টানা তিন ম্যাচে জয়। তাও আবার যথেষ্ট আধিপত্য বিস্তার করে। স্বাভাবিক ভাবেই দলের খেলায় বেশ খুশি এটিকে-র স্প্যানিশ কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। ম্যাচের শেষ দিকে ব্যবধান ধরে রাখার ক্ষমতা নিয়েই শুধু তিনি একটু চিন্তিত। বাকিটুকু দারুণ জায়গায় রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। সামনে যে সপ্তাহ দুয়েকের বিশ্রাম রয়েছে, তাতে দলকে আরও ক্ষিপ্র করে তুলতে চান তিনি। অন্য দিকে তাঁর স্বজাতীয় জামশেদপুর এফসি-র কোচ আন্তোনিও ইরিওন্দোর স্বীকার করতে কোনও দ্বিধা নেই যে, এটিকে তাঁদের চেয়ে ভাল খেলেই জিতেছে। তবে কলকাতার দলকে দেওয়া একটি পেনাল্টি ন্যায্য ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।   

দলের পারফরম্যান্স নিয়ে হাবাস শনিবার রাতে সাংবাদিকদের বলেন, “আমার জয় নিয়ে বেশি আগ্রহ। জয় পাওয়াটাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। তাই দলের পারফরম্যান্স নিয়ে আমি খুশি”। এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, “মরশুমের শুরুতে সাতজন নতুন খেলোয়াড় ছিল আমাদের দলে। ওদের সময় দেওয়ার দরকার ছিল। ওরা ক্রমশ নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি করে নিতে পেরেছে বলে মনে হচ্ছে।“ তবে দল এখনও যে সব দিক থেকে ত্রুটিমুক্ত হয়ে গিয়েছে, তা মানতে রাজি নন কলকাতার দলকে একবার আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করা স্প্যানিশ কোচ। বলেন, “ম্যাচের শেষ দিকে সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। শেষ দিকে ছন্দ ধরে রাখতে হবে আমাদের ছেলেদের। এই একটা জায়গায় এখনও উন্নতি করা দরকার।”

এতদিন রেফারিং নিয়ে সমালোচনা করে এলেও এখন তিনি এই ব্যাপারে মুখ খুলতে নারাজ। শনিবারের ম্যাচে এটিকে-র দ্বিতীয় পেনাল্টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলেও হাবাস বলেন, “রেফারিং নিয়ে আমি কিছু বলব না। পেনাল্টি বক্স থেকে অনেক দূরে ছিলাম। তাই পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নিয়ে বলতে পারব না। তবে প্রথমটা একেবারে স্পষ্ট পেনাল্টি ছিল বলে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকেও মনে হয়েছ। রেফারিং কোনও দিন ভাল হয়, কখনও খারাপ হয়। এ সব নিয়েই চলতে হবে আমাদের।“

ভারতীয় দলের বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের ম্যাচ থাকার জন্য সোমবার থেকে ১২ দিন বন্ধ থাকছে হিরো আইএসএল। কারণ, দলগুলোর বহু ফুটবলারই জাতীয় দায়িত্ব পালনের জন্য যাবেন। এই সময়টাকে কাজে লাগাতে চান হাবাস। তিনি বলেন, “আমাদের দলের ছেলেদের মানসিক বিশ্রাম দিতে হবে হবে। শারীরিক বিশ্রামও দরকার ওদের। ফুটবলে ধাপে ধাপেই উন্নতি করতে হয়। বিশ্রামের পরে সামনের পর্বের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবনা-চিন্তা ও প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। তবে শুধু আমরা নই, সব দলই কিন্তু বিশ্রাম পাবে।“

অন্য দিকে জামশেদপুরের কোচের দাবি, “আমাদের অযথা পেনাল্টি দেওয়া হয়েছে। আমার দলের ছেলেরা বলেছে, একটা পেনাল্টি ঠিক ছিল, তবে অন্যটা নয়”। তবে এটিকে-র আধিপত্য স্বীকার করে নেন তিনি। বলেন, “ওরা আমাদের চেয়ে অনেক ভাল খেলেছে আজ। এ পর্যন্ত কলকাতাকেই সবচেয়ে কঠিন দল লেগেছে।”

নিজের দল নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের সব বিভাগেই উন্নতি করতে হবে। তিনজন জাতীয় দলে আছে। ওরা আমাদের সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগই পায়নি। ওরা এলে নতুন করে উন্নতির চেষ্টা করতে হবে। ভবিষ্যতে ভাল করব আশা করি”।

কোচের ধারণা, দলের নির্ভরযোগ্য তারকা তিরির পেশিতে চোট লেগেছে, যা সারতে হয়তো তিন সপ্তাহ লেগে যাবে। তবে তিনি দলের মেডিক্যাল টিমের সঙ্গে কথা বলে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে চান।

নাগাড়ে বৃষ্টিতেও যুবভারতীর মাঠ নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট ইরিওন্দো বলে গেলেন, “মাঠটা দারুণ, যা বৃষ্টি হয়েছে, তা সত্ত্বেও মাঠের অবস্থা ভাল ছিল। শুধু মাঠই নয়, পুরো স্টোডিয়ামটাই অসাধারণ। অন্যতম সেরা”। কলকাতা থেকে জয় নিয়ে ফিরতে না পারলেও শহরের গর্ব নিয়ে প্রশংসা করতে দ্বিধা নেই তাঁর।