এক ঘণ্টা ভাল খেলার পর ছেলেরা ক্লান্ত হয়ে পড়ে: কার্লস কুয়াদ্রাত
‘ওদের তৃতীয় গোলের পর আমাদের আর তেমন কিছু করার ছিল না। তখন ম্যাচের শেষ দিক। শারীরিক ভাবে আর পারছিল না ছেলেরা। এক ঘণ্টা পর্যন্ত আমরা লড়াই করেছি। কিন্তু তৃতীয় গোলের পর সেই লড়াই শেষ হয়ে যায়’।
ক্লান্তির জন্যই যে আইএসএলে লিগ পর্বের শেষটা একেবারেই ভাল হল না, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই ইস্টবেঙ্গল এফসি-র হেড কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত। তাঁর মতে, ম্যাচের এক ঘণ্টা পর্যন্ত ভাল খেলার পর যখন তিন নম্বর গোল করে দেয় পাঞ্জাব এফসি, তখনই দলের ফুটবলারদের উৎসাহে ভাটা পড়ে এবং শারীরিক ভাবেও ক্লান্ত হয়ে পড়েন।
বুধবার লিগ তালিকায় ১১ নম্বরে থাকা পাঞ্জাব এফসি-র কাছে ১-৪ গোলে হারে সেরা ছয়ে জায়গা পাকা করার তাগিদ নিয়ে খেলতে নামা ইস্টবেঙ্গল এফসি। এই জয়ের পর পাঞ্জাব তিন ধাপ লাফিয়ে আট নম্বরে উঠে যায় এবং ইস্টবেঙ্গল থেমে যায় সাতেই। তাদের এই হারের ফলে চেন্নাইন এফসি প্লে অফে ঢুকে পড়ল।
ম্যাচের পর স্প্যানিশ কোচ কার্লস কুয়াদ্রাত ক্লাবের মিডিয়া টিমকে বলেন, “শুরুটা আমরা ভালই করেছিলাম। বেশ কয়েকটা গোলের সুযোগও তৈরি করেছিলাম, তার মধ্যে কয়েকটা হাফ চান্সও ছিল। শুরুতেই গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল আমাদের। ওরা প্রথমে গোল করার পরও আমাদের ছেলেদের প্রতিক্রিয়া ইতিবাচক ছিল। আমরা সমতা আনি। দ্বিতীয় গোলটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। যার ফলে আমাদের পরিস্থিতি অনেক কঠিন হয়ে যায়। তাও চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আজ আমাদের ছেলেরা ক্লান্ত ছিল। কারণ, সাত দিনে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে হয়েছে আমাদের”।
কোচের ধারণা, ম্যাচের এক ঘণ্টা পর্যন্ত লড়াই করেছে তাঁর দল। বলেন, “দ্বিতীয়ার্ধে, আমরা একটা ভাল সুযোগ পেয়েছিলাম, যখন আমন বক্সের মধ্যে গোল করার ভাল সুযোগ পেয়ে যায়। তখনও আমরা খেলায় ছিলাম। ৬০ মিনিট পর্যন্ত আমাদের ফুটবলারদের খেলা দেখে মনে হয়নি যে ওরা ক্লান্ত। তবু আমরা ফেলিসিওকে নামাই, আরও কতগুলো পরিবর্তন আনি। কিন্তু ওরা যখন তৃতীয় গোল করে, তার পরে আমাদের আর তেমন কিছু করার ছিল না। তখন ম্যাচের শেষ দিক। শারীরিক ভাবে আর পারছিল না ছেলেরা। এক ঘণ্টা পর্যন্ত আমরা লড়াই করেছি। কিন্তু তিন নম্বর গোলের পর সেই লড়াই শেষ হয়ে যায়”।
প্লে-অফে উঠতে না পারায় ক্লাবের সমর্থকদের কাছে ক্ষমাও চেয়ে নেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের জন্য আমরা দুঃখিত। তবে আমরা প্লে অফে ওঠার জন্য শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লড়েছি”।
এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গল ডুরান্ড কাপে রানার্স হয়েছে, সুপার কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আইএসএলের গত তিন মরশুমের তুলনায় এ মরশুমে যেমন সবচেয়ে বেশি গোল করেছে তারা, তেমনই সবচেয়ে কম গোল হজমও করেছে। এ রকম একটা মরশুম নিয়ে কুয়াদ্রাত বলেন, “গত তিন মরশুমে ক্লাবের পারফরম্যান্স যে রকম নেতিবাচক হয়, তাতে পরিবর্তন আনার জন্যই আমার এখানে আসা। সে দিক থেকে দেখতে গেলে আমি খুশি যে অনেক কিছুই পরিবর্তন এসেছে। আইএসএলে আমাদের সবচেয়ে ভাল পারফরম্যান্স এই মরশুমেই হয়েছে। বহুকাল পর আমরা ট্রফি জয়ের জন্য লড়েছি, ট্রফি জিতেওছি। গত পাঁচ বছর আমরা কোনও ফাইনালে উঠতে পারিনি। এ বার উঠেছি এবং চ্যাম্পিয়নও হয়েছি। এশীয় স্তরের টুর্নামেন্টে খেলার সুযোগও অর্জন করেছি। ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনেক তরুণ ফুটবলারকে প্রথম দলে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে”।
কার্লস কুয়াদ্রাতের মাথায় এখন পরবর্তী মরশুমের পরিকল্পনা ঘুরপাক খাচ্ছে। সেই সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা নতুন করে শুরু করার দিকে এগোচ্ছি। পরের মরশুমের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা শুরু করে দিয়েছি। পরের মরশুমের জন্য এমন একটা স্কোয়াড তৈরি করতে হবে, যা আমাদের আইএসএল প্লে-অফে পৌঁছে দিতে পারবে এবং খেতাবি লড়াইয়ে দলকে জেতাতে পারবে”।