ডাগ আউটে তিনি না থাকলেও শনিবার ঘরের মাঠে লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা দল এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে এটিকে এফসি-র কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের অনুপস্থিতি সামলে নেওয়া খুব একটা কঠিন হবে বলে মনে করেন না দলের সহকারী কোচ ম্যানুয়েল পেরেজ।

গত ম্যাচের শেষ দিকে অসংযত আচরণের জন্য হাবাসকে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যেতে হয়। যার জেরে এই ম্যাচেও দলের সঙ্গে থাকা হবে না তাঁর। সহকারী কোচেরা থাকবেন ডাগ আউটে। কিন্তু হাবাস যে ভাবে বাইরে থেকে দলের ফুটবলারদের নির্দেশ দিয়ে থাকেন, সে ভাবে তাঁরা পারবেন কি? শুক্রবার সাংবাদিকদের ম্যানুয়েল বলেন, “আমরা একটা দল। আমরা সবাই মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিই। কী ভাবে কাল খেলতে হবে, তা জানা আছে আমাদের ছেলেদের। মাঠের পাশে শুধু আমাদের হেড কোচ থাকবেন না। বাকি সব কিছুই যেমন চলে, তেমনই চলবে”।

গোয়ায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ১-২ গোলে হেরে এসেছিল এটিকে। তবে এ বার তাদের নিজেদের মাঠে পেয়ে প্রতিশোধ নিতে চায় এটিকে শিবির। দলের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার অগাস্টিন ইনিগেজের বক্তব্য, “গোয়া যে ভাল, লিগের অন্যতম সেরা। তা আমরা জানি। তবে আমরা ওদের হারাতে পারি। আগের ম্যাচটা হেরে গিয়েছিলাম, কারণ সেই ম্যাচে আমরাই ভাল খেলতে পারিনি। কিন্তু এই ম্যাচটা জেতার জন্য আমরা খুব পরিশ্রম করছি”।

হ্যামস্ট্রিং চোটে মাঠের বাইরে থাকা অস্ট্রেলিয়ান তারকা স্ট্রাইকার ডেভিড উইলিয়ামস ও একই চোটে মাঠের বাইরে থাকা মিডফিল্ডার প্রণয় হালদার যে এই ম্যাচেও খেলতে পারবেন না, তা জানিয়ে সহকারী কোচ ম্যানুয়েল পেরেজ বলেন, “ওদের দুজনের কাউকেই কাল পাওয়া যাবে না। তবে এডু গার্সিয়াকে ১৮ জনের দলে রাখা হবে। কালকের ম্যাচটা জেতা আমাদের কাছে খুব জরুরি। সারা মরশুমেই গোয়া আর আমাদের মধ্যে শীর্ষস্থান দখলের লড়াই হয়ে চলেছে। তাই এই ম্যাচে হার মানে এই দৌড়ে অনেকটা পিছিয়ে যাওয়া। আমাদের কাল জিততেই হবে। আর ঘরের মাঠে খেলাটা সব সময়ই বিশেষ ব্যাপার। ঘরের মাঠে গ্যালারি ভর্তি সমর্থকদের সামনে খেলব আমরা। ওরাই শক্তি জোগাবেন আমাদের খেলোয়াড়দের। তাই মনে হয় তিন পয়েন্ট পাব এই ম্যাচ থেকে”।

অন্যদিকে, এফসি গোয়ার কোচ সের্জিও লোবেরা বলেন, “আমরা হোম ম্যাচে এটিকে-কে হারিয়েছি বলে যদি বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়ে যাই, তা হলে সেটা চরম ভুল হবে। প্রতিটা ম্যাচই আলাদা। এটিকে যথেষ্ট ভাল দল। ওরা ওদের চোট পাওয়া খেলোয়াড়দের অভাব কত দ্রুত পূরণ করে নিয়েছে। এই দলটা তৈরি করতে ওরা অনেক পরিশ্রম করেছে। ওদের সত্যিই লিগটা পাওয়া দরকার। ওদের সেই ক্ষমতাও রয়েছে। তবে আমরাও লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। ওদের সঙ্গে এখন আমাদের তিন পয়েন্টের তফাৎ। কাল আমরা জিততে পারলে সেটা বেড়ে দাঁড়াবে ছয়। তাতে আমাদেরই সুবিধা হবে। এটিকে-কে হারাতে গেলে আমাদের ছেলেদের একশো শতাংশ দিতে হবে এবং আমাদের ছেলেরা সে জন্য প্রস্তুত”।

গোয়ার দলের সেরা তারকা স্প্যানিশ স্ট্রাইকার ফেরান কোরোমিনাসেরও এটিকে-র প্রতি যথেষ্ট সমীহ রয়েছে। তিনি বলেন, “এটিকে যথেষ্ট ভাল ও সংগঠিত দল। তবে গত ম্যাচে আমরা ওদের খুব চাপে রেখেছিলাম ও প্রচুর সুযোগও পেয়েছিলাম। এই ম্যাচেও আমাদের সেটাই করতে হবে”। গত দু’বারে সোনার বুটজয়ী কোরোমিনাস এ বারও সেই খেতাবের দাবিদার। তবে সে দিকে তাঁর নজর নেই। বরং দলের জয়ে অবদান রাখতে পারলেই বেশি খুশি হন তিনি। বলেন, “আমার প্রথম লক্ষ্য দলকে ম্যাচ জেতানো ও লিগ টেবলের শীর্ষে থাকা। সেটা হওয়ার পরে যদি আমি সোনার বুট পাই, তা হলে তা আমার কাছে হবে বাড়তি পাওয়া। তবে ঘরের মাঠে আমি বেশি গোল করছি। সব ম্যাচেই গোল করা উচিত আমার। অবশ্য আমি গোল না করলেও যদি দল জেতে, তা হলেও আমি খুশি হই”।     

মোহনবাগান ও এটিকে-র মধ্যে সাম্প্রতিক মৈত্রী-চুক্তির খবরে খুশি দুই কোচই। দু’জনেরই বক্তব্য, এই চুক্তির ফলে আইএসএল আরও আকর্ষণীয় হবে এবং ভারতীয় ফুটবলেরও এতে উন্নতি হবে।