দেশের ঘরোয়া ফুটবল মরশুম এখন থেকে আরও দীর্ঘ হচ্ছে, এই খবর পেয়ে বেশ খুশি গতবারের হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হায়দরবাদ এফসি-র কোচ মানুয়েল মার্কেজ। তাঁর মতে, এর ফলে ভারতীয় ফুটবলাররা আরও দ্রুত নিজেদের উন্নত করে তুলতে পারবেন।

হিরো আইএসএল যে বছর প্রথম শুরু হল, ২০১৪-য়, তখন মাত্র আটটি দল এতে অংশ নিত। পাঁচ মাসের মরশুমে প্রত্যেক দলকে সর্বোচ্চ ১৭টি ম্যাচ খেলতে হত। নক আউট পর্বে না উঠতে পারলে আরও কম ম্যাচ খেলার সুযোগ পেত ক্লাবগুলি। ক্রমশ ক্লাবের সংখ্যা বেড়ে ১১ হওয়ায় ম্যাচের সংখ্যা কিছু বাড়লেও মরশুমের মেয়াদ পাঁচ মাসই রয়ে গিয়েছে, যা এশিয়ার সফল ফুটবলখেলিয়ে দেশগুলির মরশুমের চেয়ে অনেক ছোট।

এ বার থেকে, অর্থাৎ ২০২২-২৩ মরশুম থেকে, হিরো আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল) সিদ্ধান্ত নিয়েছে মরশুমের মেয়াদ বাড়িয়ে ন’মাস করার। যেমনটা ইউরোপের ফুটবলে হয়। তাই আসন্ন মরশুমে ক্লাব ফুটবল অগস্টে শুরু হয়ে মে মাসে শেষ করা হবে, এমনই ঠিক করা হয়েছে।

হিরো আইএসএলে ২০টি ছাড়াও ক্লাবগুলিকে দীর্ঘায়িত মরশুমে অন্তত ২৮টি করে ম্যাচ খেলতে হবে। ডুরান্ড কাপ ও সুপার কাপে অন্তত চারটি করে ম্যাচ খেলতে হবে ক্লাবগুলিকে। মানুয়েল মার্কেজ মনে করেন, এই পরিকল্পনা খুবই ভাল এবং এতে ভারতীয় ফুটবল যথেষ্ট লাভবান হবে।

তাঁর মতে, “ডুরান্ড কাপ, আইএসএল ও সুপার কাপ নিয়ে যে ন’মাসের মরশুমের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তা খুবই ইতিবাচক। আমাদের একটা টুর্নামেন্ট বেশি খেলতে হবে—এএফসি কাপ বাছাই। টানা ম্যাচ না খেললে বা প্রস্তুতি না নিলে ফুটবল ও ফুটবলারদের উন্নতি সম্ভব নয়। ছ-সাত মাসের অফ সিজন অত্যাধিক লম্বা। প্রতি মরশুমের পরেই ভারতে ভাল ভাল উদীয়মান ফুটবলার উঠে আসে। তারা আরও বেশি সংখ্যক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে, যাতে জাতীয় দলেরও উন্নতি হবে”। সর্বভারতীয় দৈনিক ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে কথাগুলি বলেন মার্কেজ।

ভারতীয় ফুটবলের নতুন তারকা সহাল আব্দুল সামাদও সম্প্রতি একই কথা বলেন। তাঁর মতে, “এর ফলে আমাদের ফুটবলাররা পেশাদার ফুটবলার হিসেবে আরও উন্নতি করতে পারবে। যে কোনও ফুটবলারের দরকার আরও বেশি ম্যাচ, আরও বেশি সময় মাঠে থাকা এবং দীর্ঘ সময় ধরে খেলার ছন্দে থাকা। মাঝের ফাঁকা সময়টা এ দেশে অনেক বেশি, সেটাও এর ফলে কমে যাবে। দুই মরশুমের মধ্যে সময়ের দূরত্বটা বড্ড বেশি ছিল। তা কমে যাওয়ায় ফুটবলারদের ফোকাস করতে সুবিধা হবে এবং সবাই ম্যাচ ফিট থাকতে পারবে”।

কেরালা ব্লাস্টার্সের এই তারকা মিডফিল্ডার আরও বলেন, “আরও বেশি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেলে খেলোয়াড়রা ম্যাচ ফিট থাকতে পারবে। ছুটির মেয়াদ কমলে খেলোয়াড়রা ফুটবলের ওপর অনেক বেশি ফোকাস করতে পারবে। আমরা এটাই করার চেষ্টা করি। সব সময়ই ফোকাসড্ থাকতে চাই আমরা। এর ফলে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে নিজেকে আরও উন্নত করে তুলতে আমার আরও সুবিধা হবে”।