বৃহস্পতিবার ফতোরদায় দলের পারফরম্যান্সে পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে না পারলেও এটিকে মোহনবাগানের স্প্যানিশ কোচ হুয়ান ফেরান্দোকঠিন সময়েও তাঁর দলের ছেলেদের লড়াইয়ে মুগ্ধ। আরও খুশি দলের অন্যতম সেরা তারকা রয় কৃষ্ণা তাঁর কঠিন সময় কাটিয়ে স্বমেজাজে মাঠে ফিরতে পেরেছেন বলে। এখন তাঁর লক্ষ্য, শীর্ষে থেকে লিগ শেষ করা। বৃহস্পতিবার ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের তিনি যা বললেন, তার উল্লেখযোগ্য অংশ এখানে তুলে ধরা হল।

চেন্নাইনের দাবি করেছেন, তারা আজ আপনাদের জয়টা বেশ কঠিন করে তুলেছিল। আপনি কি একমত?

সত্যি বলতে, বল পজেশন, আক্রমণ, জায়গা তৈরি করার ক্ষেত্রে আমরা প্রথমার্ধে অনেক এগিয়ে ছিলাম। দ্বিতীয়ার্ধে দল খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ে। আমাদের ওপর যথেষ্ট চাপ ছিল। কারণ, প্লে অফে যাওয়ার জন্য তিন পয়েন্ট পেতেই হত আমাদের। চেন্নাইনের ক্ষেত্রে সেই চাপটা ছিল না। ওরা ম্যাচটা উপভোগ করতে নেমেছিল। আর উপভোগ করতে নামলে দল ভাল খেলে।

দুই অর্ধেই আপনাদের একাধিক শট পোস্টে লেগেছে, অল্পের জন্য বল গোলে ঢোকেনি। এই স্কোরটা কি আপনাদের দুর্ভাগ্যের জেরে হল?

এটা ঠিকই যে প্রথমার্ধে আমরা অনেকগুলো ক্লিয়ার চান্স পেয়েছিলাম। হয়তো ২-০ হতে পারত। তবে দ্বিতীয়ার্ধে আমরা সেরাটা দিতে পারিনি। কারণ, দল তরতাজা ছিল না, ভাল সুযোগও তৈরি করতে পারিনি আমরা। তা ছাড়া, অনেক ভুল পাস খেলেছি, ওঠা-নামাও প্রথমার্ধের মতো ভাল হয়নি। প্রথমার্ধের খেলায় আমি খুশি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে ক্লান্তির জন্য সাধারণ ফুটবল খেলেছি আমরা। তবে আমার দলের খেলোয়াড়রা যে রোজ নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে, সে জন্য আমি খুশি।

রয় কৃষ্ণা এ বছর (২০২২) প্রথম গোল পেলেন। ওঁর গোলে ফেরাটা নিশ্চয়ই আপনাদের পক্ষে শুভ?

অবশ্যই। রয়ের জন্য আমি খুবই খুশি। কারণ, ও আর ওর পরিবার খুব কঠিন সময় পেরিয়ে এসেছে। কোয়ারান্টাইন, ওর বাচ্চার কথাও নিশ্চয়ই সবাই শুনেছেন, কোভিড সব মিলিয়ে দুঃসময় কাটিয়ে এসেছে ও। তবে আমি খুশি যে কোভিডের সঙ্গে লড়াইটা ও প্রায় শেষ করে এনেছে। আশা করি আর দিন কুড়ি পরে আমরা এই জৈব সুরক্ষা বলয় থেকে বেরোতে পারব এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারব।

আপনি যখন দলে যোগ দিয়েছিলেন, তখন দল সাত নম্বরে ছিল। তার পর থেকে অপরাজিত রয়েছে। সেমিফাইনালেও কি এই ছন্দ বজায় থাকবে বলে মনে করেন?

আমি খুশি, তবে এটা শুধু আমার কাজের জন্য নয়। প্রথমত, ক্লাবের মালিক কর্তৃপক্ষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। দ্বিতীয়ত, খেলোয়াড়রা অসাধারণ। ওরা ওদের এবং আমাদের কাজটাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করে। আমাদের কোচিং স্টাফের সদস্যরাও যথেষ্ট দক্ষ। দলের প্রত্যেকে রোজই তাদের সেরাটা দিয়েছে। এ সবেরই ফল এটা। জানি না, কত ম্যাচে আমরা অপরাজিত। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছি আমরা, এটাই আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। প্লে অফে আমাদের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে।

সন্দেশ ঝিঙ্গনকে চোট নিয়ে খেলতে দেখা গিয়েছে এ দিন। শেষ ম্যাচে তিনি খেলতে পারবেন?

আশা করি। এখন আমাদের দেখতে হবে কী কী সমস্যা রয়েছে দলে। তবে কে কী অবস্থায় আছে, তা দেখার জন্য সময় দরকার। যেমন জনি (কাউকো) ওর পেশী শক্ত হয়ে গিয়েছিল। ও বহু ম্যাচেই ৯০ মিনিট খেলেছে। কোয়ারান্টাইনের পরে এমন হওয়াই স্বাভাবিক।

আপনাদের মুখোমুখি হওয়ার আগে জামশেদপুর এফসি-কে ওডিশার বিরুদ্ধে খেলতে হবে। এই ম্যাচটাকে কী ভাবে দেখছেন?

আশা করব, ওডিশা আমাদের সাহায্য করবে। সোমবার আমাদের কাছে কার্যত ফাইনাল। জামশেদপুরের এই মরশুমটা খুব ভাল যাচ্ছে। ওরা যদি ওডিশাকে হারায়, তা হলে অভিনন্দন জানাতেই হবে।

আপনাদের সেক্ষেত্রে দুগোলে ওদের হারাতেই হবে।

হ্যাঁ, অবশ্যই। আমরা চেষ্টা করব। আমাদের লক্ষ্য ম্যাচটা জিতে লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা। তবে তা যদি নাও হয়, তা হলে সেটা মেনে নিতেই হবে। কারণ, ওরা এই মরশুমে খুব ভাল খেলেছে। কেরালা, হায়দরাবাদও যথেষ্ট ভাল ফুটবল খেলেছে।