রয় কৃষ্ণার পর এ বার এটিকে মোহনবাগান শিবিরে খুশির খবর নিয়ে এলেন বাংলার তারকা ফুলব্যাক প্রবীর দাস। আরও তিন বছরের জন্য এই ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হলেন তিনি। তাঁকে নিয়ে অনেক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল। অবশেষে সরকারি ভাবে এই খবর প্রকাশ করল হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগ কর্তৃপক্ষ। গত মরশুমে এটিকে এফসি-র আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পিছনে সোদপুরের এই ফুটবলারের অবদান ছিল যথেষ্ট। এ বার তিনি সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে মাঠে নামার জন্য মরিয়া।

নতুন হিরো আইএসএল ক্লাবের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে খুশি প্রাক্তন মোহনবাগানী প্রবীর বলেন, “এটিকে মোহনবাগান এফসি-র সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হতে পেরে আমি খুবই খুশি। আমার ভক্তদের অসংখ্য ধন্যবাদ। ক্লাব কর্তৃপক্ষকেও ধন্যবাদ। আমার পুরনো ক্লাব ও নতুন ক্লাব এক হয়ে গিয়েছে ও সেই ক্লাবের হয়ে খেলাটা আমার কাছে খুবই রোমাঞ্চকর। দুই ক্লাবের কাছ থেকেই আমি অনেক ভালবাসা পেয়েছি। বাংলার ছেলে হিসেবে এটিকে মোহনবাগানের হয়ে খেলাটা আমার কাছে গর্বের বিষয়। গত বারের মতো এ বারও নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। নতুন ক্লাবের জার্সি গায়ে মাঠে নামার জন্য ছটফট করছি। আর তর সইছে না যেন”।

পৈলান অ্যারোজ ও ডেম্পো স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে হিরো আই লিগে খেলে ফুটবল জীবন শুরু করেন প্রবীর। হিরো আইএসএলে প্রথম দু’বছর খেলেন যথাক্রমে এফসি গোয়া ও দিল্লি ডায়নামোজের হয়ে। তাঁর ফুটবল জীবনের সেরা মুহূর্ত আসে ২০১৬-য় যখন এটিকে-র সঙ্গে হিরো আইএসএল খেতাব জেতেন। কিন্তু জীবনের সবচেয়ে সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন পর্বটি তিনি কাটান ২০১৮-১৯ মরশুমে, যে বার চোটের জন্য তাঁকে সারা বছরটা মাঠের বাইরে বসে ও রিহ্যাব করে কাটাতে হয়। তবে গত মরশুমে স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেস হাবাসের তত্ত্বাবধানে যে ভাবে ঘুরে দাঁড়ান প্রবীর, তা ছিল অকল্পনীয়।

২৬ বছরের এই রাইট ব্যাক গত মরশুমে পাঁচটি গোলে প্রত্যক্ষ ভাবে সাহায্য করেন। নিজেকে লিগের অন্যতম সেরা অ্যাটাকিং ডিফেন্ডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন প্রবীর।  পরিসংখ্যান বলছে, সারা লিগে সব মিলিয়ে ৮৫টি ক্লিয়ারেন্স, ৬৪টি ট্যাকল ও ৩১টি ইন্টারসেপশন ও ২৪টি ব্লক করেন প্রবীর। এক দিকের উইং দিয়ে যে ভাবে ক্ষিপ্র গতিতে উঠে বিপক্ষের ত্রাস হয়ে ওঠেন তিনি, তা দেখে গর্বে বাঙালি ফুটবলপ্রেমীদের বুক ফুলে ওঠে।

অনেক দিন পরে কোনও বাঙালি ফুটবলারকে এমন সাহসী ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখে সবাই খুব খুশি। এমনকী, প্রবীরের পারফরম্যান্সে মুগ্ধ এই লিগে খেলতে আসা বিদেশী ফুটবলাররাও। তাংর সতীর্থরা তো বটেই, অন্যান্য দলের বিদেশীদের মুখেও এই বাঙালি ফুটবলারের প্রশংসা শোনা যায়। এ বারও সেই প্রবীরকে পেয়ে গেল কলকাতার দল। তবে এক নয়, পুরো তিন বছরের জন্য। প্রবীরের কাছে তো বটেই আপামর বাঙালি ফুটবলপ্রেমীদের কাছে যা সত্যিই দারুণ খবর।