জোড়া ম্যাচে ছ’পয়েন্ট পাওয়ার চেয়ে ভাল শুরু আর কী হতে পারে? তাও আবার চিরপ্রতিদ্বন্দীদের বিরুদ্ধে দাপুটে জয় পেয়ে। তাই স্বাভাবিক ভাবেই খুশি এটিকে মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাস। শনিবার রাতে ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের তিনি নিজের খুশির কথা জানিয়ে বলেন, আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে দল নামিয়েছিলেন। ম্যাচের কিছুটা সময় দলের ফুটবলার কিছুটা গা-ছাড়া ভাব দেখালেও তা নিয়ে আর অভিযোগ করতে রাজি নন হাবাস। ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আর কী বললেন, জেনে নেওয়া যাক।  

ম্যাচ শুরুর আগে খেলোয়াড়দের কী বলেছিলেন?

খেলাটাকে ভাল করে গোছানোর কথা বলেছিলাম ওদের। তার পরে ব্যক্তিগত দক্ষতার কথা। ওরা খুব ভাল খেলেছে আজ। শৃঙ্খলা, সফল প্রচেষ্টা—সব দিক থেকেই মন জয় করে নেওয়ার মতো খেলেছে। ওদের খেলায় আমি খুবই খুশি।

এটাই কি সবচেয়ে পরিকল্পিত পারফরম্যান্স আপনাদের। প্রথম দশ মিনিট বিপক্ষকে বুঝে নিয়ে তার পরে আক্রমণের ঝড় তোলাআর ২৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোল করে দেওয়া?

এ ভাবে আক্রমণাত্মক ফুটবলের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম আমরা। আমাদের ছেলেরা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সেই প্রস্তুতি অনুযায়ী খেলার পরে একটু গা ছাড়া ভাব এসে যায়। যার ফলে ওদেরও গোলের সুযোগ এসে যায়। আমরাও আরও গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। তবে আজ আর ছেলেদের কিছুই বলব না। ওদের পারফরম্যান্সে আমি খুশি। দুই ম্যাচে তিন পয়েন্ট খুবই ভাল আর গোল পার্থক্যও আমাদের যথেষ্ট ভাল। ওটাও তো গুরুত্বপূর্ণ।

ইস্টবেঙ্গলের রক্ষণে তিনজন খেলোয়াড় দেখে কি আপনাদের আক্রমণের প্রবণতা আরও বেড়ে যায়?

শৃঙ্খলা ও মানসিকতার দিক থেকে আজ আমাদের ছেলেরা কমপ্লিট পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। আজ আমাদের পরিকল্পনাই ছিল গোল দেব কিন্তু গোল খাব না। গত ম্যাচে দু’গোল খেতে হয়েছিল আমাদের। এটা ভাল নয়। এই ম্যাচেও তিন পয়েন্ট পাওয়ায় তাই ভালই লাগছে।

ইওনি কাউকো আজ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। কী বলবেন?

আপনারা জানেন, দলের একজন খেলোয়াড়ের কথা আমি আলাদা করে বলি না। তবে কাউকো সত্যিই খুব ভাল ফুটবলার এবং এই মরশুমে ও আমাদের দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একজন সদস্য।

পরের ম্যাচ মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে। কী পরিকল্পনা আছে আপনার?

আগে ফুটবলাররা রিকভার করুক। তার পরে আমাদের বসে বিশ্লেষণ করতে হবে, এই ম্যাচে আমাদের কী কী ভুল হয়েছে। সেগুলো আগে শোধরাতে হবে। তার পরে পরের ম্যাচের বিপক্ষকে নিয়ে ভাবা যাবে।

অন্য দিকে এসসি ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ হোসে মানুয়েল দিয়াজ কার্যত মেনেই নিলেন তাঁর দলের সঙ্গে এটিকে মোহনবাগানের মানের তফাৎ অনেকটাই। তাঁর দলের ছেলেরা যে একাধিক গুরুতর ভুল করে শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে জিততে সাহায্য করেছেন, সে কথা স্বীকার করতেও দ্বিধা করেননি হতাশ দিয়াজ। সাংবাদিকদের তিনি আর কী বললেন এ দিন, তা জেনে নেওয়া যাক।

এই হারের কী ব্যাখ্যা দেবেন?

আমাদের বিরুদ্ধে খুবই ভাল একটা দল নেমেছিল আজ। প্রতিপক্ষ হিসেবে বেশ কঠিন। যার ফলে পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা আমাদের পক্ষে বেশ কঠিন হয়ে ওঠে।

প্রথম দশ মিনিট আপনারা ভাল খেলার পরেও ২৩ মিনিটের মধ্যে তিন গোল খেয়ে যাওয়ার কারণ কী?

আমাদের ছেলেরা একাধিক গুরুতর ভুল করেছে। এ রকম দুর্দান্ত ও বিপজ্জনক একটা দলের বিরুদ্ধে এ রকম ভুল করলে তো চলে না। আমরা আমাদের খেলাটা খেলতেই পারিনি।

কয়েক দিনের মধ্যেই ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে হবে আপনাদের। এই ফলের পর কী করে অল্প সময়ে ঘুরে দাঁড়াবেন?

লিগের যা নিয়ম, যে রকম সূচী, তা তো আমাদের মেনে চলতেই হবে। তিন দিনের মধ্যেই পরের ম্যাচে নামতে হবে আমাদের। সেই ম্যাচে যথাসাধ্য ভাল খেলতেই হবে আমাদের।

মাঝমাঠে হুগো বুমৌসকে আপনারা আজ আটকে রাখতে পারেননি। যার ফলে তিনটি গোলেই তার পরোক্ষ ভূমিকা ছিল। কেন পারলেন না ওঁকে আটকে রাখতে?

বিপক্ষের খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমাদের খেলোয়াড়দের দূরত্ব সব সময়ই ছিল। হুগো বুমৌসের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা সে রকমই হয়েছে। ওর কাছাকাছিই পৌঁছনোর সুযোগই বেশি পায়নি আমাদের ছেলেরা।

তিন বছর ধরে কলকাতা ডার্বিতে আপনারা জিততে পারেননি। হতাশ সমর্থকদের উদ্দেশ্যে কী বার্তা দেবেন?

আমরা সমর্থকদের কষ্টটা বুঝতে পারছি। তবে এই মুহূর্তে এটিকে মোহনবাগান ও এসসি ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে অনেকটা ফারাক আছে। আর এটাই বাস্তব।