রবিবার যুবভারতীতে কলকাতা ডার্বির সময়ে পরিবর্তন
এমন আকর্ষণীয় জায়গায়, যেখানে দুই দলেরই প্লে-অফের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, এর আগে আইএসএলের কোনও ডার্বি এসেছে বলে মনে পড়ে না কারও।
আসন্ন কলকাতা ডার্বির সময় পরিবর্তন করা হল। চলতি লিগের ফিরতি ডার্বির আয়োজক ইস্টবেঙ্গল এফসি মঙ্গলবার রাতে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে এই খবর জানিয়ে দেয়। রবিবার, ১০ মার্চ ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সবচেয়ে জনপ্রিয় দ্বৈরথ শুরু হওয়ার কথা ছিল সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়। কিন্তু পরিবর্তিত সূচী অনুযায়ী তা শুরু হবে রাত সাড়ে আটটায়। বিশেষ কারণে এই সূচী পরিবর্তন করতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবকে, যা অনুমোদনও করেছে আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল)।
ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান এসজি দুই ক্লাবেরই ঘরের মাঠ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে হবে এই ম্যাচ। তবে এটি আসলে ইস্টবেঙ্গলের হোম ম্যাচ বলে ধরা হচ্ছে। গত মাসে যে কলকাতা ডার্বি হয়েছিল, তা মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হোম ম্যাচ ছিল।
🚨𝐊𝐎𝐋𝐊𝐀𝐓𝐀 𝐃𝐄𝐑𝐁𝐘 𝐔𝐏𝐃𝐀𝐓𝐄🚨#EBFCMBSG #EastBengalFC #ISL10 pic.twitter.com/euaYzSG7nh
— East Bengal FC (@eastbengal_fc) March 5, 2024
দুই ক্লাবের কাছেই এই ডার্বি যেমন সন্মানের ও ঐতিহ্যের লড়াই, তেমনই এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে দুই ক্লাবের কাছেই এই ডার্বি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই ম্যাচের ফলের ওপর নির্ভর করছে চলতি লিগে দুই দলের ভবিষ্যৎ। যদিও মোহনবাগানের সেরা ছয়ের মধ্যে থাকা নিয়ে তেমন অনিশ্চয়তা নেই, আর মাত্র এক পয়েন্ট পেলেই তারা প্লে-অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। কিন্তু তাদের লিগ টেবলে এক নম্বরে থেকে লিগশিল্ড জয়ের দৌড়ে তারা কতটা এগিয়ে যেতে পারবে, তা এই ম্যাচের ওপর নির্ভর করবে অনেকটাই।
আপাতত এই দৌড়ে তাদের সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী ওডিশা এফসি ও মুম্বই সিটি এফসি, যারা ইতিমধ্যেই প্লে অফে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে নিয়েছে। শীর্ষে থাকা ওডিশার (৩৫) সঙ্গে মাত্র দু’পয়েন্টের দূরত্ব রয়েছে মোহনবাগানের (৩৩)। তার ওপর ওডিশা তাদের চেয়ে দু’টি ম্যাচ বেশি (১৮) খেলেছে। ওডিশার চেয়ে একটি ম্যাচ কম (১৭) খেলে মুম্বইয়েরও সংগ্রহ ৩৫। মূলত এই তিন দলের মধ্যেই লিগ শিল্ডের দৌড় চলছে। ভবিষ্যতে আর কোনও দল এই দৌড়ে যোগ দেবে কি না, জানা নেই। তার আগেই সবুজ-মেরুন বাহিনী এক নম্বরে উঠে পড়তে চায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে।
অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গল লিগ টেবলের ন’নম্বরে নেমে গেলেও তাদের সেরা ছয়ে প্রবেশ করার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সে জন্য তাদের বাকি ম্যাচগুলির প্রতিটি থেকেই পয়েন্ট আনতে হবে তাদের। তাই মোহনবাগানের কাছে হারা চলবে না তাদের। এমন আকর্ষণীয় জায়গায়, যেখানে দুই দলেরই প্লে-অফের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে, এর আগে আইএসএলের কোনও ডার্বি এসেছে বলে মনে পড়ে না কারও।
চলতি লিগের প্রথম ডার্বিরও সূচী পরিবর্তন হয়েছিল। সে বার তারিখ বদল করতে হয়েছিল। এ বার শুধু সময় বদলাতে হচ্ছে। আসলে ডার্বির জনপ্রিয়তা এতটাই, এই ম্যাচ দেখতে মাঠে এত মানুষ আসে এবং টিভি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এত মানুষ ডার্বি দেখেন যে, এই ম্যাচের সূচী পরিবর্তন করতে হলে অনেক ভাবনা, আলোচনা প্রয়োজন। গত কয়েকদিন সে সবই চলার পরে অবশেষে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছনো গোল।
এ মরশুমে মোট চারবার কলকাতা ডার্বি হয়েছে। ডুরান্ড কাপে প্রথম ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গল জিতলেও ফাইনালে তাদের হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয় মোহনবাগান। কলিঙ্গ সুপার কাপের গ্রুপ পর্বে ফের ইস্টবেঙ্গলকে হারায় মোহনবাগান। আইএসএলের প্রথম লেগে এই ঐতিহ্যবাহী দ্বৈরথ ২-২-এ শেষ হয়। এই প্রথম আইএসএলের কলকাতা ডার্বিতে কোনও ফয়সালা হল না। দু’বার এগিয়ে গিয়েও সেই ম্যাচ জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। শেষ পর্যন্ত শেষ মুহূর্তের গোলে সমতা আনেন মোহনবাগানের অস্ট্রেলীয় তারকা দিমিত্রিয়স পেট্রাটস। এ বার ডার্বিতে কী হবে, তা নিয়ে এখন থেকেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তার আগে আজ, বুধবার গোয়ায় তাদের ১৮ নম্বর ম্যাচ খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই ম্যাচে জিতলে তারা সেরা ছয়ে প্রবেশ করতে পারবে।