এফসি পুনে সিটি - ২ দিল্লি ডায়নামোস – ৩
(আলফারো ৬৭, তেবার ৯৫) (পাওলিনিও ৪৬, ছাংতে ৫৫, মিরাবাজে ৬৫)

শ্রী শিব ছত্রপতি স্পোর্টস কমপ্লেক্স-এ এফসি পুনে সিটি ইতিহাসের ধারা বদলাতে ব্যর্থ আবারও। এর আগে ছ’বারের দেখায় মাত্র একবারই হারাতে পেরেছিল দিল্লি ডায়নামোসকে। আবারও হারল, নিজেদের মাঠে। দাপটের সঙ্গে জিতে চতুর্থ হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগে (আইএসএল) নিজেদের অভিযান দুর্দান্তভাবেই শুরু করল দিল্লি ডায়নামোস।

এদিন ম্যাচের প্রথমার্ধে গোল পায়নি কোনও দলই, কিন্তু গোল করার সম্ভাবনা বেশি ছিল দিল্লিরই। পুনের গোলরক্ষক কমলজিতকে গোটা ম্যাচ জুড়ে বেশ কয়েকবার দুর্দান্ত সেভ করতে হলেও শেষ পর্যন্ত দলের পতন রোধ করতে পারেননি। কিন্তু কোনও গোলের জন্যই তাঁকে দায়ী করা যাবে না।

দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই প্রথম গোল দিল্লির। বাঁদিক থেকে সেনা রালতে আর লালিয়ানজুয়ালা বল নিয়ে এগিয়েছিলেন, ছাংতে-র ক্রসে মাথা ছুঁইয়ে দিল্লিকে এবারের আইএসএল-এ প্রথম গোল এনে দিলেন ব্রাজিলীয় পাওলিনিও দিয়াস। তাঁর সঙ্গেই লাফিয়েছিলেন দিল্লিরই কালু উচেও, কিন্তু পাওলিনিও আগে ছিলেন, মাথা ছোঁয়াতে কোনও অসুবিধাই হয়নি। দিল্লির দুই ফুটবলার পুনের বক্সে এসে হেড করার জন্য তৈরি যখন, পুনের রক্ষণের কেউ কাছাকাছিও ছিলেন না।

দ্বিতীয় গোলের সময় ছাংতে এবার নিজেই এগিয়ে এসেছিলেন বল ধরে। এবারও পুনে রক্ষণের ভুল। সেই ভুল পাস থেকে বল ধরে দ্রুতগতিতে ছুটে ঠাণ্ডা মাথায় আগুয়ান কমলজিতের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দেন ছাংতে। একটি অ্যাসিস্টের পর কুড়ি বছরের ভারতীয় ফুটবলারের গোলও, যা তাঁর আত্মবিশ্বাস আরও বাড়াবে, নিশ্চিত।

তার ঠিক ১১ মিনিট পর তৃতীয় গোল। এবার আরও এক ভারতীয় প্রীতম কোটালের পাস থেকে দুর্দান্ত গোল মিরাবাজের। বাঁপায়ের শটে, দূর থেকে। ম্যাচ নিশ্চিতভাবেই ঢলে পড়ে দিল্লি ডায়নামোসের দিকে, যারা গতবার সবচেয়ে বেশি গোল করে সেমিফাইনালে উঠেও শেষ পর্যন্ত ফাইনালে পৌঁছতে পারেনি।

এফসি পুনে সিটির হয়ে একটি গোল শোধ করেছিলেন এমিলিয়ানো আলফারো তৃতীয় গোলের ঠিক পরেই। আলফারোর বাঁপায়ের নিচু শট প্রীতম কোটালের পায়ে লেগে দিক পরিবর্তন করে গোলে যায়। আলবিনো গোমসের কিছু করার ছিল না। পাস দিয়েছিলেন আরও এক ভারতীয় সার্থক গোলুই। বিদেশিদের গোলের পাশাপাশি ভারতীয়রাও যে উঠে আসছেন প্রবল ভাবে, আবারও বোঝাল এবারের আইএসএল-এর পঞ্চম ম্যাচ।
খেলার একেবারে শেষে, ইনজুরি টাইমের চতুর্থ মিনিটে পুনের হয়ে আর একটি গোল করে ব্যবধান কমিয়েছিলেন তেবার। মার্সেলিনিওর পাস ডানদিক থেকে বক্সের মধ্যে মাটিঘেঁষা, যা দিল্লির কোনও ডিফেন্ডারই ধরতে পারেননি। গোলরক্ষকের সামনে দাঁড়িয়ে বিনা বাধায় গোলে ঠেলে দিয়েছিলেন তেবার। শেষ ৪৫ মিনিটে পাঁচ গোল।
স্পেনীয় কোচ মিগেল আনজেল পর্তুগালের লক্ষ্য এবার স্বাভাবিকভাবেই দিল্লিকে ফাইনালে নিয়ে যাওয়া, যারা আগে দুবার সেমিফাইনালে উঠলেও ফাইনালে একবারও পৌঁছতে পারেনি। আর সেই লক্ষ্যে এদিন খেলার শুরু থেকেই দাপট ছিল দিল্লির। শত চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচে ফিরতে পারেনি পুনে।