রাখতেও সবুজ-মেরুন বাহিনীকে সাহায্য করেন তিনি। মানোলো মার্কেজের কোচিংয়ে ভারতীয় জাতীয় দলেও তিনি নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেছেন।
বর্ষসেরা গোলকিপারের খেতাব বিশাল কয়েথের
শুভাশিসের সঙ্গে তাঁর জাতীয় দল তথা ক্লাবের সতীর্থ বিশাল কয়েথও বর্ষসেরার খেতাব পেয়েছেন। তিনিই বছরের সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হয়েছেন। টানা দ্বিতীয় মরশুমে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের গোলে তিনি প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান এবং আইএসএলে গোল্ডেন গ্লাভ জেতেন। ২৬টি ম্যাচে রেকর্ড ১৫টি ক্লিন শিট বজায় রাখেন বিশাল এবং মাত্র ১৯টি গোল হজম করেন। তাঁর পারফরম্যান্সের পুরস্কারস্বরূপ জাতীয় দলেও ডাক পেয়েছেন তিনি।
A big congratulations to all the winners of the #AIFFAwards 2024-25! 👏🔥
— Indian Super League (@IndSuperLeague) May 2, 2025
📸: @IndianFootball
#ISL #LetsFootball #IndianFootball pic.twitter.com/jDHtIWixNK
২৮ বছর বয়সী এই গোলকিপার সাত বছর পর ভারতীয় দলের প্রথম এগারোয় ফেরেন। মার্চে মলদ্বীপের বিরুদ্ধে প্রীতি ম্যাচে এবং এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচেও সেই জায়গা ধরে রাখেন তিনি।
বর্ষসেরা উদীয়মান ফুটবলার ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ
এফসি গোয়ার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ ফেডারেশনের বিচারে বর্ষসেরা উদীয়মান ফুটবলার নির্বাচিত হয়েছেন। ২৪ বছর বয়সী এই ফুটবলার এ বারের আইএসএলে নিজের সেরা মরশুম কাটান এবং নিয়মিত খেলার সুযোগও পান। মরশুমে তিনি সাতটি গোল এবং দু’টি অ্যাসিস্ট করেছেন এবং তাঁর এই পারফরম্যান্সের জন্য প্রথমবার জাতীয় দলে ডাকও পান। মার্চে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্রয়ে শেষ মুহূর্তে বদলি হিসেবে নেমে ভারতীয় দলের হয়ে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
টানা দ্বিতীয়বার বর্ষসেরা কোচ খালিদ জামিল
জামশেদপুর এফসির হেড কোচ খালিদ জামিল টানা দ্বিতীয়বার এআইএফএফ বর্ষসেরা কোচ নির্বাচিত হলেন। এই মরশুমে তাঁর অধীনে ইস্পাতবাহিনীর ফুটবলাররা দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেন ও আইএসএল প্লে-অফে ফিরে আসে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে অবাক করা সেমিফাইনাল-জয় তুলে নেয় তারা। খালিদ জামশেদপুর এফসিকে তাদের প্রথম সুপার কাপ ফাইনালে তুলেছেন, যেখানে শনিবার তারা কলিঙ্গ সুপার কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে এফসি গোয়ার।
মহিলা ফুটবলেও বাংলার দাপট
ইস্টবেঙ্গল এফসির ফরোয়ার্ড সৌম্যা গুগুলোথ জিতেছেন এআইএফএফ-এর বর্ষসেরা মহিলা ফুটবলারের খেতাব। তিনি ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ বা আইডব্লিউএল-এ দুর্দান্ত মরশুম কাটিয়ে ন’গোল করে সর্বোচ্চ ভারতীয় গোলদাতা হন এবং দলকে শিরোপা জিততে সাহায্য করেন। ইস্টবেঙ্গলেরই গোলকিপার পন্থোই চানু বর্ষসেরা মহিলা গোলকিপারের সন্মান পেয়েছেন। ১৪ ম্যাচে ৭টি ক্লিন শিট রেখে গোটা মরশুমে দলের রক্ষণভাগ অটুট রাখেন। শ্রীভূমি এফসির কোচ সুজাতা কর বর্ষসেরা মহিলা কোচ নির্বাচিত হয়েছেন। নতুনভাবে প্রোমোশন পাওয়া দলকে তিনি ইস্টবেঙ্গল ও গোকুলাম কেরালার পরে তৃতীয় স্থানে নিয়ে গেছেন। ১৮ বছর বয়সী ডিফেন্ডার তোইজাম থইবিসানা চানু, যিনি শ্রীভূমির হয়ে খেলে বর্ষসেরা নারী উদীয়মান ফুটবলারের খেতাব পেয়েছেন। শীর্ষ স্তরে তাঁর অভিষেক মরশুমটি ছিল অত্যন্ত স্মরণীয়।