এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ইতিহাস গড়ল মুম্বই সিটি এফসি। সোমবার তারা ইরাকের এয়ার ফোর্স ক্লাবকে ২-১ গোলে হারিয়ে ভারতীয় ফুটবলে এক নতুন মাইলফলক স্থাপন করল। এই প্রথম কোনও ভারতীয় ক্লাব এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্লাব টুর্নামেন্টের মূলপর্বে জয় পেল। সোমবার ভারতীয় সময় অনুযায়ী গভীর রাতে এই ম্যাচে ৭০ মিনিট পর্যন্ত এক গোলে পিছিয়ে থেকে জেতে হিরো আইএসএল ২০২০-২১ মরশুমের চ্যাম্পিয়ন ও লিগশিল্ড জয়ীরা।

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে মুম্বইয়ের দলের কোচ ডেস বাকিংহাম বলেছিলেন, তাঁরা এমন জায়গায় পৌঁছতে চান, যেখানে এর আগে কখনও পৌঁছতে পারেনি কোনও ভারতীয় ক্লাব। সোমবার ইরাকের অন্যতম সেরা দলকে হারিয়ে কথা রাখলেন তিনি। রিয়াধের কিং ফাহাদ স্টেডিয়ামে এ দিন ৫৯ মিনিটের মাথায় পরিবর্ত খেলোয়াড় হামাদি আহমেদ ইরাকি দলকে এগিয়ে দেওয়ার ১১ মিনিট পরে ছ’মিনিটের মধ্যে পরপর দু’টি গোল করে দলকে ঐতিহাসিক জয় এনে দেন দিয়েগো মরিসিও এবং রাহুল ভেকে।

ম্যাচের শুরু থেকেই ইরাকের লিগে চার নম্বরে থাকা দলটি প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা গোলের সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে পারেনি। এয়ার ফোর্সের ফরোয়ার্ড আলা আব্বাস এই সময়ে সব রকম ভাবেই মুম্বইয়ের রক্ষণে চিড় ধরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

মুম্বই সিটি এফসি ম্যাচের প্রথম ইতিবাচক সুযোগটি পায় ৩০ মিনিটের কাছাকাছি, যখন আহমেদ জাহু গোলের পাস দেন লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতেকে। কিন্তু ছাঙতের শট গোলের বাইরে দিয়ে চলে যায়। অন্য দিকে, ধুরগম ইসমাইলের পাস থেকে নেওয়া আব্বাসের একটি জোরালো শট বারের ওপর দিয়ে উড়ে যায়।

হাকিম শাকিরের দলকে বিপদে ফেলার ব্যবস্থা প্রায় করেই ফেলেছিলেন জাহু। ৩১ মিনিটের মাথায় তাঁর মাপা ক্রসে ঠিকমতো হেড করতে পারলে ম্যাচের প্রথম গোলটি পেয়ে যেতেন মরিসিও। কিন্তু তাঁর হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তবে ৩৪ থেকে ৩৭ মিনিটের মধ্যে যে দু’টি সুযোগ পায় এয়ার ফোর্স, তাকে বোধহয় সুবর্ণ সুযোগ বললেও কম বলা হয়।

প্রথমে গোলের সামনে থেকে বল বাইরে পাঠান হুসেইন জব্বার ও পরে আব্বাসের গোলমুখী শট গোললাইনে সেভ করেন ছাঙতে। বিরতিতে যাওয়ার দু’মিনিট আগে আবার বিক্রম সিংয়ের গোলমুখী শট একই ভাবে ব্যর্থ করে দেন জব্বার।

বিরতির পরে ম্যাচের ৫২ মিনিটের মাথায় ফের অসাধারণ সুযোগ পান শরিফ আব্দুলকাধিম। সামনে শুধু গোলকিপার থাকা সত্ত্বেও গোলের বাইরে বল মারেন তিনি। এর সাত মিনিট পরে বহু আকাঙ্খিত গোলটি পায় এয়ার ফোর্স। এক জোরালো ও পরিকল্পিত আক্রমণের পর ছ’গজের বক্সের মধ্যে থেকে ঠাণ্ডা মাথায় গোলে বল ঠেলে দেন হামাদি আহমেদ।

এক গোল খেয়েও অবশ্য দমে যায়নি মুম্বই সিটি এফসি। আগের ম্যাচে তিন গোলে হার থেকে পাওয়া শিক্ষা কাজে লাগিয়ে তারা গোল শোধ করার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে এবং ৭০ মিনিটের মাথায় আলি কাধিম বক্সের মধ্যে গোলমুখী মরিসিওকে ফাউল করায় পেনাল্টি পেয়ে যায় মুম্বই সিটি এফসি। পেনাল্টি থেকে গোল করতে বিন্দুমাত্র ভুল করেননি ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। এর পাঁচ মিনিট পরেই জাহুর মাপা কর্নারে হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন রাহুল ভেকে। এর পরে আর গোল শোধ করতে পারেনি এয়ার ফোর্স।