দু’বারের আইএসএল চ্যাম্পিয়ন এটিকে-কে সাফল্যের পথে ফিরিয়ে আনতে স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের অস্ত্র তাঁর সেই চেনা আগ্রাসী ফুটবল, যা তিনি ফুটবলের মক্কায় ফিরিয়ে আনতে চান I

২০১৪ ও ২০১৫—এই দু’বছর এটিকে-র কোচের ভূমিকায় ছিলেন তিনি I প্রথম বছরই ফাইনালে কেরালা ব্লাস্টার্সকে এক গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় কলকাতার দল I পরের বছর প্লে অফে উঠেও ছিটকে যায় তারা I ২০১৬-য় ফের চ্যাম্পিয়ন হয় এটিকে I তবে সে বার কোচের ভূমিরায় হাবাস ছিলেন না I ছিলেন প্রাক্তন ভিয়ারিয়েল ম্যানেজার ফ্রন্সিসকো মলিনা I

পরের দু’বারে যথাক্রমে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন স্ট্রাইকার টেডি শেরিংহ্যাম ও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের প্রাক্তন স্ট্রাইকার স্টিভ কপেলের হাতে ছিল দল I কিন্তু কোনও বারেই প্লে-অফে উঠতে পারেনি জোড়া চ্যাম্পিয়নরা I নয় ও ছয় নম্বরে থেকে লিগ শেষ করে তারা I এ বার তাই এটিকে ম্যানেজমেন্ট নড়েচড়ে বসেছে I হাবাসকে ফের কোচের পদে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে শুরু হয়েছে তাদের সাফল্যের রাস্তায় ফেরার প্রক্রিয়া I

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দল নিয়ে প্রস্তুতির পরে স্প্যানিশ কোচের ধারণা, “দল ঠিক পথেই এগোচ্ছে I লিগ শুরু হতে এখনও ১৫ দিন বাকি I সামনের এই ১৫ দিন আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ I এই কয়েক দিনে দলের ছেলেদের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়াটাই প্রধান কাজ I” গত দু’বছর ধরে ব্রিটিশ কোচেদের তত্ত্বাবধানে থাকার পরে ফের স্প্যানিশ ঘরানায় ফিরছে এটিকে I হাবাসের বক্তব্য, “লিগ জিততে হলে আমাদের আগ্রাসী ফুটবল খেলতেই হবে I তবে তা পরিচ্ছন্ন ভাবে I আক্রমণ ও রক্ষণের প্রধান চরিত্রদের মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করাটাই ফুটবলে সাফল্যের মূলমন্ত্র I বোশি গোল করো ও কম গোল খাও, এটাই ফুটবলের শেষ কথা I সেটা করতে যা করা দরকার, সেটাই ফুটবলের ভারসাম্য I”

কলকাতায় ফেরার সুযোগ পেয়ে খুশি হাবাস বলছেন, “কলকাতায় ফিরতে পেরে আমি খুশি I এই শহরকে ও নিজের কাজ উপভোগ করতে চাই I একটা ভাল দল গড়ে তোলার জন্য কয়েক দিন ধরে প্রচুর খেটেছি আমরা I সামনের দিনগুলোতে আরও পরিশ্রম করতে হবে I এখন মরশুম শুরু হওয়ার অপেক্ষায় আছি I ছেলেরা যে ভাবে প্রতি দিন উন্নতি করছে, তাতে আমি আশাবাদী এ বার ভাল কিছুই হবে I”

এ বার কলকাতার দলে বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে দেশীয় ফুটবলারদের একটা ভাল মিশ্রণ তৈরি করার চেষ্টায় রয়েছেন হাবাস I ফিজির অধিনায়ক ও প্রাক্তন অলিম্পিয়ান রয় কৃষ্ণাকে চুক্তিবদ্ধ করানোটা যেমন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা, তেমনই এডু গার্সিয়া, জন জনসন, দারিও ভিদোসিচ, কার্ল ম্যাকহিউর মতো বিদেশিরাও আছেন দলে I

তাঁদের সঙ্গে ভারতীয় তারকা বলবন্ত সিং, প্রীতম কোটাল, প্রণয় হালদার, জবি জাস্টিন, মাইকেল সুসেইরাজ, শেহনাজ সিংদেরও সমান সুযোগ দেওয়ার পক্ষে হাবাস I সাংবাদিকদের তিনি জানিয়ে দেন, “আমাদের দলের ভারতীয় ফুটবলাররা যথেষ্ট ভাল I আমার বিশ্বাস, ওরা ভাল খেলবে I আইএসএলে খেলা ভারতীয় ফুটবলাররা অনেক উন্নত, কারণ, তারা বিদেশিদের সঙ্গে ভাল বোঝাপড়া গড়ে তোলে I বিদেশি ফুটবলারদের কাছ থেকেও অনেক সাহায্য পায় ওরা I ফলে নিজেদের উন্নত করে তুলতে পারে I আমাদের দলে ভারতীয় ও বিদেশিদের আলাদা চোখে দেখা হবে না I একটা ভারসাম্যযুক্ত দল গড়ে তুলতে যাদের মাঠে নামানো দরকার, তাদেরই নামানো হবে I প্রত্যেকেরই দায়িত্ব গোল করা বা গোল করতে সাহায্য করা I আমার মনে হয় ফুটবলে প্রতিযোগিতাটা ক্রমশ বাড়ছে I কোচেরাও এখন অনেক বেশি কৌশলী I তাই মানিয়ে নেওয়াটা প্রথম কাজ I তার পরে এগিয়ে চলো I”

২০ অক্টোবর কেরালা ব্লাস্টারর্সের বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে এ বারের আইএসএল শুরু করছেন হাবাসরা I তাঁদের দ্বিতীয় ম্যাচ ঘরের মাঠে, ২৫ অক্টোবর নবাগত হয়দরাবাদ এফসি-র বিরুদ্ধে I