শেষ ম্যাচেও ভাল তো কিছু করতে পারলই না তাঁর দল, উল্টে ২-১-এ এগিয়ে থেকেও ছ-ছ’টা গোল হজম করতে হল, এটা একেবারেই মেনে নিতে পারছেন না এসসি ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কোচ রবি ফাউলার। চার ম্যাচের নির্বাসন কাটিয়ে শনিবারই দলের সঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন ফাউলার। দেখলেন দলের চরম পরাজয়ের করুণ দৃশ্য। চলতি হিরো আইএসএলে সবচেয়ে নীচে থাকা ওডিশা এফসি-র কাছে ৫-৬ হারের পরে ফাউলার বলেন, “এটা নেওয়া খুব কঠিন। বিরতিতে আমরা যখন ভাবছিলাম, ম্যাচটা জিতব, তখন দ্বিতীয়ার্ধের দুটো গোলই আমাদের ব্যাকফুটে পাঠিয়ে দিল”!   

সারা ম্যাচে বাইশ শতাংশ বেশি বল পজেশন থাকা সত্ত্বেও এ দিন এসসি ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি মাঝমাঠ ও রক্ষণের ব্যর্থতায়। প্রথমার্ধে তারা ২-১-এ এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধে পরপর গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে তারা। চার মিনিটের তাদের বিরুদ্ধে তিনটি গোল করে ৩-৩ থেকে ৬-৩-এ এগিয়ে যায় ওডিশা। গত ম্যাচে তারা মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে ছ’গোল খেয়েছিল। এ দিন সেই ছ’টি গোল তারা ফিরিয়ে দিল এসসি ইস্টবেঙ্গলকে। অবশ্য নিজেদের ডিফেন্সের ব্যর্থতায় পাঁচটি গোল খেয়েও যায় তারা। তবে সব মিলিয়ে দুই দল মিলে এই ম্যাচে এক নতুন নজির গড়ে ফেলল। 

এগারো গোলের এই ম্যাচে ওডিশার দলের দুই প্রতিভাবান মিডফিল্ডার পল রামফাঙজোভা ও জেরি মাওয়িমিঙথাঙ্গা জোড়া গোল করেন। ওয়েলশ থেকে আসা এসসি ইস্টবেঙ্গলের মিডফিল্ডার অ্যারন হলোওয়েও দু’টি গোল করেন। লাল-হলুদ বাহিনীর পক্ষে অ্যান্থনি পিলকিংটন ও জেজে লালপেখলুয়া একটি করে গোল করেন। তাদের দ্বিতীয় গোলটি আসে ওডিশার গোলকিপার রবি কুমারের হাতে লেগে। অর্থাৎ নিজগোলে। লালরেজুয়ালা ও দিয়েগো মরিসিও ওডিশার হয়ে বাকি দু’টি গোল করেন। 

নিজের দলের রক্ষণ বিভাগের সমালোচনা করে ফাউলার বলেন, “আমাদের রক্ষণ একেবারেই ভাল কিছু করেনি। ওরা যখনই আক্রমণে উঠেছে, তখনই মনে হচ্ছিল গোল করে দেবে। মনসংযোগের একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু করার নেই। বাস্তবটাকে মেনে নিতেই হবে। এই লিগে বারবার প্রমাণিত হয়েছে, যে কোনও দল যে কোনও দিন হারতে বা জিততে পারে। পাঁচ ম্যাচ আগেও আমরা সেরার চারে লক্ষ্য এগোচ্ছিলাম। কিন্তু আমাদের দলের ছেলেদের মনসংযোগ ও দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের শুরু বারবার ডুবিয়েছে”।

হেরে গেলেও লিগ টেবলে ন’নম্বরে থেকেই প্রথম হিরো আইএসএল শেষ করল এসসি ইস্টবেঙ্গল। তবে ফাউলার আশাবাদী, আগামী মরশুমে আরও শক্তিশালী দল নিয়ে ফিরে আসবেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বলেন, “সঠিক খেলোয়াড় বাছাই। তাদের প্রস্তুতিতে যথেষ্ট সময় ব্যয় করা। ভাল খেলার জন্য ছেলেদের কাছ থেকে আমি কী চাইছি, সেটা স্পষ্ট করে বোঝানো, এসব ব্যাপারগুলো ঠিকঠাক হলে আমরা আরও ভাল করতে পারি। এই মরশুমে আমরা প্রস্তুতির জন্য যথেষ্ট সময় পাইনি। যে ভাবে খেলতে চেয়েছি, সে ভাবে খেলতেও পারিনি। ফিটনেসেরও সমস্যা ছিল আমাদের শিবিরে”।

ওডিশার ভারতীয় কোচ স্টিভন ডায়াস দলের ছেলেদের খেলায় খুবই খুশি। বলেন, “খুবই আনন্দদায়ক ম্যাচ হয়েছে। আমার ওপর যথেষ্ট চাপ ছিল। ম্যাচের আগে যখন ছেলেদের সঙ্গে কথা বলছিলাম, তখন ওরা আমাকে বলে ওরা আমার পাশে আছে এবং এই ম্যাচে নিজেদের প্রমাণ করে দেবে। সেই জন্যই ওদের জন্য আমি খুব খুশি”।