ভারতের ঘরোয়া ফুটবল মরশুমের মেয়াদ বাড়ার খবরে খুশি দেশের ফুটবল মহল। দেশের ফুটবলার থেকে শুরু করে কর্মকর্তা, কোচ সবাই এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন হিরো ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সঙ্গে যুক্ত বর্তমান ও প্রাক্তন কোচেরাও। তাঁদের বেশিরভাগরেই মতে, ক্লাব মরশুম দীর্ঘ হলে আখেরে লাভ হবে ভারতীয় ফুটবলেরই।

প্রাক্তন চেন্নাইন এফসি-র প্রধান কোচ জন গ্রেগরি যেমন বলেছেন, “ক্লাব মরশুমে বেড়ে ন’মাসের হওয়ায় কোচ, খেলোয়াড় ও কর্তাদের অনেক সুবিধা হবে। দূরপাল্লার প্রকল্পে নিজেদের জড়ানোটা অনেক আকর্ষণীয়। কোচ হিসেবে আমার কাছেও এটা ভাল খবর। এর ফলে প্রতি ম্যাচের পরে খেলোয়াড়রা পরের ম্যাচের জন্য নিজেদের তরতাজা করে তোলার ঠিকমতো সময় পাবে। ফলে তাদের পারফরম্যান্স আরও ভাল হবে। কোচেদেরও নিজেদের পরিকল্পনা ও ধারনাগুলিকে বাস্তাবায়িত করতে আরও সুবিধা হবে”।

হিরো আইএসএলের আয়োজক ফুটবল স্পোর্টস ডেভলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল) ২০২২-২৩ মরশুম থেকে ঘরোয়া মরশুমের মেয়াদ বাড়িয়ে ন’মাস করার প্রস্তাব দিয়েছে। যেমনটা ইউরোপের ফুটবলে হয়। তাই আসন্ন মরশুমে ক্লাব ফুটবল অগস্টে শুরু হয়ে মে মাসে শেষ করা হবে, এমনই ঠিক করা হয়েছে।

হিরো আইএসএলে ২০টি ছাড়াও ক্লাবগুলিকে দীর্ঘায়িত মরশুমে অন্তত ২৮টি করে ম্যাচ খেলতে হবে। ডুরান্ড কাপ ও সুপার কাপে অন্তত চারটি করে ম্যাচ খেলতে হবে ক্লাবগুলিকে। জন গ্রেগরি মনে করেন, এই পরিকল্পনা খুবই ভাল এবং এতে ভারতীয় ফুটবল যথেষ্ট লাভবান হবে।

২০১৭-১৮ মরশুমের আগে চেন্নাইন এফসি-র কোচ হিসেবে যোগ দেন গ্রেগরি এবং দলকে সে বার দ্বিতীয় আইএসএল খেতাব জেতার পথ দেখান। সেই সময়ে ভারতীয় ফুটবলের মরশুম এত দীর্ঘ ছিল না, যা এ বার থেকে হবে বলে ঠিক করা হয়েছে। এর মধ্যে অনেকটা ইউরোপিয়ান ফুটবলের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন তিনি।

গ্রেগরি সর্বভারতীয় দৈনিক ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “এ বার অনেকটা ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের মতো হতে চলেছে ভারতের ফুটবলও। ভারতীয় ফুটবলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই। ২০১৭ থেকে শুধু উন্নতিই দেখেছি এখানকার ফুটবলে। সারা দেশে ফুটবল ক্রমশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশেষ করে আইএসএল শুরু হওয়ার পরে সারা পৃথিবী থেকে একাধিক বিশ্বমানের ফুটবলার যখন এখানে খেলতে এসেছে ও নিজেদের দক্ষতা মেলে ধরেছে, তখন এ দেশে ফুটবলের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে। ঘরোয়া মরশুমকে ন’মাসের করে তোলার সিদ্ধান্তটা খুবই সাহসী পদক্ষেপ”।

বিভিন্ন টুর্নামেন্টে সফল হওয়াটা ফুটবলারদের পক্ষে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন ৬৮ বছর বয়সি গ্রেগরি। তাঁর মতে, “যত বেশি প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে ফুটবলাররা, তত বেশি জেতার মানসিকতা বাড়বে তাদের। বিভিন্ন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল, ফাইনালে ওঠাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। গত মরশুমে যেমন লিস্টন কোলাসো, কিয়ান নাসিরি, রোহিত দানু, আকাশ মিশ্ররা যে পরিস্থিতির মধ্যে খেলেছে, তাতে তারা প্রচুর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তার এখন নিশ্চয়ই বুঝবে যে পেশাদার ফুটবলে শুধু জেতার জন্যই মাঠে নামতে হয়। এর ফলেই জেতার মানসিকতায় আরও উন্নতি হয়”।